বাতিলপন্থী ওহাবী, তাবলিগী ও মওদুদী মতাবলম্বী আলেমগণ সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে সহজে ধোক দেওয়ারূ উদ্দেশ্যে বলে বেড়ায়- “যারা সুন্নাত পালন করে তারাইতো সুন্নী’। অর্থাৎ যারা দাড়ি রাখে, মিছওয়াক করে, পাগড়ী বাঁধে, ঢিলা করে, তারা সবাইতো সুন্নী। অথচ সুন্নত আমল ও সুন্নী এক নয়। যদি কেবল মাত্র সুন্নত পালনের মাধ্যমে সুন্নী হয়, তালে কোন বাতিল ফিরকাকেই অন্য নামে চিহ্নিত করা যাবে না। কারণ, এ যাবৎ মুসলমানদের মধ্যে আভির্ভূত সকল বাতিল ফিরকা বাহ্যিক আমল তথা সুন্নত পালনে বেশ যতœবান দেখা গেছে। আর এভাবেই তারা সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে সহজে নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করে ঈমান আক্বিদা ধ্বংস করে চলছে। তাইতো বিশুদ্ধ হাদীস শরীফে বাতিল সমূহে আকর্ষণীয় দর্শনে ধোকায় না পড়ার জন্য হুজুর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে সতর্ক করেছেন। যদি শুধুমাত্র সুন্নাত পালনের মাধ্যমে সুন্নী হয় তাহলে খারেজী, শিয়া, রাফেজী, মোতাজিলা সহ সবাইকে সুন্নী বলতে হবে। কারণ প্রত্যেকের মধ্যেই সুন্নাত আমলের বেশ উপস্থিতি বিদ্যমান। সুতরাং এটা বাতিলপন্থীদের চরম ধোঁকাবাজি ও কোরআন হাদীসের ঘৃণ্য অপব্যাখ্যা। প্রকৃতপক্ষে সুন্নী হলো তারা, যাঁরা ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা সমূহে বিশ্বাসী।
ইসলামী ফিকাহর দৃষ্টিতে যেসব বিষয় সুন্নাত হিসাবে স্বীকৃত ঐগুলোর আমল নিঃসন্দেহে ঈমানদারের জন্য সাওয়াব জনক কাজ এবং আল্লাহ তা’আলা ও রাসুলে করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের রেজামন্দি হাসিলের অনন্য মাধ্যম এবং নবী প্রেমের স্বাক্ষর। যে ক্ষেত্রে আক্বীদা বিশুদ্ধ না হলে অধিক নামাজ, রোজা ও অপরাপর আমল নাজাতের হতে পারে না। সে ক্ষেত্রে জঘন্য আক্বিদা পোষণ করে সুন্নাতের আমল বৃথা; বরং ধোঁকাবাজির নামান্তর। সুন্নাত আমল উপকারে আসবে সুন্নীদের জন্য। অর্থাৎ যাদের আক্বীদা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মোতাবেক তাদের জন্যই ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাত ইত্যাদি কাজে আসবে এবং নাজাতের উসিলা হবে। যারা নবীকুল শিরোমণি হুজুর করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান শানে জঘন্য বেয়াদবী করে তাদের সুন্নাত পালনের কিইবা গুরুত্ব থাকতে পারে? এদের সুন্নাত পালন সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে ধোকায় ফেলে ঈমান আক্বিদা ধ্বংস করা অপকৌশল মাত্র।
-কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামের মূলধারা ও বাতিল ফিরকা, পৃষ্ঠা-৬৭-৬৮।