somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদ ভ্রমণ প্যাকেজ (বিনে পয়সায় সামু ব্লগারদের জন্য স্পেশাল ভ্রমণ প্যাকেজ B:-) B:-/ :-B )

১২ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৪:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ভয় পাবেন না, এটা কোন বিজ্ঞাপন নয়। সামু ব্লগের ব্লগারদের জন্য ঈদ উপহার। বাঙালী নাকি ঘরকুনো স্বভাবের, কথা পুরোপুরি সত্য না হলেও একেবারে মিথ্যা নয়। ছোটবেলা থেকে দেখেছি ঈদ-পার্বণ ছাড়া বেড়াতে যাওয়াটা দৈব ঘটে আমাদের জীবনে। তবে ইদানীং দৃশ্যপট পাল্টেছে, হালের ক্রেজ হচ্ছে ট্র্যাভেলিং যার মুখ্য অংশগ্রহণকারী হচ্ছে তরুন প্রজন্ম। কিন্তু সেই আগেকার ক্রেজ কিন্তু এখনো হারিয়ে যায় নাই, তার প্রমান প্রতি ঈদ, পূজা আর বড়দিনের ছুটির সময়গুলোতে ভ্রমণপ্রিয় মানুষের স্রোতের দিকে চোখ রাখলেই। এবারো ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল ফিতর, আর সেই ঈদের ছুটিতে অনেকেই হয়ত বেড়িয়ে পড়বেন ভ্রমণে। তাই আজকের আয়োজন এই ভ্রমণ প্যাকেজ, যেখানে আপনাকে একটা প্ল্যান দিয়ে দেয়া হবে, আয়োজন এবং খরচ নিজ দায়িত্বে সেরে নিবেন। এখানে যাতায়াতের পরিবহণের ফোন নাম্বার, থাকা খাওয়ার খরচ এবং স্থান এসবের কোন কথা রইল না, কেননা গুগল মামার দুয়ারে একটু হাঁকডাক করলেই সব পেয়ে যাবেন। আসুন শুরু করা যাক।

=============================================================================
প্যাকেজ ০১ (কক্সবাজার-টেকনাফ-সেন্টমার্টিন)
আমাদের দেশে এখনো ছুটি কাটানোর প্রিয় জায়গা কক্সবাজার, সাধারণ মানুষের কাছে, ট্র্যাভেলারদের কথা ভিন্ন। আর তাই আপনার ঈদের ভ্রমণ প্যাকেজটি হতে পারে কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিন। ঢাকা অথবা আপনার জেলা শহরে থেকে সরাসরি চলে যেতে পারেন টেকনাফ, বাস থেকে নেমে সকালের জাহাজে করে সেন্টমার্টিন। সেখানে ঐদিন রাত থেকে, পরের দিন সারাদিন এবং রাত কাটিয়ে তার পরের দিন দুপুরের জাহাজে ফিরুন টেকনাফ, সেখান থেকে কক্সবাজার হয়ে অথবা সরাসরি ঢাকা। কেউ চাইলে দ্বিতীয় দিন কক্সবাজার ফিরে তৃতীয়দিন ঘুরে দেখতে পারেন কক্সবাজার, তারপর রাতের গাড়িতে ঢাকা।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০২ (কক্সবাজার-টেকনাফ)
রাতের গাড়িতে রওনা দিয়ে সকালে পৌঁছবেন কক্সবাজার, হোটেলে চেক ইন করে রেস্ট নিয়ে দুপুরের দিকে সমুদ্র স্নান শেষে বিকেলে বালুকাবেলায় সূর্যাস্ত উপভোগ করুন। চাইলে রাতে কোন বিচসাইড ক্যাফেতে ডিনার সারতে পারেন। পরেরদিন সকালে চলে যায় টেকনাফ, টেকনাফ বীচ আপনার নিঃসন্দেহে ভালো লাগবে, একেবারেই অন্যরকম। তাছাড়া টেকনাফ যাওয়ার পথে নাফনদীর ভিউ অসাধারণ। সেখান থেকে ফেরার পথে ইনানি হয়ে ফিরতে পারেন। চাইলে ইনানিতে একরাত থেকে পরের দিন কক্সবাজার ফিরতে পারেন। ফিরতি পথে ইনানি সংরক্ষিত বনাঞ্চল, হিমছড়ি, দরিয়া নগর এগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। তৃতীয়দিনে বিকেলবেলাটা কাটাতে পারেন কেনাকাটা আর শহর ঘুরে। আবার দ্বিতীয়দিন যদি টেকনাফ হয়ে ইনানি, হিমছড়ি, দরিয়া নগর দেখে শহরে ফিরতে পারেন তবে তৃতীয়দিন চাইলে ডুলাহাজরা সাফারি পার্ক দেখে আসতে পারেন, যদিও তার চেয়ে অনেক ভাল গাজীপুর সাফারি পার্ক।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৩ (বান্দরবান-নীলাচল, মেঘলা, স্বর্ণমন্দির, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড়, নীলগিরি)
