কোটা প্রথার বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ আন্দোলনরত। খুবই ভালো কথা। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সবারই সচেতন থাকা উচিৎ। বিশেষ করে ছাত্র সমাজের। যেহেতু ছাত্র জীবন পার করে এখন কর্ম জীবনে, ব্যস্ততার কারনে খুব একটা নজর দিতে পারি নি আন্দলনের ব্যপারে। তাই যখন ছবিটার দিকে নজর পড়লো, আৎকে উঠলাম। প্ল্যকার্ড হাতে চারটি ছেলে দাঁড়ানো। তাদের প্ল্যকার্ডে লিখা তাদের দাবী, “বেকাররা কোটা বৈষম্য থেকে মুক্তি চায়” “কোটা সংস্কার চাই” “১০% এর বেশি কোটা নয়” “নাতি-পুতির কোটা বাতিল কর”।
প্রথম দুইটা নিয়ে আমার কোণ মতামত নেই। “১০% এর বেশি কোটা নয়” এটা নিয়েও থাকত না যদি না পরের লিখা টা চোখে পড়ত, “নাতি পুতির কোটা বাতিল কর”। এটা নিয়ে আমার কিছু কথা আছে, আপত্তি নেই।
আমি এই ব্যপারে কথা বলা বা মতামত দেয়ার অধিকার রাখি কারন আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। অতি সন্দেহ প্রবন মানুষদের অবগতির জন্য জানাতে চাই, আমার বাবা চট্টগ্রাম থেকে অংশ গ্রহণ করা ভারতের হরিনা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ২য় ব্যাচের নগর গেরিলা যোদ্ধা। যুদ্ধের সময়,সেক্টর কম্যান্ডার জিয়াউর রহমানের ব্রিফিং এ চট্টগ্রামের কুখ্যাত রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপর গেরিলা হামলা চালান চকবাজারে। বাবার স্টেন গান থেকে করা গুলির ক্ষত চিনহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বহন করতে হয় সালাউদ্দিন কাদের চৌ কে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রাজাকারটা সেদিন বেচে যায়।
যাই হোক, আমার জন্ম ১৯৮১ সালে। দেশ সবে তখন বিশ্ব বেহায়ার কবল মুক্ত। বুঝ হওয়ার অনেক পরে মুক্তি যুদ্ধ কি বা মুক্তিযোদ্ধা কারা সে সম্পর্কে জ্ঞান হয়। আমার বাবা মোটামটি বদ রাগি মানুষ ছিলেন (এখন অবশ্য অনেক শান্ত)। এক মাত্র ছেলে হওয়ার পরও ছোট বেলা থেকেই উত্তম মাধ্যমে কক্ষনো কার্পন্য করতেন না। বেল্ট বা বিশাল তালুর আকস্বিত চড় খেয়ে খেয়ে আমি মোটামুটি নিরাপদ দূরত্বই বজায় রাখতাম উনার কাছ থেকে । ২০০০ সালে এইচ এস সি পাশ করি। বরাবরই মাঝারি ছাত্র ছিলাম। তাই ২য় বিভাগ ভাগ্যে জোটে। তবে আমি খুশি ছিলাম, কানের পাশ দিয়ে গুলী বেরিয়ে গেছে বলে। পাশের হার ছিল ১৯%। বিশ্ব বিদ্যালয় ভর্তির আবেদন করবো। সেই সুবাদে “কোটা” নামক বস্তুর সাথে প্রথম পরিচয়। না মুক্তি যোদ্ধা কোটার কথা আমি প্রথমে শুনি নাই। প্রথমে শুনি খেলোয়াড় কোটার কথা। তার খোজ খবর করতে গিয়েই জানতে পারি মুক্তি যোদ্ধাকোটা নামেও এক প্রকার বস্তু সবে মাত্র কোটা পরিবারে যুক্ত হয়েছে। আর ততদিনে জানতে পেরেছিলাম (চাচা/দাদীর কাছে) আমার বাবাও মুক্তিযোদ্ধা।
তাহলে আমাকে কি করতে হবে?
আমাকে শুধু সরকার প্রদত্ব মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেটটি আনতে হবে।
তাই খুশিতে বগল বাজাতে বাজাতে গেলাম বাসায়।
“আম্মা, আব্বার মুক্তি যোদ্ধা সার্টিফিকেট টা দেন। ভার্সিটি টিকা কোণ বেপারই না।”
আম্মা আমার কথায় মোটা মুটি টাশকি খেলেন, “কবে দিসে সার্টিফিকেট”?
"মানে কি? সরকার দিসে না?”
"কোণ সরকারে দিসে?"
