পোষ্টটির সূত্র: সাইটম্যাপ কি, কেন এবং কিভাবে ব্যবহার করবেন?
ওয়েবমাষ্টাররা সাইটম্যাপের সাহায্যে তাদের ওয়েবসাইটে ইনডেক্স উপযোগী পেজ সম্বন্ধে সার্চ ইঞ্জিনগুলোকে অবহিত করে থাকে। সহজ ভাষায়, সাইটম্যাপ একটি XML ফাইল যাতে কোনো ওয়েবসাইটের যাবতীয় লিংক আরোও কিছু তথ্যসহ থাকে – যার ফলে সার্চ ইঞ্জিনগুলো খুব সহজে এবং কার্যকরীভাবে ওয়েবসাইটে ঘুরে বেড়াতে পারে এবং প্রয়োজনীয় ওয়েবপেজগুলোকে ইনডেক্স করতে পারে। অতিরিক্ত তথ্যের মধ্যে ওয়েবপেজটি কবে সৃষ্টি হয়েছে, কবে সর্বশেষ আপডেট হয়েছে, ওয়েবপেজটি অন্য পেজের তুলনায় কত গুরুত্বর্পূণ ইত্যাদি থাকতে পারে।
বর্তমানে সার্চ ইঞ্জিনগুলো খুবই শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান। তারা নিজেরাই ওয়েবসাইটে ঘুরে বেড়াতে পারে এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এক্ষেত্রে সাইটম্যাপ শুধু সার্চ ইঞ্জিনকে তার কাজে সাহায্য করে। সাইটম্যাপে থাকা প্রতিটি লিংকই যে সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হবে এমন কোনো গ্যারান্টী নেই – তবে তাদের ইনডেক্স হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
সাইটম্যাপ ০.৯০ ভার্সনটি সর্বশেষ সর্বজন স্বীকৃত সাইটম্যাপ কাঠামো এবং এটি গুগল, ইয়াহু, মাইক্রোসফটসহ প্রায় সবগুলো সার্চ ইঞ্জিনই সাপোর্ট করে। ফলে যেকোনো ওয়েবসাইটের জন্য একটিমাত্র সাইটম্যাপ বানালেই সবগুলো সার্চ ইঞ্জিনে ব্যবহার করা যায়।
সাইটম্যাপ কিভাবে বানাবেন?
কয়েকটি উপায়েই সাইটম্যাপ বানানো যায়। নিজ হাতে লিংক ধরে ধরে কোড করে করতে পারেন আবার Vigos gSitemap সফটওয়ার কিংবা XML Sitemaps ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে খুব সহজেই কেবলমাত্র ওয়েবসাইটের লিংক দিয়েই সাইটম্যাপ তৈরি হয়ে যায়। যারা wordpress কিংবা joomla ব্যবহার করেন, তারা যথাক্রমে Google XML Sitemaps এবং Xmap প্লাগইন ব্যবহার করে অটোমেটিকভাবে সাইটম্যাপ বানিয়ে ফেলতে পারেন।
এছাড়া যারা blogger.com কিংবা wordpress.com এর ব্লগ ব্যবহার করেন যাতে ফাইল আপলোডের (FTP) সুবিধা নেই, তারা ব্লগের RSS feed টিকে সাইটম্যাপ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। সাধারনত blogger.com এর feed এর লিংক হল http://xxxxx.blogspot.com/feeds/posts/default এবং wordpress.com ব্লগের জন্য হল http://xxxxx.wordpress.com/feed/ যা সাইটম্যাপের বিকল্প হতে পারে – xxxxx এর স্থলে আপনার ব্লগের নাম বসিয়ে দিন।
সাইটম্যাপ কিভাবে ব্যবহার করবেন?