রাতের গাড়িতে রওনা হয়ে পরের দিন সকালবেলা পৌঁছে গেলেন বান্দরবান। হোটেলে চেক ইন করে একটু রেস্ট নিয়ে ঘুরে দেখুন মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র, স্বর্ণমন্দির আর বিকেলবেলা সাঙ্গু নদীতে নৌকাভ্রমণ অথবা নীলাচলে গিয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন। আবার যদি স্ট্যামিনায় কুলোয় তবে সকালে বাস থেকে নেমেই চাঁদের গাড়িতে করে রওনা হয়ে যেতে পারেন নীলগিরি উদ্দেশ্যে, পথে দেখে নিবেন শৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড়, পিক সিক্সটি নাইন। বিকেলের শুরুতে শহরে এসে মেঘলা, স্বর্ণমন্দির হয়ে নীলাচল দেখে রাতের গাড়িতে ঢাকার উদ্দেশ্যে। একদিনে বান্দরবান ট্যুর। তবে বেটার দুইদিনে, প্রথমদিনের কথাতো উপরে প্রথমেই বলেছি, পরেরদিন খুব ভোরে রওনা হয়ে যান নীলগিরির উদ্দেশ্যে আর বিকেলে ফিরে এসে নীলাচলে দ্বিতীয় দফা সূর্যাস্ত উপভোগ। যারা তিনদিনের ভ্রমণে যেতে চান তারা বাড়তি দিনটাতে ঘুরে আসতে পারেন রিজুক ঝর্ণা আর শক্তিতে কুলালে একটু হিসেব করে বগালেক ঘুরে আসতে পারেন। মনে রাখবেন এই প্যাকেজ প্রপোজাল সবকয়টা শৌখিন টুরিস্টদের জন্য।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৪ (খাগড়াছড়ি – আলুটিলা, রিসাং ঝর্ণা, অপু ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, সাজেক)
রাতের গাড়িতে খাগড়াছড়ি রওনা হয়ে সকালবেলা চাঁদের গাড়ী ভাড়া করে ঘুরে দেখুন আলুটিলা, রিসাং ঝর্ণা, অপু ঝর্ণা। যদি সাজেকে রাতে থাকার জন্য কটেজ বুক করতে পারেন তবে সেদিন বিকেলের শুরুতে রওনা হয়ে যান সাজেকের উদ্দেশ্যে, সন্ধ্যার আগে আগে পৌঁছে যাবেন সাজেক। রাত্রিযাপন, সকালে অপার্থিব মায়াময় পাহাড়ের গায়ে মেঘেদের হুটোপুটি দেখে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে বেড়ান রুইলুই পাড়া, কংলাক পাড়া আর সেনাবাহিনীর সাজেক ভ্যালী। দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা হয়ে যান খাগড়াছড়ির দিকে, পথে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখে নিবেন। আর যাদের সাজেকে রুম বুক করার সৌভাগ্য হবে না, তারা প্রথম দিন রাতের বেলা খাগড়াছড়ি শহরে হোটেলে রাত কাটিয়ে পরদিন ভোরে রওনা হয়ে যান সাজেকের উদ্দেশ্যে। যাওয়া বা আসার পথে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখে নিন।



=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৫ (খাগড়াছড়ি-সাজেক-মারিশ্যা-রাঙামাটি-ঝুলন্তব্রিজ-রাজবন বিহার-রাজবাড়ী)
