গতকাল দেখলাম, মেলায় অভিনেতা শাহরীয়ার নাজিম জয় এসছেন। ব্যাপক নেয়ে ঘেমে বই বিক্রি করছে। দুর থেকে দেখে ভালো লাগছিল। যাক অভিনেতা হলেও কম বেশি লেখালেখি করছেন। এটা ভালো দিক। এক ছোট ভাইকে পাঠালাম, দেখে আসোতো তার কী বই বেরুলো? ছোট ভাই এসে জবাব দিলো, তার বই না, অন্যের বই। সে বিক্রি করছে।
শুনে সামনে গেলাম।
খুবই সত্য কথা। জয় নিষ্ঠার সাথে ব্ই বিক্রি করে চলছেন। 'নেন'। 'এইটা নেন'। 'ওইটা নিতে পারেন'। 'সেটাও খারাপ লেখেনি'।
আরো অবাক হলাম ওই লেখকের বই বিক্রির জন্য প্রথম সারিতে জয়ের সাথে চার সুন্দরী নারী। যাদের কাছে বড় ভাই আনজির লিটনের ছড়ার একটি বই চেয়ে মোটমুটি অপমানিত হলাম। বইয়ের নাম মনোযোগ দিয়ে শুনে তাকালেন, তারপর অন্যদিকে তাকিয়ে রইলেন। কিছুক্ষণপর ওই লেখকের একখানা বই ধরিয়ে দিলেন।
এদিকে জয় তার জয়যাত্রা চালিয়ে যাচ্ছেন। একের পর এক বই বিক্রি করে যাচ্ছেন। সবচেয়ে অবাক হলাম লেখক স্টলে নেই। বইতে অটোগ্রাফও দিচ্ছেন তিনি।
বুঝলাম, যে কোনোভাবে বই বিক্রিই মূল। হতাশ হলাম। হতে পারে জয় লেখকের বন্ধু, ভালো কথা বন্ধুর বই বন্ধু বিক্রি করছে। কিন্তু অটোগ্রাফও দিচ্ছেন জয়!!!
হায়! কলিকাল!
বই বিক্রির এই কৌশল হজম হলো না।
আরেক ঘটনা বলি। বই মেলায় কিছু অতি বিজ্ঞাপনদাতা লেখক আছেন। গত বছর এমন একজনের সাথে পরিচয় হয়। এর ফাঁকে বলে রাখি বইয়ের বিজ্ঞাপনকে আমি খারাপ ভাবি না। আমরাও অল্প বিস্তর বিজ্ঞাপন যায়। কারণ, এই ব্যাস্ত সময়ে না জানালে কেউ হয়তো খোজ নেবে না কার কী বই বের হয়েছে।
যাই হোক ওই লেখকের কথা বলে লেখা শেষ করি। তিনি জানলেন আমি একটা পত্রিকায় আছি। তো পত্রিকায় থাকলে একটা লেখক সাধারণতো যে প্রশ্ন করেন, আপনার পাতার সাহিত্য সম্পাদক কে?
বা আপনাদের ওই পাতা কে দেখেন?
আমিও এমন প্রশ্ন শুনবার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তিনি প্রশ্ন করলেন, আপনাদের বিজ্ঞাপন রেট কতো?
আমি কি বলবো বুঝতে পারলাম না। কানকেও বিশ্বাস করাতে পারলাম। একি বলে?
লেখালেখি তাহলে কাদের দখলে যাচ্ছে?
যাই হোক আগামীতে বই বের হলে এমন কিছুই করতে হবে। গতকাল অবশ্য এমন ভাবণা ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। স্বপ্ন দেখছিলাম, আমার বই বিক্রি করতে অমিতাভ বচ্চন উড়ে এসেছেন। আমার ষ্টলে বসে বলছেন, আসেন ভাই নেইলকাটার-টা নিয়ে যান। ইশতিয়াক আহমেদ এর বই। তাকে আমি ব্যাক্তিগতভাবে চিনি। অতি ভালো লোক। ভালো লেখেনও। আমি তার লেখা হিন্দি অনুবাদ করে নিয়মিত পড়ি।