somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুত কিংবা উচিত শিক্ষা! ২

২৩ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা আগের পর্বটা পড়েন নি তাদের জন্যআগের পর্ব

তো যেই কথা সেই কাজ! হয়ে গেল বাজী! নাফিস আজই খেলতে রাজী!
কথামত ও আজ রাত ১.৩০ টায়ই পুরানপাড়া গোরস্থানে যেয়ে একটা খোটা (একধরনের লাঠি) গেরে আসবে প্রমাণ হিসেবে!
কাল সকালে আমরা বন্ধুরা মিলে তার উপযুক্ততা যাচাই করব!
.
.
.রাত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে আমার ধুকপুকানি যেন বিপ বিপ করে বাড়তেই থাকল! ভুটকা নাফিস কি শ্যাষ পর্যন্ত যাবেই?

রাত ১০টায় হুপুর অস্থিরতা আচ করতে পেরে ছোট বোন দিল এক জটিল বুদ্ধি! ওর কথামত বাসার কাজের ছেলেটা, হুপু, আর পরানের দোস্ত মিনহাজ মিলে করল কাউন্টার এটাক প্ল্যান! তিনজন মিলে আমাবস্যার এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে বেশ কয়টা ইটের টুকরা কয়েকটা মোমবাতি আর প্রয়োজনীয় কিছু উপকরন হাতে ঠিক রাত ১২.৫০ টায় পজিশন মত তিনজন তিন জায়গায় পজিশন নিল! [মিনহাজ গোরস্থান গেটের কাছাকাছি, হুপু গোরস্থানের ঠিক মাঝবরাবর অনেক নির্জন একটা আমগাছের মগঢালে, আরে কাজের ছেলেটা গোরস্থান থেকে অনেকটা দূরে (প্রয়োজনে অন্য কারো সাহায্য কামনা করা যেতে পারে এমন যায়গায়)]

হুপুর উপর পরেছে মূল দায়িত্বটা, একদম গহীন জঙ্গলে বসে প্রয়োজন মত ইটছুড়ে মারা আর বিকট শব্দ করা!

তিন জঙ্গলী যথারীতি দায়িত্ব পালনরত! কারও মুখে টু শব্দটা পর্যন্ত নাই, একদিকে আমাবস্যার ঘুটঘুটে অন্ধকার! পাশাপাশি একদম কাছ থেকে (গজ ১০ এক) হুতোম পেচাদের ভয়ংকর আর্তনাদ! নিজেরাই যেন অন্তরাত্মা কেপে ফিট খাবার দশা!

রাত ক্রমেই বাড়ছে... ১.০০ টা, ১.১০ টা, ১.২০, টা ১.৩০ টা! হুপু ভাবছে অন্য কথা.. ভিতুর আন্ডা নাফিস্যা আসবে তো? আবার ভাবছে ও ভিতু হইতে পারে কিন্তু প্রচন্ড জেদী! ও আসবেই !
কিন্তু কিসের কি? রাত বাজে ১.৪০ টা, ও সম্ভবত আসবে না!
এখানে বসে মশার কামড়, একটু পরপর হুতুম পেচাদের ভয়ংকার রকম আর্তনাদ, আর শিয়ালের ছুটাছুটি মিলে যে হলুইন দশার সৃস্টি হইছে কোন দেড় কেজির কম কোন আদম সন্তান মিনিট পাচেক ও টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ!

গাছ তেকে নামতে যাবে এমন সময় চমকে উঠে পিছনের নড়ে উঠা পাদার শিরশির আওয়াজে! ভাল করে তাকিয়ে দেখে কেউ একজন আসছে দুর থেকে টর্চলাইট হাতে!
গেটের কাছাকাছি আসতেই মিনহাজ ঝরঝর করে ইটের গুড়াগুলি ছুড়ে দিল ছাদে টিনের ! মুহুর্তের মধ্যে ভো দৌড়!


রাগে গা জ্বলছে হুপুর ! মিনহাজের ছোট্ট বোকামীতে সব প্লেন বরবাদ! গাছ থেকে নেমে আসবে এমন সময় দেখে আবারো গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে গোরস্থানের কাছাকাছি! বোধয় বুঝতে পেরছে! এটা সত্যিকারের ভুতের কান্ড না!

এবার সত্যি সত্যি বেশ বীরত্বের বেশে সোজা ঢুকে গেল গোরস্থানের গেট দিয়ে! মাঝবরাবর এসেই বসে পড়ল খোটা গারবে বলে! হুপু একের পর এক বিকট সাউন্ড আর ইটের টুকরা ছুড়ে মারছে নাফিস্যার আশেপাশে! কোন ডরভয় নেই যেন! ওকি তাহলে আমাদের পরিকল্পনাটা আগেই বুঝে গেছে? নাকি আসার পথে কাজের ছেলেটা ১০০ টাকার লোভে পরিকল্পনা ফাস করে দিল?

ওদিকে মিনহাজ বোধয় আগেই ভেগেছে! শালা পরিকল্পনাটাই বরবাদ করে দিল! রীতিমত চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে হুপুর!
যাই হোক শেষ চেস্টা করতে দোষ কি? মগডালে বসেই হাতে থাকা য়্যাতলা বড় তাড়াবাজ্জিটা জ্বালিয়েই ছুড়ে মারল নাফিসের মাথা বরাবর!