রাতের গাড়িতে রওনা হয়ে খাগড়াছড়ি শহরে নেমে চাঁদের গাড়ী রিজার্ভ করুন সাজেক হয়ে মারিশ্যা যাওয়ার জন্য। এক্ষেত্রে রাতের বেলা মারিশ্যা থাকার জন্য রেস্ট হাউজ (দুটো আছে) বুকিং করে নিবেন আগে থেকে। সাজেকে সারাদিন বেড়িয়ে শেষ বিকেলে চলে আসুন মারিশ্যা। সাজেক যাওয়া-আসার পথে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখতে ভুলবেন না যেন। সন্ধ্যাবেলা কাসালং নদীতীরের মারিশ্যা জেটিঘাটে বসে অথবা ব্রিজের উপর দাঁড়িয়ে আড্ডা দিয়ে ফিরে আসুন রেস্টহাউজে। পরেরদিন লঞ্চে করে রওনা হয়ে যান রাঙামাটির উদ্দেশ্যে, পুরো যাত্রাপথে দেখুন কাপ্তাই লেকের অপরূপ রূপ। দুপুরের পরে রাঙামাটি পৌঁছে লাঞ্চ সেরে একটা সিএনজি ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখুন ঝুলন্ত ব্রিজ, রাজবন বিহার আর রাজবাড়ী। রাতের গাড়িতে ফিরে আসুন ঢাকা বা আপনার জেলা শহরে। যারা মারিশ্যায় রাত্রি যাপনের জন্য রেস্ট হাউজ বুক করতে পারবেন না, তাঁরা খাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপন করে খুব ভোরবেলা সিএনজি বা চাঁদের গাড়ী করে মারিশ্যা বা লংগদু চলে আসুন, সেখান থেকে লঞ্চ ধরুন।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৬ (রাঙামাটি-শুভলং-কাপ্তাই-পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র-নেভী লেক ভিউ পার্ক-কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান-জুমঘর রেস্তোরা/ফ্লোটিং প্যারাডাইস রেস্তোরা-শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক)
ঢাকা থেকে রাঙামাটি রাতের গাড়িতে রওনা দিয়ে ভোর বেলা পৌঁছে হোটেলে চেক ইন করে রেস্ট নিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন। তারপর রিজার্ভ বাজার ঘাট বা পর্যটন ঘাট হতে প্যাকেজে ইঞ্চিন নৌকা ভাড়া করে শুভলং, রাজবাড়ী, বৌদ্ধবিহার সহ কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখুন। রাত্রি রাঙামাটিতে যাপন করে পরেরদিন সকালবেলা কাপ্তাই চলে যান। আপনার সময়ের হিসেব অনুযায়ী শিরোনামের তালিকা থেকে জায়গাগুলো ঘুরে দেখুন। রাতের গাড়িতে ফিরতি পথ ধুরুন। আর হাতে সময় থাকলে কাপ্তাইয়ে রাত কাটিয়ে সবকয়টা জায়গাই ঘুরে দেখে পরেরদিন ফিরতি পথে যাত্রা করুন। এক্ষেত্রে আপনার ভ্রমণ তিনদিনের হয়ে গেল। আর যদি দুইদিনের ট্যুর হয় তবে রাঙামাটি হতে প্যাকেজে কয়েকটি স্পটসহ ভ্রমণ করে ঐ নৌকায় করেই একেবারে কাপ্তাই চলে আসুন প্রথম দিন শেষ বিকেলে, রাতে থাকুন কাপ্তাইয়ে। দ্বিতীয় দিন সকাল হতে ঘুরে দেখুন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কাপ্তাই লেকে নৌকাভ্রমণ, কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, নেভি লেকভিউ পিকনিক স্পট, জুমঘর রেস্তোরা, শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক (ক্যাবল কার সহ) ইত্যাদি। এরপর রাতের বাসে ফিরতি পথে যাত্রা করুন।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৭ (চট্টগ্রাম-কাট্টলি সৈকত-পতেঙ্গা-প্রজাপতি পার্ক-মিনি বাংলাদেশ-পারকি সৈকত-ফয়েজ লেক)
চট্টগ্রামে ভোরবেলা পৌঁছে একটা হোটেলে ব্যাগ এন্ড ব্যাগেজ রেখে ফ্রেশ হয়ে চলে যান শহরের উল্লেখযোগ্য কিছু জায়গা দেখতে, এরপর ফয়েজ লেক আর সন্ধ্যায় কাট্টলি অথবা পতেঙ্গা সৈকতে সময় কাটিয়ে হোটেলে ফিরুন। পরেরদিন সকালবেলা বহদ্দারহাট সংলগ্ন মিনি বাংলাদেশ দেখে আনোয়ারার বাসে করে পারকি সৈকতে চলে যান। ইচ্ছে হলে সকালবেলাই পারকির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বিকেলে ফিরতি পথে মিনি বাংলাদেশ দেখতে পারেন। কারণ, এই