হতাশ হয়ে মামা চাচাদের কাছ থেকে যা জানতে পারলাম তার সারমর্ম মোটা মুটি এই,“তোর ভাগ্যটাই খারাপ। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর অনেক মুক্তি যোদ্ধার সাথে (আওয়ামীলীগ মুক্তিযোদ্ধা বেশিরভাগ, কারন তখনও বি এন পি গঠিত হয় নি, কাদের সিদ্দিকি তাদের একজন) তোর বাপও ভারতে চলে যায়। ভারতের সামরিক সাহায্য নিয়ে পুনরায় দেশে আওয়ামী শাসন কায়েম ও মুজিব হত্যার প্রতিশোধ নিতে। কিন্তু সেখানে আওয়ামীলীগ নেতা দের এবং ভারত সরকারেরও আগ্রহ হীনতায় বাধ্য হয়ে দেশে ফেরার চেষ্টাকালে আবিস্কার করেন দেশে তখন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নেই। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায়। প্রতিনিয়ত পুলিশ যাচ্ছে পলাতক মুক্তি যোদ্ধাদের বাসায় বাসায়। সৌভাগ্যবশত নব গঠিত বি এন পি ও আর্মিতেও বাবার পরিচিত অনেক মুক্তি যোদ্ধা ছিলেন যাদের ভরসায় বাবা ফিরে আসেন। ততদিনে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। যুদ্ধে যোগ দেন ১৭ বছর বয়সে। বারির বড় ছেলে ছিলেন। তাই লেখা পড়ার সুযোগ আর পান নি। ব্যবসা শুরু করেন। একটাই ভুলই তখন করেছিলেন, চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন চৌ বা এম এ আজিজ এর কথা মত পুলিসের চাকরীতে যোগ না দিয়ে। কে জানতো মুক্তি যোদ্ধাদেরকেই দেশ ছেড়ে পালাতে হবে এক সময়।"
"আরে এত সবের সাথে আমার সার্টিফিকেটের কি সম্পর্ক ?"
"ভারতিয় সেনাবাহিনির তৈরি মুক্তি যোদ্ধাদের তালিকায় তোর বাবার নাম থাকা সত্বেও সার্টিফিকেট পান নি তৎকালিন সরকারী কর্মকর্তাদের অবহেলা আর মুক্তি যোদ্ধা বিষয়ক তথ্য সংগ্রহের কাজ গুলতে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি যোগ দান করেনি এমন অনেকের মাতবরি সহ্য করতে না পেরে।"
বাবাকে পরিবারের সবাই ভয় পেত। তাই সবার ছোট চাচা যখন ভয়ে ভয়ে উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “অমুক নেতার উপর দায়িত্ব পড়েছে মুক্তি যোদ্ধাদের তালিকা অনুসারে সার্টিফিকেট দেয়ার জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করার ,আপনি তার সাথে একটু যোগাযোগ করেন।” উত্তরে আমার বদরাগী বোকা বাবা বলেছিলেন, “হে তো যুদ্ধের সময় আমাদের আশ্রয় দিত আর খবরা খবর আনত। ডরে কোণ দিন অস্ত্র চালায় নাই। হের কাছে যাবো আমি? সে জানে না কারা কারা যুদ্ধ করসে? সে অনুযায়ী নাম জমা দেক।”
সেই “অমুক” তখন অনেক বড় মানুষ। তাই বাবার মত ছোট খাট, রাজনীতি না করা মুক্তি যোদ্ধার নাম সার্টিফিকেট ইস্যুতে লিপি বদ্ধ করা খুব একটা গুরুত্বপুর্ন মনে করেন নি। এখানে একটু জানিয়ে রাখি তখন কিন্তু মুক্তি যোদ্ধা তালিকা করা হয়েছিল কোণ সুবিধা দেয়ার জন্য না। স্রেফ জাতীয় ভাবে ডাটা রাখার জন্য।১৯৮৬-৮৭ সালের হিসাব অনুযায়ি মুক্তি যোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২ হাজার ৪৫৮ জন। তাতে বাবার নাম ছিল, সার্টিফিকেট ছিল না।
“কিন্তু এখন(২০০১) তো আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়। এখন সমস্যা কি?”
"আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কর্তা ব্যক্তিদের মাঝে কিছুটা পরিবর্তন হওয়ায়, নতুন তালিকায় মুক্তি বার্তা লাল এবং সবুজ দুটোতেই বাবার নাম উঠে। চট্টগ্রামের বিশিষ্ট মুক্তি যোদ্ধা ডঃ মাহবুবুর রহমান নিজ উদ্যগে ঘুরে ঘুরে অনেক মুক্তি যোদ্ধার সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সমন্বয়ে গুরুত্ব পুর্ন ভুমিকা পালন করেন। কিন্তু নাম উঠলে কি হবে। তখনও পর্যন্ত সার্টিফিকেট টাইপের কোণ ফর্মেট হাতে পাওয়া যায় নি যা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়ে বলা যায় “আমি মুক্তি যোদ্ধার সন্তান।” কারন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে প্রথম তালিকায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৯০ জন এবং পরে আরও যাচাই বাছাই করে ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৫২ জনের আরেকটি তালিকা প্রকাশ করতে করতেই চলে আসে নির্বাচন।
তোর ভাগ্যটাই খারাপ।"
আমি পুরাই বিলা খাইলাম।
পরীক্ষা দিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। টিক লাম “খ” ইউনিট, বিষয় পাইলাম “ইসলামী ইতিহাস”। ইচ্ছা ছিল সাংবাদিকতা পড়ার। কোটায় পরীক্ষা দিতে পারলে অবশ্য পাইতাম।তাই আর সি ইউ তে ভর্তি হই নি।
এই মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়ন করা, পরিবর্তন করার ঠেলা ঠেলিতে কাঙ্ক্ষিত “সার্টিফিকেট” আর হাতে পেলাম না। এখন আমার বয়স ৩৩ বছর। বি সি এস এর ধারে কাসেও আমি আর যাবো না।এখন আর সার্টিফিকেট আমার কোণ কাজে আসবে না।
আমাদের ব্যচে আমি শুধু একা নই আরও অনেক মুক্তি যোদ্ধার সন্তানরা ছিল, যাদের কাহিনিও একই। সারা দেশে হিসাব করলে অনেক পাওয়া যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। এর পর বি এন পি সরকার, মুক্তিযদ্ধাদের কল্যানার্থে জাতীয় মুকিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন ২০০২ (৮ নং আইন) প্রণয়ন করেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের যেসব কার্যাবলী উক্ত আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে,
“প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, সনদপত্র ও প্রত্যয়ন পত্র প্রদানে এবং জাল ও ভূয়া সনদপত্র ও প্রত্যয়ন পত্র বাতিলের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ।”
ব্যস, আবার শুরু ইনকোয়ারি। বাসায় এসে জিজ্ঞাসাবাদ, খোজ খবর নেয়া। আমার বাবা আওয়ামীলীগের কট্টর সমর্থক(আমি নই)। তা সত্বেও উনার নাম বহাল থাকে। কিন্তু নতুন করে অনেকের নাম যুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাড়ায়, ২ লাখ ১০ হাজার ৫৮১ জনে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত গেজেট আকারে প্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাড়ায় ২ লাখ।
মুক্তি যোদ্ধাদের ছেলে মেয়েদের জন্য কোটা সুবিধা তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার চালু করে ১৯৯৭ সালে। এই প্রক্রিয়ায় সেই সব মুক্তি যোদ্ধার সন্তানরাই অংশ নিতে পারে যাদের সার্টিফিকেট রেডি ছিল। কারন আওয়ামীলীগ সরকার দুই বার যাচাই বাছাই করে নতুন করে সার্টিফিকেট আর দিতে পারে নাই। অবশ্য যারা বিশেষ উপায়ে রাতারাতি সার্টিফিকেট বানিয়েছে তাদের কথা আলাদা।অন্তত আমি পারি নি। ২০০৯ সাল পর্যন্ত কে মুক্তিযোদ্ধা আর কে মুক্তিযোদ্ধা নন সেই তালিকা পরিবর্তন করা হয়েছে ১০ বার।
বর্তমানে ২,১৫,০০০ জন মুক্তি যোদ্ধা। ধরলাম তাদের সবাই আসল মুক্তিযোদ্ধা।
ভারতিয় তালিকায় আছে ৬৯,৮৩৩ জনের নাম। তারা সবাই পুর্নবয়স্ক এবং সবাই স্মমুখ সমরে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে।এই তালিকা সঠিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
সেক্ষেত্রে ১৯৭১ সালে এদের বয়স হবে আনুমানিক ৫০ থেকে ১৭ বছর।কারন আমার বাবার বয়স ছিল তখন ১৭ বছর এবং তাকে ইন্ডিয়ান আর্মির সিলেকশন অফিসারদের সাথে অনেক গাঁই গুই করে ট্রেনিং এর জন্য টিকতে হয়েছিল। সর্বনিন্ম বয়সের মুক্তি যোদ্ধাদের ছেলে মেয়েদের হিসাবে আমার ব্যচের ছেলে মেয়েরাই পড়ে। আর আমার ব্যচের ইতিহাস তো বললামই।
তার মানে সেই সব মুক্তি যোদ্ধার সন্তানেরাই কোটা সুবিধা পুরাপুরি পেয়েছে(২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত)যাদের বয়স যুদ্ধকালে ছিল ১৬ থেকে ১৩ বছর।সেই হিসাবে, ১৬ থেকে ১৩ বছরের যোদ্ধার সংখ্যা তখন কত হতে পারে? তাদের মধ্যে কত জন সরা সরি যুদ্ধ করেছে?
