আমাদের দেশে চাকুরির বড় অভাব অথচ এই দেশই আবার টাইপের গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজীতে ৭০ শব্দ ও বাংলায় ৪০ শব্দ এমন লোকের ৮,০০০/১০,০০০ টাকার চাকুরীর অভাব নেই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতাও শিথীল যোগ্য । অপর একটি চাকুরী হল ড্রাইভিং । তবে ড্রাইভিং কোন সরকারী বা সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষন নেওয়া ভাল । ড্রাইভিংয়ের বৈধ লাইসেন্স থাকলে চাকুরী প্রাই নিশ্চিত । শুধু ইংরেজী ও বাংলা বুঝলেই হবে । স্বল্প শিক্ষা ও তুলনা মুলক কম সময়ে এটি দুটি ক্ষেত্রে চাকুরী পাওয়া অতি সহজ । আর যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা বেশী হয় তাহলে সরকারী বা বেসরকারী বেশ ভাল প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পেতে পারে । দুঃভাগ্য এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার । সেই সাথে অবিভাবক ও সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত । মাস্টার্স (এম এ) পাশ করতে এক জন মানুষ -- সে ছেলে বা মেয়ে যেই হউক ৩টি জিনিস ব্যয় করে : মূল্যবান সময়, শ্রম ও অর্থ (টাকা) । ফলাফল কত করুন ও হৃদয় বিদারক ? আমি ব্যক্তিগত ভাবে এ পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের পুথিগত বিদ্যাকে প্রচন্ড ঘৃনা করি । এটা মানুষ কে তিলে তিলে ধ্বংস করে কুড়ে কুড়ে খায় । সবোর্চ্চ কেরানি তৈরী করে । লেখা-পড়া শিখে বেকারত্ব কে বড় অভিশাপ মনে হয় । কিন্তু মুর্খ বা শুধু অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন বেকারত্বের অভিশাপে তেমন দুঃখ নেই । একজন শিক্ষিত মানুষ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে না পারে কুলি মজুরী ,না পারে ধান কাটতে ,না পারে রিক্সা চালাতে ? এর চাইতে মৃত্যু অনেক ভাল ও শ্রেয় । নিজের একান্ত নুন্যতম ব্যক্তিগত খরচ ও প্রয়োজন নিজে মিটাইতে পারে না, তখন কেমন লাগে নিজের কাছে ? তখন মনে হয় সৃষ্টিকর্তা বৃথা আমাদের সৃষ্টি করেছেন ! বাবা-মা মনে মনে ভাবেন এ অপদার্থ কেন জন্ম দিলাম ? নিজের বয়স বাড়তে থাকে বাড়তে থাকে অথচ চাকুরী পায় না ও কপালে একটি অতি সাধারণ বউ ও জুটে না । সৃষ্টিকর্তার কি লীলা খেলা একটি মেয়ে ও কুমারী থেকে যায় ঐ ছেলের কারণে , বড় ট্রাজিডি ! শেষে অনেক দুঃখ-কষ্টের পর যখন সে কোন চাকুরী খুজে পায় না তখন নিজের উপর অতিষ্ট ও বীত-শ্রদ্ধ হওয়ার ফলে হয় ---------শ্রেষ্ট মাস্তান , চাদা বাজ , নেশা খোর , সন্ত্রাসী, ধর্ষক, ডাকাত, চোর, চোরা কারবারী , পাচার কারী , প্রফেশনাল কিলার , অপহরন কারী , দেশী-বিদেশীদের হয়ে ষড়যন্ত্র ও দালালী করা , সরকারী দলের লাঠিয়াল , বিরোধী দলের গুন্ডামী করা সহ..............ইত্যাদী এমন কোন কাজ নেই যা তার অভিধানে নিষেধ ! সে এক সময় অনেক ভাল ছিল -----যেমন গ্রামের অজো পাড়াগার একটি মেয়ে ঢাকা আসার পূর্বে ইনটেক থাকে তেমন । সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে । পশ্চিমাদের গোলামী শিক্ষা হতে দুরে থাকতে হবে । সাবধান থাকতে হবে নেক (ভাল মানুষ) সুরোতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন,আধুনিকতা,শিক্ষা ও চিকিৎসা-স্বাস্থের নামে বিশ্বে অশান্তি সৃষ্টি কারী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর প্রেতাত্মারা নতুন মোড়কে পশ্চিমা সাম্যাজ্যবাদীদের তৈরী সালমান রুশদী,তসলিমা নাসরিন ও মালালা ইউসুফ জাইরা “ মহিলাদের ’’ ফাঁদে ফেলাতে না পারে। আমাদের ইস্টার্ন(পূর্ব) ঐতিহ্য ও মুল্যবোধ ঠিক রেখে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে ।একটি বিখ্যাত প্রবাদ মনে পড়ে গেল-----“ দূর্জন বিদ্যান হলেও পরিতায্য , সর্পের মস্তকে মণি থাকিলেও সে কি ভয়ঙ্কর নহে “ । তাই সত্যিকারের মানব কল্যানে কাজ করতে হবে । অধিকাংশ এনজিও বাংলাদেশে ওয়েস্টার্নের (পশ্চিমা) প্রতিনিধিত্ব করে । পূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশের সরকারী প্রাইমারী শিক্ষা ব্যবস্হা সম্পূর্নরুপে “ ব্রাক ”এর নিকট তুলে দিতে চেয়েছিল, ওটা ছিল ষড়যন্ত্র । সৌভাগ্য আমাদের সফল হয় নাই । দেশপ্রেমিক,আন্তরিক,পরিশ্রমি,সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি একটি দেশের মহা সম্পদ । দুঃভাগ্য কপাল খারাপ আমাদের যে এদেশে তাদের মূল্যায়ন কদর নেই । কবি বলেন-- ''যে দেশে গুনি জনের কদর নেই, সে দেশে গুণিজন জন্মায় না'' । এ দেশে খঁয়ের খাঁ,চাটুকার,দালাল ও চাটার দল মোসাহেবদের অভাব নাই । এদেশে সব সরকার তাদের ফাঁদে পা দেয় । যার জন্যএ করুন অবস্থা।...............................................................................................................কারিগরী ও কর্মমুখী শিক্ষা সর্বত্র চালু করতে হবে । দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শিল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলিকে অনুসরন করতে হবে । জাপানে আমাদের মত এত প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনবল নেই (প্রায় ১২কোটি) । জাপানের আয়তনে খুব বেশী বড় দেশ নয় প্রায় বাংলাদেশের সমান । যে স্থলভাগ আছে তাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং তা ভুমিকম্প প্রবন । কিন্তু জাপান বিশ্বের অন্যতম শিল্পোন্নত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ । একটি কথা প্রচলিত আছে------“ পুথিঁগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন , নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন ’’। বর্তমানে অনেক বাবা-মা না বুঝে আবেগে সন্তানদের প্রচলিত সাধারণ বিদ্যায় উচ্চ শিক্ষিত করছে । আমাদের দেশের মত বাবা-মায়ের বোঝা (বেকার) হয়ে উচ্চ শিক্ষা নেওয়ার মত নজির বিশ্বে অন্য কোথাও আছে কিনা সন্দেহ আছে । উন্নত দেশে যেটা হয় সাধারণত চাকুরীর পাশা-পাশি প্রয়োজন মনে করলে মানুষ লেখা-পড়া করে । কাজ না করে বাড়ি হতে বাবা-মা বা অবিভাবক কাছ হতে টাকা এনে শুধু খাওয়া, ঘুম ও পড়া-লিখা করা যেন বাংলাদেশের ট্রেডিসন (নিয়ম-প্রথা) । এটা পরিবর্তন করতে হবে । মূল্যবান সময় ,অর্থ ও শ্রম দিয়ে শিক্ষিতদের পাহাড় গড়ায় কোন কৃতিত্ব নেই । জাতিসংঘের অফিসিয়াল ভাষা ৬ টিঃ ইংরেজী,ফ্রেন্স,স্প্যানীশ,আরবী,মান্দারীন(চীন) ও রুশ । গুরুত্ব দিয়ে এ ভাষাগুলি শিখতে হবে । বর্তমানে যে ভাষা ইন্সটিটিউট আছে ঐ গুলিকে আরও শক্তিশালী ও প্রসার করতে হবে । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট কে পূর্ণাঙ্গরুপে চালু করতে হবে । প্রতিটি বিভাগ ও জেলাতে সরকারী ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র খুলতে হবে । দেশে কর্মসংস্থান না হলে বিদেশে কমপক্ষে কম্পিউটার ও ইংরেজি ভাষা শিখে যেতে হবে । কারন আপনি যত শিক্ষিত হউন ভিনদেশে ভাষা না জানা অর্থ বোবা । আর একজন বোবা কি ভাবে কাজ করবে সে যত যোগ্যই হউক এমন কি ডক্টরেট ডিগ্রীধারী হলেও । বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রক্তির যুগ যাকে কেউ ডিজিটাল যুগ ও বলে থাকে । তাই যত সীমা বদ্ধতা থাকুক কম্পিউটারে বেসিক জ্ঞান যার নেই বর্তমান যুগে সে ও এক প্রকার মুর্খ । কমপক্ষে ইংরেজি ভাষা ও কম্পিউটার শিখতে হবে । সরকার ভারত ও চীনের মত খুব সহজে দক্ষ-অদক্ষ মানব সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করতে পারে । তবে বিদেশে পাঠানোর পূর্বে এমন লোক পাঠানো উচিত যে কমপক্ষে দেশের সুনাম বয়ে না আনলেও বদনামের কারন না হয় । তাই বিদেশে পাঠানোর পূর্বে তার অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে ভাল করে খোজ নিতে