নক্ষত্রের রুপায়িত জোছনার অন্তরাল থেকে-
কিংবা অফুরন্ত রোদ্রের তিমিরের স্মৃতিমাখা সুখ বিসর্জন দিয়ে -
আমি আজ বিবেকের কাঠগড়ায়।
এক অমনুষ্য জীবনের পথে।
আজ আমি অপব্যয়ী কল্পনার ইন্দ্রত্বের বাইরে এসে
স্বেচ্ছায় ভুলে যাই- শরতের কোনো স্নিগ্ধ আকাশ।
অবিরল শ্রাবণের মুগ্ধতা কবিতার সব সুষমা লুপ্ত হতে থাকে আজ।
বিবেকের পটভূমিতে নিজের প্রতিচ্ছায়া আমাকে ভাবাতে থাকে।
এক অন্ধকার কুটুরে হৃদয়ের সব বিশ্বাস ,
নর্দমার কলুষিত ধারার মতো আজ অচ্ছুত হয়ে যায়।
সেই নিমজ্জমান ,অবগুন্টিত কুটুরে মন্বন্তর যুদ্ধে আমি,
আরো গভীর অন্ধকারে চোখ বুজি।
তারপর, এক অবারিত জ্যোতিস্কমন্ডলীর আলোয় ,
যখন-আমার ঘ্বণিত রুপ নিদারুন প্রণোদনায় -প্রতিভাত হয়,
ভাবি মানুষ মুখোশের অন্তরালে আমি এক অমানুষ,
সুশীল মুখোশের অন্তরালে আমি এক রুগ্ন বর্ণচোরা,
দেশপ্রেমীর অন্তরালে আমি এক কলুষিত কীট,
বুদ্ধিজীবীর অন্তরালে আমি এক পঁচে যাওয়া বিবেক।
যেখানে ,রক্ত নদী বহমান ,প্রতিনিয়ত-
সদা বহমান প্রতিদিন সীমান্তে রক্তে লাল হয় মৃত্তিকা-
একজন মরে,দুই জন মরে, মানুষ,সৈন্য,কৃষক,বাঙগালি মরে,
এরা যেন কোনো মানুষ না, আহাঃ মানুষ নাহোক,কোন প্রাণীতো।
কোনো পতঙগের উপর যখন বুট চেপে আসে ,তবুও তো একটু বাজে।
আর ,নির্বিচারে হন্তা ,কোনো যখম কেন আমাকে আর এতটুকু বিচলিত করেনা।
কীসের ভয়, কোনো খ্যাতির,স্বার্থের,মোহের ,প্রলোভনের।
আমার বুক প্রশস্থ হয়েছে,অহরহ গতি সন্চালিত হয়েছে আমার শিরায়,
বুকের স্পন্দন মহাপ্রাণসাগেরর মতো কখনো স্ফীত হয়েছে-
যখন ভেবেছি আমি মহামনি কবি, সাংবাদিক, রাজনীতিক, শিক্ষক,ধনবান,বীর্যবান,শিল্পী,সাধু,সন্তু ,প্রভূ ...............।
ধিক! ছিঃ আমার এ আত্ম প্রবন্চনা।
ভোরের সূর্যস্বাদে,রাত নিশীথের জোছনায়,সমূদ্রের ভেসে আসা শীতল জলাধারের সুবাসিত কমনীতায় ,কোন নীলকন্ঠ পাখীর গুন্জরণে
আজ শুধু আমার গলিত ,পঁচা, দূর্গন্ধময় বিবেক দেখি।
সেই বিবেক এক মহা সুড়ঙগে অবন্তীর পথে নেমে গিয়ে-
৬৮ হাজার বর্গমাইলের এক নির্জন সীমান্তে -
যেখানে পড়ে থাকে আমার ভাইয়ের মৃত লাশ-
সেখানে তার চোখ আর উম্মোচিত হয়না।
মৃত ভাইয়ের লাশ আর আমাকে ভাবায় না।
অন্ধকারে,চুপি চুপি শাদা বরফের মতো ভাইয়ের হাসি যে
আর ফিরে ফিরে আসেনা।
আসবে কেনো বলো, আসবে কেনো বলো,আসবে কেনো?
আমি যে সব হয়েছি, অবিমৃষতার পদভারে,
ভারতীয় দালালির নঁকশায়,আর পাকিস্তানী দালালীর দাগেও
তোমার মৃত লাশকে শুধু রাজনীতিতে ভাগাভাগি করে
পরম আত্মতৃপ্তিতে আস্বাদিত হয়েছি
ভারতীয় আর পাকিস্তানি দালালির নির্লজতায়।
শুধু ৭১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ বছরেও
যে আমি জন্মভূমির দালাল হতে পারিনি।
যদি পারতাম-তবে দিনে ,সপ্তাহে ,মাসে ,বছরে এই জন্মভূমিতে-
অধিকারের শিকড় পাহারায় তোমার লাশ তোমার জন্মভূমিতেই
মৃত কাক পক্ষী ,শকুনের সাথে আর কোনোদিন এভাবে পড়ে থাকতে পারতোনা। আর কোনোদিন না, আর কোনোদিন না।
(আমার বড় লজ্জা হয় এ কবিতা সীমান্তে জীবন দেয়া এ দেশের কোনো দুখি মানুষ কে উৎসর্গ করতে)