somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তরমুজ বিক্রেতা থেকে প্রেসিডেন্ট!

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, মুসলিম উম্মাহর আশার আলো।পাশ্চাত্য -সাম্রাজ্যবাদীদের আতংক।সাহসী পুরুষ রজব তাইয়েব এরদুগান এর জীবনী সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না।তাঁর শিশুকাল,যৌবনকাল,রাজনৈতক জীবন থেকে বর্তমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট -জীবন পর্যন্ত,চমৎকার এক অধ্যায়।সেই ছোট বেলা থেকে শত সংগ্রাম বাধা-বিপত্তি এবং প্রতিরোধ অতিক্রম করে আজকে তিনি তুরস্কের মুসলিম সাহসী প্রেসিডেন্ট।

আসুন জেনে নিই,কেমন ছিল তার সংগ্রামী -জীবন।

জন্ম এবং শিশুকালঃ

রজব তাইয়েব এরদুগান ১৯৫৪ইংরেজি সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইস্তাম্বুলে 'জুরজু' বংশে জন্মগ্রহণ করেণ।তাঁর শিশুকাল কেটেছে কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে।তের বছর বয়সে আবার ইস্তাম্বুল চলে আসেন।এরদোগানের পরিবার ছিল দারিদ্র-অসহায়।তাঁর প্রতিপালনও হয়েছে গরিব পরিবারে।
তাঁর ছোটবেলার অবস্থা তিনি নিজেই বর্ণনা করেন এক সমাবেশে,
" আমার সামনে তখন তরমুজ বিক্রি করা ছাড়া আর কোন পথ ছিল না।যা দিয়ে আমি আমার আব্বাকে সাহায্য করতাম।এবং আনার প্রাথমিক শিক্ষার খরচ যোগাড় করতাম।"
তাঁর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা "ইমাম খতীব" নামক মাদ্রাসায়(স্কুল) সমাপ্ত হয়।
অতপর মর্মরা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'অর্থনীতি'র উপর গবেষণা করেন।

রাজনৈতক ময়দানেঃ

সত্তর দশকে এরদুগান, নাজিমুদ্দিন আইবেকানের নেতৃত্বে "হিজবুল খালাসিল ওয়াতানি" দলে যোগ দেন।কিন্তু ১৯৮০সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর তুরস্কের সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।
১৯৮৩ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে,এরদোগান "হিজবু রাফাহ"এ যোগ দেন।
১৯৯৪সালে "হিজবুর রাফাহ"র পক্ষ থেকে ইস্তাম্বুলের মেয়র পার্থী হিসেবে মনোনিত হন।
এবং বিজয়ও লাভ করেন।ইস্তাম্বুলের মেয়র হন।
১৯৯৮ সালে ধর্মীয় উগ্রতার(!) অভিযোগে তাঁকে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।এমনকি,এক রাজনৈতিক সমাবেশে কিছু ইসলামি কবিতা পাঠ করার কারণে তাঁকে কারাগারে যেতে হয়।
তুর্কি ভাষায় কবিতাগুলোর এরকম(তরজমা),
‘মসজিদ আমাদের ব্যারাক,
গম্বুজ আমাদের হেলমেট,
মিনার আমাদের বেয়নেট,
মুসল্লিরা আমাদের সৈনিক
এবং এই পবিত্র দল পাহারা দিবে আমাদের দীনকে"
( এই কবিতার মধ্যে ধর্মীয়
উসকানির গন্ধ পায় সেক্যুলার
শাসকরা।)

তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী

১৯৯৪সালে বিপুল ভোটে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন এরদোগান। সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র
নির্বাচিত হন। এ সময়
তিনি দেড় কোটি লোকের এ
শহরটির ট্রাফিক জাম এবং বায়ু
দূষণ রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ
করেন।এ ছাড়া ইস্তাম্বুলের অনেক উন্নতি সাধন করেন।
২০০২সালে আব্দুল্লাহ গুলের নেতৃত্বে এরদুগানের (এ কে পি পার্টি) বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন।
(জনপ্রিয়তায়)
পরপর (২০০৭, ২০১১,২০১৪)
সাংসদীয়
নির্বাচনে বিজয়ী হন।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এরদোগান তুরস্কের সামাজিক, অর্থনৈতিক সহ সব খাতে ঐতিহাসিক উন্নয়ন করেন।সেই সাথে বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্কও জোরদারভাবে করেন।
বিশেষ করে মুসলিম রাষ্টগুলোর সাথে (ভিসা,সীমান্ত ইত্যাদি বিষয়ে) শিথিল করেন।

গা জা য় সাহা য্যঃ

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি গাজায় নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য অনেক সাহায্য করেন।ইসরাইল-আমেরিকার শত বাধা এবং চোখ রাঙ্গানী সত্বেও তিনি গাজার মজলুম মুসলমানদের পাশে ছিলেন।ইসরাইলের সাথে সব সম্পর্কও ছিন্ন করেন।(কয়েক বছর আগে গাজা অভিমুখী তুরস্কের ত্রানবাহী জাহাজে ইসরাইলী সন্ত্রাসীরা আক্রমন করে)
মিসরের স্বৈরচারী অবৈধ সেনা শাসনেরও কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

বাদশাহ ফায়সাল পুরষ্কার লাভঃ

(মালিক ফায়সাল পুরস্কার। নোবেলের মত আন্তর্জাতিক একটি পুরষ্কার। যা সৌদি থেকে বিশ্বের ভিবিন্ন মুসলিম মনীষী কে দেয়া হয়,ইসলাম এবং মানবতার প্রতি অবদান রাখার জন্য)
তুরস্কে ইসলাম এবং মুসলমানের জন্য অবদান রাখার কারণে,২০১০ ইং,১৪৩০ হিজীরী তে "বাদশাহ ফায়সাল পুরস্কার কমিটি "র পক্ষ থেকে এরদুগান কে সেই পুরষ্কার দেয়া হয়।সেই সাথে ১৪৩১/৩/২৩ তারিখে "উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি "র পক্ষ থেকে তাকে 'ডক্টরেট ' ডিগ্রী প্রদান করা হয়।

প্রেসিডেন্ট

কিছুদিন আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে এরদুগান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।বর্তমানে তিনি আধুনিক তুরষ্কের জনপ্রিয় নেতা।
(যদিও কামাল আততুরকের সেক্যুলার বাহিনী /পাবলিক অনেক অপচেষ্টায় আছে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য।)
ইসলাম এবং মুসলমানকে নিয়ে তাঁর সাহসী বক্তব্যে তিনি অনেক আলোচিত।

আল্লাহ তাঁর হায়াত লম্বা করুন।।।

(সুত্রঃ সাপ্তাহিক আল-আলমুল ইসলামি, ইন্টারনেট,উইকিপিডিয়া)
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমুখী একটি চাওয়া

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২০


মানুষের মুখে হাসি ফুটুক,
আঁধার মুছে আলোর ছোঁয়া,
ক্লান্তিহীন পথ চলুক,
নতুন স্বপ্ন আনবে জোড়া।

দিনবদলের শপথ নিয়ে,
কাঁধে কাঁধ মিলে কাজ করে যাই,
নদীর স্রোতে ভেসে ভেসে
একটি স্রোতে মিলিয়ে যাই।

সবার তরে সমান বিচার,
ধনীর দুঃখীর,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওবায়েদুল কাদের কি মির্জা ফখরুলের বাসায় আছেন?

লিখেছেন রাজীব, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮

"পালাবো না, পালিয়ে কোথায় যাবো? দরকার হলে মির্জা ফখরুলের বাসায় আশ্রয় নেবো। কি ফখরুল সাহেব, আশ্রয় দেবেন না?" ওবায়েদুল কাদের একটি জনসভায় এই কথাগুলো বলেছিলেন। ৫ই আগষ্টের পরে উনি মির্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×