স্বাধীনতার পার হয়েছে ৪৭ বছর। ওই সময়ের ৩০ বছরের যে যুবক যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে তার বয়স আজ ৭৭। তার ছেলের বা মেয়ের বয়স আনুমানিক ৪৫-৫৫ বছর। তাহলে দেখা যাচ্ছে তারা কোটা প্রথার কোণ উপকারিতাই পায় নি বা আর পাবে না। তারা যেটা পায় নি সেটা তাদের ছেলে বা মেয়েরা (নাতি পুতি) পাবে।
বর্তমান সরকার যখন মুক্তি যোদ্ধাদের চাকরীর মেয়াদ বাড়ায় তখনই ভুয়া মুক্তি যোদ্ধার সার্তিফিকেট বানানোর হিড়িক পড়ে। আপত্তি অবশ্যই যৌক্তিক মনে হবে এই সব ভুয়াদের ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে প্লেকার্ডের লিখা টা একটু অন্য রকম হওয়া উচিৎ ছিল।
কারন বয়সের হিসাবে সেই সব মুক্তি যোদ্ধাদের নাতিরাই সুবিধা পাবে যাদের বয়স ছিল ৫৫ থেকে ১৮ বছর। এবং আমার বিশ্বাস ভারতিয় সেনা বাহিনির দেয়া তালিকার সবারই বয়স এই রেঞ্জের মধ্যেই পড়বে। ভারত বিদ্বেষী ভাইদের অব গতির জন্য জানিয়ে দিতে চাই, ভারতিয় সেনা বাহিনী আমাদের মুক্তি যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেয়, তাই তাদের তালিকা টার গ্রহণ যোগ্যতা বেশি।
সুতরাং তোমরা যারা রং মেখে সঙ্গ সেজে হাতে প্ল্যকার্ড নিয়ে যাদের নাতি পুতির কোটা বাতিলের কথা বলছ তারা সবাই সম্মুখ সমরের প্রকৃত যোদ্ধা। কোটা প্রথার পুরা সুবিধা টাই উপভোগকারিদের মধ্যে বেশিরভাগই গুলিরবাক্স বহনকারি বা শেল্টার দানকারি বা খবরা খবর আদান প্রদানকারি সহকারী মুক্তি যোদ্ধার সন্তানেরা। আমি তাদের অবদানকে ছোট করছি না। কিন্তু যখন গুরুত্বের ব্যপার আসবে তখন অবশ্যই সাহায্য কারিদের চেয়ে যোদ্ধাদের গুরুত্বটাই আগে থাকবে। সেটাই যুক্তিসঙ্গত।এক্ষেত্রে আতি উথসায়িরা আবার বঙ্গবন্ধু সহ মুজিব নগর সরকারের কর্মকর্তাদেরকেও তাদের(সাহায্যকারী) কাতারে নামিয়ে আনবেন না।
কোটা প্রথা সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এই আন্দলনের সাথে যারা জড়িত, তাদের অনেকের মুখে মুক্তি যোদ্ধা কোটার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ শোনা যায় তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে ভুয়া মুক্তি যোদ্ধার নাম তালিকায় ঢোকা। সেক্ষেত্রে অনেকে বলছে মুক্তি যোদ্ধা কোটা যাতে আসল মুক্তি যোদ্ধার সন্তানরা পায় সেটা নিশ্চিত করা উচিৎ। আসল মুক্তি যোদ্ধাদের তালিকা বানালে দেখা যাবে বর্তমানে তাদের নাতি পুতিরাই থাকবে সুবিধা নেয়ার জন্য বয়সের কারনে। আর কোটার খোটা তোমরা তাদেরকেই দিচ্ছ??!!
আমি কোটা প্রথার সুবিধা পাই নি। আমার সন্তানও পাবে না যেহেতু প্রধান মন্ত্রী আজ সংসদে বলেছেন, "সব রকম কোটাই বাতিল করা হোক।" আমার আফসোস নেই। কারন আমি জানি আমার বাবা কোটা পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করেননি। কিন্তু খোটা টা বড় গায়ে লাগছে। "নাতি পুতির কোটা বাতিল করা হোক।" ভাষাটা থেকে কেমন যেন ঘৃণা চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।যেন মনে হয় যুগ যুগ ধরে যারা শোষণ করে তিলে তিলে তোমাদের মেরেছে, তোমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, তাদের নাতি-পুতির কথা তোমরা বলছ।