ভূমিকা: যারা ব্লগ লিখে তাদের কে ব্লগার বলা হয়। ব্লগার রা আর ২ - ৪ টা সাধারণ মানুষের মতো। এদের ও মানুষের মতো হাত, পা , চোখ , কান আছে। তবে ব্লগার হতে গেলে হাতের ই ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। ব্লগার রা ব্লগের প্রাণ এটা সর্বজনীন স্বীকৃত। মডু না থাকলেও ব্লগ চলে (যেমন : কলিকাতা ব্লগ ) কিন্তু ব্লগার না থাকলে ব্লগ অচল অনেকটা মাছ বিহীন পুকুরের মতো।
মডু আর ব্লগারের পার্থক্য :
১। সব মডুই ব্লগার কিন্তু সব ব্লগার মডু না - এই এক বাক্য দিয়ে মডু আর ব্লগারের পার্থক্য করা যায়।
২। ব্লগার ব্যান খাইতে পারে তবে মডুদের সেই সম্ভাবনা নেয়।
৩। ব্লগাররা মডুদের গালাগালি করতে পারলেও মডুরা তা পারে না।
৪। মডু হওয়ার জন্য গন্ডারের চামড়া লাগলেও ব্লগার হওয়ার জন্য মানুষের চামড়াই যথেষ্ট।
৫। ব্লগারদের প্রকাশ্যে সামনে আসার সাহস থাকলেও মডুদের সেই ক্ষমতা রহিত করা হয়েছে।
ব্লগারদের প্রকারভেদ:
বিভিন্ন ধরণের ব্লগার হয়ে থাকে। যেমন: ছেলে ব্লগার, মেয়ে ব্লগার, ছাইয়া ব্লগার, ক্যাচালবাজ ব্লগার ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রত্যেক ব্লগারের একটা নিজস্ব নাম থাকে। এটা তাদের পিতা মাতা কতৃক দেয়া নাম না নিজ প্রদত্ত দেয়া নাম। কেউ কেউ আবার নিজ নিজ বাপ মায়ের দেওয়া নাম ব্যবহার করে এবং এরা নিজেকে নিয়ে খুব গর্ব করে। হাতের পাঁচ আঙ্গুল যেমন সমান নয় তেমন সব ব্লগার একই রকম না। কেউ কেউ ব্লগে লুলামি করতে আসে আবার কেউ কেউ লেখনীর মাধ্যমে দেশ ও জাতির উদ্ধার করতে আসে। ব্লগ লিখার জন্য এদের কে একাউন্ট খুলতে হয় (বিনা পয়সায়) এবং সাত দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় যদিও মডুদের আলসেমীর কারণে এই ৭ দিন কখনো কখনো সাত মাসে গিয়ে পৌছায়। অনেকেই এর মধ্যে কান্নাকাটি শুরু করে দেন। মডুকে তুলোধুনা করে পোস্ট দিতে থাকেন তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এদের পোস্ট প্রথম পাতায় যায় না বলে কেউ দেখে না। তারপর যদি কোনো ব্লগার সেফ হয়ে যায় শুভেচ্ছা জানিয়ে একটা পোস্ট দেয় মাঝে মাঝে মডুদের কেও ধন্যবাদ জানায়।
ব্লগারদের কার্যবিবরণী:
ব্লগারদের ব্লগে আসার উদ্দেশ্য ভিন্ন ভিন্ন। কেউ সাহিত্য চর্চা করতে আসে , আবার কেউ শুধু টাইম পাস করতে আসে। অনেকেই আবার ব্যক্তিআক্রমণ বা পূর্বশত্রুতার জের ধরে আসে। ব্লগাররা ব্লগে এসে আড্ডাবাজি করে আবার শাহবাগে গিয়ে মানববন্ধন ও করে। দু:খের বিষয় হয়লেও সত্য এখানে মডুদের কোনো ভূমিকা থাকে না বা থাকলেও তা উহ্য থাকে। ব্লগারদের মধ্যে ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখা গেলেও আসলে এরা একজন আরেক জনকে দেখতে পারে না। এক নিক দিয়ে পোস্টে + দিয়ে আবার অন্য নিক দিয়ে গালি দিয়ে যায়। এর মধ্যে পোস্টে তুমুল ক্যাচাল লেগে গেলেও পোস্ট বা কমেন্ট রিপোর্ট না করা পর্যন্ত মডুরা চুপ করে বসে থাকা ছাড়া কিছুই করে না। এসময় ব্লগারদের আপত্তিকর মন্তব্য বা পোস্ট না মুছার জন্য মডুকে দোষারোপ করতে থাকে। মানুষ মাত্রই মরণশীল আর মাল্টিনিক মানেই আক্রমণশীল।