বহদ্দারহাট থেকেই আনোয়ারার বাস ছাড়ে আর বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের পাশেই মিনি বাংলাদেশ অবস্থিত যা স্বাধীনতা পার্ক নামে পরিচিত। এখানেই কিন্তু বিখ্যাত ঘুরন্ত রেস্টুরেন্ট (যদিও এখন অবস্থা তেমন ভালো না ব্যবস্থাপনার দিক থেকে)। সন্ধ্যা বেলা কাট্টলি অথবা পতেঙ্গা বীচের যেটা গতদিন যাওয়া হয় নাই সেখানে গিয়ে সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। অথবা চাইলে ভাটিয়ারী চলে যাওয়া যায়, সেখানটাও বিকেল হতে সন্ধ্যার সময় কাটানোর জন্য খুবই চমৎকার জায়গা। রাতের গাড়িতে ফেরার পথে যাত্রা করুন।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৮ (মিরেরসরাই-সীতাকুণ্ড-খৈয়াছড়া ঝর্ণা-ইকোপার্ক-সহস্রধারা ও সুপ্তধারা ঝর্ণা, চন্দ্রনাথ মন্দির ও সীতাকুণ্ড পাহাড়, মহামায়া লেক)
মধ্যরাতের গাড়িতে অথবা খুব ভোরবেলা রওনা হয়ে মিরেরসরাই এসে আগে একটা থাকার জায়গা ঠিক করে নিন। এরপর প্রথমদিন খৈয়াছড়া ঝর্ণা আর মহামায়া লেক ভ্রমণ করুন। পরের দিন ভোরবেলা রওনা দিন সীতাকুণ্ড পাহাড়ের চন্দ্রনাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। দুপুরের আগে আগে পাহাড়ের চূড়ার মন্দির দেখা শেষ করে নেমে আসুন ইকোপার্কের ভেতরে। এরপর এখানকার দুইঝর্ণা সহস্রধারা আর সুপ্তধারা দেখে ফিরে আসুন হোটেলে। ব্যাগ গুছিয়ে রওনা হয়ে যান ফিরতি পথে। যাদের হাতে সময় আছে তারা তিনদিনের ট্যুর করতে পারেন, সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন ট্যুর একটু রিল্যাক্স হবে তারই সাথে বাড়তি হিসেবে ফেনী জেলার মহুরি প্রজেক্টও দেখে আসেতে পারেন।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ০৯ (কুমিল্লা-টাউন হল এবং ধর্মসাগর দীঘি, ইটাখোলা মুড়া-রুপবান মুড়া-বার্ড-ময়নামতি বিহার-ওয়ার সিমেট্রি-পানাম নগর-লোক শিল্প জাদুঘর-বাংলার তাজমহল)
মধ্য রাতের গাড়িতে রওনা হয়ে খুব ভোরে কুমিল্লা শহরে পৌঁছে হোটেলে চেক ইন করে ফ্রেশ হয়ে নিন। এবার সকালবেলা শুরু করুন টাউন হল এবং তদসংলগ্ন বিখ্যাত ধর্মসাগর দীঘি দিয়ে। সেখান হতে চলে যান বার্ড এবং তদসংলগ্ন ইটাখোলা আর রুপবান মুড়া ভ্রমণে। সেখান থেকে ময়নামতি বিহার, চাইলে লালমাই পাহাড়ে ঢুঁ মারতে পারেন। শেষে ওয়ার সিমেট্রি দেখে রাতে হোটেলে ফিরুন। আরেকটা কথা, আসল মাতৃভাণ্ডারের রসমলাই খেতে কিন্তু ভুলবেন না, পাওয়া যায় কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে, ঠিকানা দিলাম না, একটু খুঁজে নিয়েন। পরের দিন সকালের নাস্তা সেরে রওনা দিন সোনারগাঁও এর দিকে, চলে যান পানাম নগর। সেখান থেকে হাঁটা পথে লোক শিল্প জাদুঘর দেখে বিকেল বেলা বাংলার তাজমহল দেখে নিয়ে ফিরতি পথ ধরুন।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ১০ (হবিগঞ্জ-সাতছরি-রেমা-কেলেঙ্গা-ফ্রুট ভ্যালী)
রাতের গাড়িতে রওনা হয়ে খুব ভোরে সাতছরি চলে যান, সেখানে ভ্রমণ শেষে কেলেঙ্গা পৌঁছে কটেজে রাত্রি যাপন করুন (আগে থেকে বুকিং করে যেতে হবে)। সকাল বেলা রেমা-কালেঙ্গা ট্রেইল ধরে ভ্রমণ শুরু করে সন্ধ্যের আগে আগে শেষ করুন। রাতের গাড়িতে ফিরতি পথে যাত্রা করুন। এর মাঝে সময় করতে পারলে প্রথমদিন দেখে আসতে পারেন ফ্রুটভ্যালী।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ১১ (মৌলভীবাজার-মাধবকুণ্ড-পরিকুণ্ড-শ্রীমঙ্গল চা বাগান-মাধবপুর লেক-লাউয়াছরা সংরক্ষিত বনাঞ্চল)
