বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে একটি মহাপরিকল্পনা হচ্ছে। পর্যটন শিল্পের অবকাঠামো উন্নয়ন, পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ববাসীর কাছে দর্শনীয় স্থানগুলো তুলে ধরা এ মহাপরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। এর আওতায় ২০ বছরে বাংলাদেশকে পর্যটকদের আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করা হবে। মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আগে বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এ খাতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয়টিও আলোচনায় আসছে। পর্যটন শিল্প বিকাশে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে সংশোধিত আকারে পর্যটন নীতিমালা-২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রণয়ন করা হয়েছে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন। পর্যটকদের নিরাপত্তা বাড়াতে এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতীয় হোটেল ও পর্যটন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট। পর্যটন খাতে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর সচিত্র বর্ণনা, যাতায়ত ও থাকার ব্যবস্থাসহ বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে প্রচারসামগ্রী প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। প্রকাশ করেছে নানারকম ভিডিওচিত্র ও ডকুমেন্টারি। এর বাইরে দেশ-বিদেশে অনুষ্ঠিত পর্যটন শিল্পের বিভিন্ন মেলা, সেমিনার ও ওয়ার্কশপে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। ৬৩টি দেশের পর্যটকদের জন্য ভিসা অন অ্যারাইভাল চালু করা হয়েছে। পর্যটন পরিবহনের জন্য অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের গন্তব্য বাড়ানো হয়েছে। পর্যটন মেলায় বিদেশি সংস্থাগুলোর জন্য রেয়াতি মূলে বিমানের টিকিট দেয়া হচ্ছে। গঠন করা হয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এসব ক্ষেত্রে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ পর্যটনসংক্রান্ত জাতিসংঘের সংগঠন বিশ্ব পর্যটন সংস্থার দক্ষিণ এশীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশে বেসরকারি খাতে অসংখ্য পিকনিক স্পট, থিম পার্ক, শিশু পার্ক, হলিডে সেন্টার, রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। গড়ে উঠেছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার, পিকনিক স্পট। ঢাকায় নির্মিত হয়েছে পাঁচ তারকা মানসম্পন্ন অনেক হোটেল। সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটন শিল্প বিকাশে নানামুখী তৎপরতা ও মহাপরিকল্পনা গ্রহনের ফলে একদিকে যেমন ভ্রমন পিপাসু জনগনের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি দেশের রাজস্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।