হঠাত আগুণের ফুলকি দেখে যেই না উঠে দেবে ভো দৌড়! ও-মা--গো--বলেই ধপাস করে পরে গেল!


এক মিনিট দুই মিনিট তিন মিনিট! কোন সাড়া শব্দ নেই! শালা কি আসলেই ঠিক ঠিকই ফিট খাইছে তাহলে? নাকি ভয় খাওয়ার ভেক ধরছে! মিনিট ৫ এক হয়ে গেল! এবার জোরো গলায় ডাক পারল হুপু--- মিনহা---জ! মিনহাজরে!!
কেন সারা শব্দ নাই! শালা কি তাইলে হুপুরে থুইয়াই পালাইছে?
গাছ থেকে নেমে ভয়ে কাঠ হয়ে যাবার দশা! কাছে এসেই দেখে শালা আগেই ফিট!
দৌড়াইয়া গেল মিনহইজ্যার কাছে ! ওরে খোদারে এইটা ফিট খাইল কেমনে?

কইলজা শুকাইয়া চৌচির হবার দশা! কামডা কি হইল? যে যতই সাহসী হুক না কেন! এ অবস্থায় কি করা উচিত তার বিষদ ভাবনায় মাথার প্রসেসর হ্যাং হয়ে যাবার আগেই একটাই চিন্তা যে করেই হোক দুইটারে লোকালয়ে নিয়ে যেতে হবে! কিছুক্ষন ডাকাডাকি চোখে পানি ছিটানোতেও কাজ না হওয়ায়! ছুটে গেল অনেকটা দুরে স্কুলের নাইটগার্ডের ষরনাপন্ন হতে!
অনেক রিকোয়েস্ট করে নাইটগার্ডকে সংগে নিয়ে দুজনে মিলে তুলে আনা হল দজনকেই! কিছুক্ষন পরেই মিনহাজের হুশ ফিরে এলেও নাফিসের হুশ ফিরে না ঘন্টা তিনেও!
তাড়াতাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হল ইস্টেশানের কাছের এক ডিসপেন্সারীতে!
খবর দেয়া হল ওর মা বাবাকে!

ঘটনা বানানো হল! বন্ধুরা সবাই মিলে ইস্টিশানে ঘুড়তে যেয়ে হঠাত করেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলা!
পরিনামে বাবার হাতের হাল্কা ধোলাই, পরিজনের সুশ্রাব্য বকুনি , লালবুড়ির সাথে আপাতকালীন সংযোগ বিচ্ছিন্নতা আর ফ্রি হিসেবে শিশূসুলভ কাজের লাইফটাইম পানিশমেন্ট (এক ভয়ংকরতম শিক্ষা!)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:১৯
৩৭টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

My Heart Will Go On || সেলিন ডিওন ও আমার যুগল কণ্ঠে খালি গলায় এই কালজয়ী গানটি

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৯ শে জুন, ২০২৪ রাত ৯:২৩

এর আগে আমার কণ্ঠে গাওয়া 'আমার মনপাখিটা যায় রে উড়ে যায়' এবং একটা হিন্দি ছায়াছবির গান 'চুরা লিয়া' পোস্ট করেছিলাম।



আজ একটা ইংলিশ গান শুনবেন, যেটি হলো কালজয়ী সিনেমা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব ভাই, ব্লগ ছেড়ে ছেড়ে না গিয়ে ব্লগকে ইউজ করুন নিজের লেখনীকে উন্নতি করতে এবং নিজেকে প্রচার করতে

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ১২:২৩



প্রিয় রাজীব ভাই,

অনেকেই আপনার মতো ব্লগ ছেড়ে চলে যান অন্য ব্লগারদের উপর অভিমান করে, কিংবা রেগে গিয়ে! আমার কাছে এটা একটা ছেলেমানুষী ধরণের কাজ। আপনি কেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধন্যবাদ সাউথ আফ্রিকা বাংলাদেশে বসবাসরত পাকিস্তানীদের উল্লাস করতে না দেয়ার জন্য।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ১২:৪৪


ধন্যবাদ সাউথ আফ্রিকা বাংলাদেশে বসবাসকারী ফাকিস্তানিদের ও ভারত বিদ্বেষী দের রাতের ঘুম হারাম করে দেয়ার জন্য। তারা বাজি টাজি নিয়ে বসে ছিল ভারত হারলে আনন্দ করবে। কিন্তু তাদের সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জনাব মডারেটর সমীপে: প্রসঙ্গ ব্লগার অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য'র অপমানমূলক মন্তব্যের প্রতিবাদ

লিখেছেন শেরজা তপন, ৩০ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:৫০


গত ২৫শে জুন ব্লগার সৈয়দ মশিউর রহমান-এর ''ভারতীয়রা গত ১০ মাসে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার তাহলে অবৈধ পথে কত?'' একটা পোস্টে অনিকেতের মন্তব্যের সুত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

যৎ সামান্য ডাম্ব (DUMB) কাহানী!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ৩০ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:১৭



আগেই বলে নেই, বিভ্রান্ত হবেন না। এটা কোন ভাষা শিক্ষার ক্লাশ না, এটা হলো তবলার টুকটাক।

ইংলিশ DUMB শব্দের ট্র্যাডিশনাল মানে হলো বোবা। তবে অধুনা ইংল্যান্ডে ''বেকুব'' কিংবা ''উজবুক'' বোঝাতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×