ব্লগের বাইরেও ব্লগারদের দেখা যায়। অনেকে আবার আড্ডা মারার জন্য বা শাহবাগে মানববন্ধন করতে দেখা যায়। এছাড়া হালযুগে ব্লগারদের ফেসবুকে পরিচিতি হতে বেশি দেখা যায়। এর ফলে যা হবার তা হলো : ব্লগারদের মধ্যে সখ্যতা যেমন বেড়েছে তেমন এদের মধ্যে গ্রুপিং বা সিন্ডিকেট হওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে।যার প্রভাব পড়ছে ব্লগের উপর , ক্যাচাল যেমন বাড়ছে তেমনি মডুদের উপর চাপের পরিমাণ ও বাড়ছে। এই ক্যাচাল নিয়ে ব্লগে কত যে সংগ্রাম ঘটে গেছে তা আজ ব্লগের পাতায় পাতায় পড়ে আছে।
পরিচিতি বাড়ার কারণে অনেক ব্লগারের প্রেম এই ব্লগেই গড়ে উঠেছে। দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েও যাচ্ছে। দু:খের কথা এই যে, মডুরা আজ পর্যন্ত কিছু করতে পারলো না।
মডুদের কাজের উপর ব্লগারদের প্রভাব:
ব্লগের জন্ম থেকেই দেখা গেছে যে, মডুদের উপর ব্লগাররা সব সময় ক্ষ্যাপা। কেউ কেউ আবার মডুদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে দেয়। আফসোস এক্ষেএে ব্লগারকে ব্যান করা ছাড়া মডুদের কিছুই করার থাকে। এছাড়া মডুদের স্বজনপ্রীতি নিয়ে যুগে যুগে ব্লগারদের অভিযোগ তো আছেই। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনা মডুরাও মানুষ আর কোনো মানুষই স্বজনপ্রীতির উর্ধ্বে নয়।
উপকারিতা:
ব্লগার একটি উপকারী প্রাণি। কিছু কিছু ব্লগার আছে যারা সারাদিন ব্লগেই পড়েই থাকে অনেকটা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। যার ফলে ব্লগে হিটের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ব্লগের যেমন ইনকাম হচ্ছে তেমনি ২-১ পয়সা মডুদের ও পকেটে আসতেছে। এছাড়া দেশের যেকোনো সমস্যায় মডুরা নীরব থাকলেও ব্লগারদের সরব থাকতে দেখা গেছে।
অপকারিতা:
ব্লগারদের উপকারিতা যেমন আছে,তেমন অপকারিতাও আছে। এদের জন্যই সারাদিন পিসির সামনে বসে ব্লগ পাহাড়া দেওয়া লাগে। যখন দুই পক্ষের মধ্যে ক্যাচাল লাগে তখন মডুদের পড়তে হয় মাঝখানে , দুই দিক হতেই গালগালি শুনতে হয়। এদের কে ব্যান করলেও এরা ক্ষান্ত হয় না। মাল্টি নিকে ফিরে আসে। মানুষ মরে গেলে পচে যায়, আর ব্লগাররা ব্যান খাইলে মাল্টিতে ফিরে আসে। তারপর আবার গালাগালি শুরু করে। তবে সুখের কথা হলো, ব্লগার যায় ব্লগার আসে কিন্তু মডুরা ঠিকই থাকে।
উপসংহার:
সর্বশেষে ব্লগে ব্লগারদের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ন। তারা আছে বলেই তো মডুদের একটা কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা যতই গালগালি করুক না কেনো ব্লগার আর মডুদের অবস্থান সব সময় একই সরল রেখায় যদিও তা বিপরীতমুখি।