প্রায় প্রতিটি সার্চ ইঞ্জিনের জন্য সাইটম্যাপের ব্যবহারবীধি একই ধরনের।
১. প্রথমেই গুগলের জন্য গুগল Webmaster Tools , ইয়াহু!র জন্য Yahoo! Site Explorer এবং মাইক্রোসফটের জন্য Bing Webmaster Center এ একাউন্ট থাকতে হবে।
২. এবার XML ফাইলটি যেকোনো FTP সফটওয়ার ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের home ফোল্ডারে আপলোড করুন। এক্ষেত্রে blogger.com এবং wordpress.com ব্যবহারকারিদের কিছুই করতে হবে না।
৩. এবার Google Webmaster Tools এ গিয়ে লগইন করে Add a site বাটনে ক্লিক করে ওয়েবসাইটের এড্রেস দিন। এবার আপনাকে ওয়েবসাইটের মালিকানা প্রমাণ করতে বলবে। এক্ষেত্রে blogger.com এবং wordpress.com ব্যবহারকারিগণকে Meta Tag পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে এবং অন্যরা Meta Tag এবং HTML File উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারবেন। পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত পাবেন একই পেজের বাম কলামের লিংকে।
৪. এবার ড্যাসবোর্ডে Sitemaps > Submit a Sitemap অপশনে যান এবং আপনার সাইটম্যাপের নামটি টাইপ করুন। ব্যাস এভাবেই গুগলে যেকোনো ওয়েবসাইটের সাইটম্যাপ জমা দিতে হয়। পরের বার গুগলের স্পাইডার এই সাইটম্যাপ ধরে আপনার ওয়েবসাইট ভ্রমন করবে। ইয়াহু এবং মাইক্রোসফটে সাইটম্যাপ জমা দেবার পদ্ধতিও প্রায় একই রকম।
একবার সাইটম্যাপ জমা দিলে ওয়েবসাইটের গুরুত্বভেদে সার্চ ইঞ্জিন সেটা ধরে ইনডেক্স করে। যেমন জনপ্রিয় সাইটগুলো প্রায় প্রতি ঘন্টাতেই ইনডেক্স হয় অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত নতুন ওয়েবসাইটগুলো ইনডেক্স হতে সময় লাগে, কখনও কখনও দুই সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। তাই সাইট ইনডেক্স না হলে বার বার সাইটম্যাপ জমা দেবার প্রয়োজন নেই। সার্চ ইঞ্জিনের ড্যাসবোর্ড থেকে সাইটম্যাপ সর্ম্পকিত অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যায়; যেমন কতটি পেজের লিংক জমা দেয়া হয়েছে, কতটি ইনডেক্স হয়েছে, কোনো keyword গুলো ভাল ফলাফল দিচ্ছে কিংবা সার্চ ইঞ্জিনগুলো কি হারে আপনার সাইট ইনডেক্স করছে।
কোনো সাইটের কতগুলো পেজ ইনডেক্স হয়েছে জানতে উক্ত সার্চ ইঞ্জিনে নিচের ফরমেট অনুসারে সার্চ করতে পারেন (xxxxx চিহ্নিত স্থানে আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা বসান):
গুগল: site:http://www.xxxxx.com
ইয়াহু: https ://siteexplorer.search.yahoo. com/search?p=www.xxxxx.com&y=Explore+URL&fr=sfp
বিং (Bing): http ://www.bing .com/search?q=site:http://www.xxxxx.com
সাইটম্যাপ কেন ব্যবহার করবেন?
সাইটম্যাপ ব্যবহার করলেই যে আপনার ওয়েবসাইটটি তরতর করে সার্চ ইঞ্জিনে উপরের সারিতে উঠে যাবে, প্রতিদিন হাজার হাজার ভিজিটর পাবেন – এমনটি ভাবার কোনো অবকাশ নেই। তাহলে কেন ব্যবহার করবেন? আসলে সার্চ ইঞ্জিন অনেকসময় ইনডেক্সিং করার সময় অনেক ওয়েবপেজকে ছেড়ে যায় কিংবা লিংকের গভীরতা বেশির কারনে (ওয়েবসাইট বড় হলে কিংবা ওয়েবসাইটের নেভিগেশন সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব না হলে) ইনডেক্স করতে পারে না। আবার পুরোনো কোনো ওয়েবপেজ সম্প্রতি আপডেট হলেও জানতে পারে না। ফলে পরিশ্রম করা সত্ত্বেও আপনি সার্চ ইঞ্জিন থেকে আশানুরুপ সাফল্য নাও পেতে পারেন। তাই সার্চ ইঞ্জিন যাতে কোনো পেজই না ছুঁয়ে যেতে পারে, সেকারনে ওয়েবমাষ্টারগণ সাইটম্যাপ ব্যবহার করেন। সাইটম্যাপ ইনডেক্সিংয়ের পদ্ধতিতে কেবলমাত্র সাহায্য করে।
একই ধরনের আরও কিছু পোষ্ট:
১. সার্চ ইঞ্জিনে কি ওয়েব সাইটের বিস্তারিত জমা করতে হবে?
২. কিভাবে Dynamic ওয়েবসাইটের Search Engine Optimization করবেন?
৩. কোথায় ফ্রি ওয়েবসাইট / ব্লগ পাবেন?
--------------------------------------------------------------------
সম্প্রতি iSEOForum.com এ শুরু হয়েছে ডোমেইন জিতে নেবার প্রতিযোগিতা। জুলাই মাসজুড়ে কেবলমাত্র ফোরামে অংশগ্রহনের মাধ্যমে জিতে নিতে পারেন পছন্দসই একটি ডোমেইন। বিস্তারিত জানতে পড়ুন – iseoforum.com ফোরামে অংশ নিন – জিতে নিন পছন্দসই একটি ডোমেইন ।
--------------------------------------------------------------------
আপনার পক্ষে কি প্রতিদিন আমার ব্লগে আসা সম্ভব হয় না? তাহলে আপনি আমার ইমেইল নিউজলেটার সাবসক্রাইব করতে পারেন। এর মাধ্যমে আমি নতুন কোনো ব্লগ পোষ্ট করলে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার সন্ধান পেয়ে যাবেন আপনার নিজের ইমেইলের ইনবক্সে।আশা করি এই ফিচারটি বার বার আমার ব্লগে আসার পেছনে আপনার অনেকটা সময় বাঁচিয়ে দেবে।
এই মুর্হূতে ৯২ জন পাঠক আমার ইমেইল নিউজলেটার নিয়মিত পড়ছেন।
--------------------------------------------------------------------
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৭