তো যেই কথা সেই কাজ! হয়ে গেল বাজী! নাফিস আজই খেলতে রাজী!
কথামত ও আজ রাত ১.৩০ টায়ই পুরানপাড়া গোরস্থানে যেয়ে একটা খোটা (একধরনের লাঠি) গেরে আসবে প্রমাণ হিসেবে!
কাল সকালে আমরা বন্ধুরা মিলে তার উপযুক্ততা যাচাই করব!
.
.
.রাত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে আমার ধুকপুকানি যেন বিপ বিপ করে বাড়তেই থাকল! ভুটকা নাফিস কি শ্যাষ পর্যন্ত যাবেই?
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/hopefull4ever_1282586349_5-Bhut_kingba_uchit_shikkha_5.jpeg)
রাত ১০টায় হুপুর অস্থিরতা আচ করতে পেরে ছোট বোন দিল এক জটিল বুদ্ধি! ওর কথামত বাসার কাজের ছেলেটা, হুপু, আর পরানের দোস্ত মিনহাজ মিলে করল কাউন্টার এটাক প্ল্যান! তিনজন মিলে আমাবস্যার এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে বেশ কয়টা ইটের টুকরা কয়েকটা মোমবাতি আর প্রয়োজনীয় কিছু উপকরন হাতে ঠিক রাত ১২.৫০ টায় পজিশন মত তিনজন তিন জায়গায় পজিশন নিল!
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/hopefull4ever_1282586358_6-Bhut_kingba_uchit_shikkha_6.jpeg)
হুপুর উপর পরেছে মূল দায়িত্বটা, একদম গহীন জঙ্গলে বসে প্রয়োজন মত ইটছুড়ে মারা আর বিকট শব্দ করা!
তিন জঙ্গলী যথারীতি দায়িত্ব পালনরত! কারও মুখে টু শব্দটা পর্যন্ত নাই, একদিকে আমাবস্যার ঘুটঘুটে অন্ধকার! পাশাপাশি একদম কাছ থেকে (গজ ১০ এক) হুতোম পেচাদের ভয়ংকর আর্তনাদ! নিজেরাই যেন অন্তরাত্মা কেপে ফিট খাবার দশা!
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/hopefull4ever_1282586342_4-Bhut_kingba_uchit_shikkha_4.jpeg)
রাত ক্রমেই বাড়ছে... ১.০০ টা, ১.১০ টা, ১.২০, টা ১.৩০ টা! হুপু ভাবছে অন্য কথা.. ভিতুর আন্ডা নাফিস্যা আসবে তো? আবার ভাবছে ও ভিতু হইতে পারে কিন্তু প্রচন্ড জেদী! ও আসবেই !
কিন্তু কিসের কি? রাত বাজে ১.৪০ টা, ও সম্ভবত আসবে না!
এখানে বসে মশার কামড়, একটু পরপর হুতুম পেচাদের ভয়ংকার রকম আর্তনাদ, আর শিয়ালের ছুটাছুটি মিলে যে হলুইন দশার সৃস্টি হইছে কোন দেড় কেজির কম কোন আদম সন্তান মিনিট পাচেক ও টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ!
গাছ তেকে নামতে যাবে এমন সময় চমকে উঠে পিছনের নড়ে উঠা পাদার শিরশির আওয়াজে! ভাল করে তাকিয়ে দেখে কেউ একজন আসছে দুর থেকে টর্চলাইট হাতে!
গেটের কাছাকাছি আসতেই মিনহাজ ঝরঝর করে ইটের গুড়াগুলি ছুড়ে দিল ছাদে টিনের ! মুহুর্তের মধ্যে ভো দৌড়!
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/hopefull4ever_1282586366_7-Bhut_kingba_uchit_shikkha_7.jpeg)
রাগে গা জ্বলছে হুপুর ! মিনহাজের ছোট্ট বোকামীতে সব প্লেন বরবাদ! গাছ থেকে নেমে আসবে এমন সময় দেখে আবারো গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে গোরস্থানের কাছাকাছি! বোধয় বুঝতে পেরছে! এটা সত্যিকারের ভুতের কান্ড না!
