আমাদের মো্ট ১২ দিনের ট্যুর। ১ম এবং শেষ দিন বাদ দিলে পাক্কা ১০ দিন। প্রথম দিনই ডিনারে একটু বিপত্তি ঘটল। ডরমেটরিতে পৌছুতে আমাদের ৭:৩০ বেজে গেল। আধাঘন্টার মধ্যেই আমাদের সবকিছু চিনিয়ে এবং বুঝিয়ে দিয়ে লোকাল টিম বিদায় নিলে আমরা সবাই ফ্রেস হয়ে মোটামুটি ধীরে সুস্থে ডিনারের জন্য বের হলাম। ক্যান্টিনে গিয়ে দেখি সব অন্ধকার। কিছুক্ষন ডাকাডাকির পর একজন এসে চৈনিক ল্যাঙ্গুয়েজে কি যেন বলা শুরু করল। এরা চৈনিক ছাড়া অন্য কোনো ভাষা বোঝে না। আর আমি সহ আমার টিমের সকলেরই চৈনিক জ্ঞান ‘নি হাউ মা’ (কেমন আছেন?) পর্যন্ত। অবশেষে একজনকে পেলাম যে ইংরেজী এবং চৈনিক দুই ভাষাই জানে। আর তার মাধ্যমে যে জিনিসটি উদ্ধার হল তা শুনে তো আমাদের মাথা তো পুরাই খারাপ অহস্থা।
ক্যান্টিন ৬ টায় (বাংলাদেশ টাইম ৪টায়) বন্ধ হয়ে যায়। আগ্ই বলে রাখি বাংলাদেশের সাথে কুনমিং এর সময়ের পার্থক্য ২ ঘন্টা হলেও ভৌগলিকভাবে খুব বেশি দুরে না থাকার কারনে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত সবকিছুতে তেমন পার্থক্য নেই। যেমন কুনমিং-এ সূর্যাস্ত ৮:৩০ আর বাংলাদেশে ৬:৩০। সুতরাং ঘড়ির কাটা ২ ঘন্টা না বাড়ালে বাংলাদেশের মতই। কি আর করা। বাইরে খেতে হবে। সমস্যা সেখানেও হালাল খাবার কোথায় পাব? আবার সন্ধা ৮:০০ টার মধ্যে মোটামুটি দোকানপাট বন্ধ। অগত্যা ৫ কিলো হেঁটে কেক আর কলা কিনে রাতরে খাবারের ঝামেলা শেষ করলাম।
আমাদের তিন বেলা খাবারের রুটিন ছিল; ভোর ৭:৩০ নাস্তা, সকাল ১১:৩০ লাঞ্চ এবং বিকাল ৫:৩০ টায় ডিনার। আমরা আবার এর সাথে আরেকটি ওয়াক্ত বাড়িয়ে রাত ১১:০০ টার দিকে রাতের ডিনার যোগ করলাম। খাবারের স্বাদ নিয়ে একটু সমস্যা ছিল। শাক-সবজি সব অর্ধ সেদ্ধ। মাছ মাংশের টেস্ট মিস্টি মিস্টি লাগে। একদিন তো আমরা নিজেরাই কিচেনে ঢুকে গেলাম । আমাদের ঝাল আর স্পাইসি দিয়ে রাননা দেখে চায়নারা তো অবাক। ওরা সাহস করে আর আমাদের রান্না খেয়ে দেখেনি কেমন হলো। গরুর মাংশ আর মুরগি রান্না করে লাঞ্চ আর ডিনার টা ওইদিন আমাদের ভালোই কাটল।
আমাদের সমস্যা হল ভালো জিনিস আমাদের ভালো লাগেনা। ডালে চালে ঝাল খিচুরি না হলে কি আমাদের চলে। বাঙালি তো, তাই সমাধান বের করতে সময় লাগেনি। ইউনান ইউনিভার্সিটির পাশে ফরেন স্ট্রিট নামক যায়গায় একটা ইন্ডিয়ান রেস্ট্রুরেন্টে বিরিয়ানির সন্ধান পেয়ে গেলাম। খাবারের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেয়ে আমরা মনোনিবেশ করলাম বিভিন্ন স্পট ভিজিটিং-এ। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৫৪