হবে । দেশপ্রেমী ,সৎ, যোগ্য, পরিশ্রমী ও সুস্থ্য-সবল লোক নিবার্চিত করতে হবে । বিদেশে যাওয়ার অন্যতম অন্তরায় আর্থিক সঙ্কট । এ ব্যাপারে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে ঋন দেওয়া অতীব প্রয়োজন । পৃথক বা যৌথ ভাবে সরকার এ ঋনের টাকা দেওয়ার কাজ করতে পারেন । প্রয়োজনে ২ টি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারে : ১) এ দেশের সরকার বিদেশি কোম্পানী বা ঐ দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করবে । বিদেশগামীদের সুবিধার্তে টাকার অঙ্ক সম্পূর্ন, অর্ধেক, এক তৃতীয়াং বা আরও কম বেশী করতে পারেন । চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে বেতন থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা কেটে নিবে । ২) বিদেশগামী ও তার অবিভাবক এর সাথে এ দেশের সরকারের চুক্তি করা । চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে বেতন থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা কেটে নিবে অথবা কিস্তিতে লাভ সহ নিতে পারে । এ কাজ অনেক জটিল ও ঝুকিপূর্ন । তাই উপরোক্ত কাজ গুলি অভিজ্ঞ ব্যাংক বা এনজিও সহায়তায় সরকার করতে পারেন যেখানে ১০০% ঝুকি মুক্ত থাকবে । যে দেশ গুলিতে জন সংখ্যা কম অথচ শ্রমের চাহিদা আছে সেখানে মানব সম্পদ রপ্তানী করতে হবে । পৃথীবির জন্য সব চাইতে বড় হুমকি দারিদ্র, বেকারত্ব ও দূর্নীতি । যখন বাংলাদেশ সফলভাবে জনসংখ্যা কে জনসম্পদে রুপান্তর করবে তখন জনসংখ্যা সমস্যার পরিবর্তে এমন এক সম্পদ হবে যা এ্যাটম বোমের চাইতে ও শক্তিশালী । ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে গর্বিত জাতি হিসাবে সম্মানের আসরে আসীন হবে । দেশের হাজার হাজার প্রকল্প ও সেক্টরের চাইতে শুধু এ একটি প্রকল্প দেশের আমুল পরিবর্তন করে দেশ কে খুব অল্প সময়ে উন্নত দেশে পরিনত করতে পারে । এক ঢিলে অনেক পাখি মারার সহজ পথ এটা। তখন এক এক জন বাংলাদেশী হবে দেশের প্রতিনিধি । কাজেই বিদেশে সবাই কে পাঠানো যাবে না । বিচার বিশ্লেষন করে ভেবে চিন্তে তবে পাঠাতে হবে । পরিকল্পিত ভাবে কাজ করতে পারলে কানাডা, নিউজিল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ডেনমার্ক,ফিনল্যান্ড ,নরওয়ে,যুক্তরাস্ট্র, রাশিয়া ,জার্মান ,জাপান ,ব্রাজিল, ইকুয়েডর,দক্ষিন কোরিয়া , সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার .............সহ শ্রম নির্ভর দেশগুলি হবে মিনি বাংলাদেশ । অধিকাংশ উন্নত দেশ বিয়ে বিমুখ ও সমকামিতার জন্য জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে । এ সুযোগ আমাদের অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে । এক সময় হয়তো সাম্রাজ্যবাদী ইংল্যান্ডের মত ঐ দেশটা হবে বাংলাদেশের উপনিবেশ বা প্রভাবিত নের্তৃত্ব দানকারীদেশ । পশ্চিমারা ভাল করে জানে বলে আমাদের জনসংখ্যা ভুল-ভাল, বাংলা-ভূগোল বুঝিয়ে হ্রাস করতে চায় । এটা কোন আজগুবি গাজা খুরি বানোয়াট ফেক গল্প না, অত্যন্ত বাস্তব সত্য ! হাসিনা সরকার খুব কম হলেও ঠিক বুঝতে পেরেছে । এ জন্য বিয়ের বয়স ১৬ করেছে । সরকারের উচিত এ ব্যাপারে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা গ্রহন করা ও সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা । যুক্তরাষ্ট্র, জার্মান ও ইউকে (বৃটেন) এর মত পরাশক্তি ও অর্থনৈতিক শক্তিশালী হওয়া হবে সময়ের ব্যাপারমাত্র । তলাবিহীন ঝুড়ি ও তৃতীয় বিশ্ব কথাটি বলার সুযোগ কেউ আর পাবে না । ফলে মানব সম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান হবে ব্যাপক আকারে । তাই পরিশেষে বলতে চাই জনসংখ্যা কখনও সমস্যা নয় বরং মহা সম্পদ ও বিশ্বের সবচাইতে শক্তিশালি বড় অস্ত্র সকলের জন্য ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