এবার সত্যি সত্যি বেশ বীরত্বের বেশে সোজা ঢুকে গেল গোরস্থানের গেট দিয়ে! মাঝবরাবর এসেই বসে পড়ল খোটা গারবে বলে! হুপু একের পর এক বিকট সাউন্ড আর ইটের টুকরা ছুড়ে মারছে নাফিস্যার আশেপাশে! কোন ডরভয় নেই যেন! ওকি তাহলে আমাদের পরিকল্পনাটা আগেই বুঝে গেছে? নাকি আসার পথে কাজের ছেলেটা ১০০ টাকার লোভে পরিকল্পনা ফাস করে দিল?
ওদিকে মিনহাজ বোধয় আগেই ভেগেছে! শালা পরিকল্পনাটাই বরবাদ করে দিল! রীতিমত চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে হুপুর!
যাই হোক শেষ চেস্টা করতে দোষ কি? মগডালে বসেই হাতে থাকা য়্যাতলা বড় তাড়াবাজ্জিটা জ্বালিয়েই ছুড়ে মারল নাফিসের মাথা বরাবর!
হঠাত আগুণের ফুলকি দেখে যেই না উঠে দেবে ভো দৌড়! ও-মা--গো--বলেই ধপাস করে পরে গেল!
![](https://s3.amazonaws.com/somewherein/assets/images/thumbs/hopefull4ever_1282587414_6-Bhut_kingba-uchit-shikkha_8.jpg)
এক মিনিট দুই মিনিট তিন মিনিট! কোন সাড়া শব্দ নেই! শালা কি আসলেই ঠিক ঠিকই ফিট খাইছে তাহলে? নাকি ভয় খাওয়ার ভেক ধরছে! মিনিট ৫ এক হয়ে গেল! এবার জোরো গলায় ডাক পারল হুপু--- মিনহা---জ! মিনহাজরে!!
কেন সারা শব্দ নাই! শালা কি তাইলে হুপুরে থুইয়াই পালাইছে?
গাছ থেকে নেমে ভয়ে কাঠ হয়ে যাবার দশা! কাছে এসেই দেখে শালা আগেই ফিট!
দৌড়াইয়া গেল মিনহইজ্যার কাছে ! ওরে খোদারে এইটা ফিট খাইল কেমনে?
কইলজা শুকাইয়া চৌচির হবার দশা! কামডা কি হইল? যে যতই সাহসী হুক না কেন! এ অবস্থায় কি করা উচিত তার বিষদ ভাবনায় মাথার প্রসেসর হ্যাং হয়ে যাবার আগেই একটাই চিন্তা যে করেই হোক দুইটারে লোকালয়ে নিয়ে যেতে হবে! কিছুক্ষন ডাকাডাকি চোখে পানি ছিটানোতেও কাজ না হওয়ায়! ছুটে গেল অনেকটা দুরে স্কুলের নাইটগার্ডের ষরনাপন্ন হতে!
অনেক রিকোয়েস্ট করে নাইটগার্ডকে সংগে নিয়ে দুজনে মিলে তুলে আনা হল দজনকেই! কিছুক্ষন পরেই মিনহাজের হুশ ফিরে এলেও নাফিসের হুশ ফিরে না ঘন্টা তিনেও!
তাড়াতাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হল ইস্টেশানের কাছের এক ডিসপেন্সারীতে!
খবর দেয়া হল ওর মা বাবাকে!
ঘটনা বানানো হল! বন্ধুরা সবাই মিলে ইস্টিশানে ঘুড়তে যেয়ে হঠাত করেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলা!
পরিনামে বাবার হাতের হাল্কা ধোলাই, পরিজনের সুশ্রাব্য বকুনি , লালবুড়ির সাথে আপাতকালীন সংযোগ বিচ্ছিন্নতা আর ফ্রি হিসেবে শিশূসুলভ কাজের লাইফটাইম পানিশমেন্ট (এক ভয়ংকরতম শিক্ষা!)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:১৯