রাতের গাড়িতে রওনা হয়ে মৌলভীবাজার পৌঁছে সকালবেলা হোটেলে চেক ইন করুন। সেখান থেকে চলে যান মাধবকুণ্ড-পরিকুণ্ড সাথে পথে পড়বে চা বাগান। ঘুরে দেখতে পারেন মাধবকুণ্ড ইকো পার্ক। পরের দিন বেড়িয়ে পড়ুন মাধবপুর লেক হয়ে বিখ্যাত লাউয়াছরার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দর্শনে। আর যাদের শক্তিতে কুলোয় তারা চাইলে হামহাম ঝর্ণা দেখে আসতে পারেন, তবে আমি সাজেস্ট করবো না যেতে, কারণ ঈদের সৌখিন টুরিস্টদের জন্য সেটা না যাওয়াই ভালো, কষ্টের তুলনায় মজা পাবেন কম। অতঃপর দ্বিতীয় দিন রাতের গাড়িতে ফিরতি পথ। সময় বেশী থাকলে যোগ করতে পারেন তৃতীয় দিনে সিলেটের কোন স্পট।




=============================================================================

=============================================================================
প্যাকেজ ১২ (সিলেট-মাজার-রাতারগুল-লালাখাল-বিছানাকান্দি-পান্থুমাই-লক্ষনছড়া-জাফলং)
রাতের গাড়িতে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে সকাল বেলা হোটেলে চেক ইন করুন। এরপর মাজার জিয়ারত করতে পারেন, দুপুরের আগে/পরে রাতারগুল ঘুরে আসুন। দ্বিতীয় দিন সকালবেলা রওনা দিন বিছানাকান্দির উদ্দেশ্যে। নৌকা রিজার্ভ করে এক এক করে দেখে নিবেন বিছানাকান্দি, পান্থুমাই, লক্ষণছড়া। একই নৌকায় করে চলে আসুন জাফলং, সেখানে রাত্রি যাপন করুন। সকালবেলা ঘুরে দেখুন জাফ্লং এর আশেপাশের দ্রষ্টব্য সব টুরিস্ট স্পট। দুপুরের লাঞ্চ সারতে পারেন নদী পেড়িয়ে সংগ্রামপুঞ্জি রেস্তোরায়, অনেকদিন মনে থাকবে এই লাঞ্চের কথা। দুপুরের দিকে রওনা হন তামাবিল, জৈন্তা রিসোর্ট হয়ে লালাখাল। লালাখালে বিকেলবেলা নৌভ্রমণে কাটিয়ে সন্ধ্যার আগে আগে রওনা হয়ে যান সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে, তারপর রাতের গাড়িতে ফিরতি পথে।




=============================================================================

=============================================================================
আর এখন যেহেতু বর্ষা, তাই এগুলোর বাইরে চাইলে টাঙ্গুয়ার হাওড়, হাকালুকি হাওড়, চলনবিল সহ আরও অনেক জায়গা হতে ঘুরে আসতে পারেন। যেতে পারেন শেরপুর-জামালপুরের লাউচাপরা-গজনি-মধুটিলা, অথবা উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর-রংপুর-বগুরার ইতিহাস খ্যাত জায়গাগুলোয়। যেতে পারেন ময়মনসিংহস্থ গারো পাহাড়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মুক্তাগাছা রাজবাড়ি হয়ে বিরিশিরি অথবা চাইলে এই বর্ষায় কুয়াকাটা বা সুন্দরবন। এইতো, প্ল্যানিং প্যাকেজ বাতলে দিলাম, এখন সব আয়োজন, খরচ এবং ভ্রমণ আপনার দায়িত্ব। তবে যেখানেই ভ্রমণে বের হবেন, এই লেখাটি ভ্রমণের অষ্টকাহন (একটি ভ্রমণ পরিকল্পনা সহায়িকা'র মেগা পোস্ট - Must Read, Otherwise Something You Missed) অবশ্যই পড়ে নিবেন, অতি অবশ্যই। তো আর কি? ঈদ এবং ঈদের ভ্রমণ আনন্দময় হোক, শুভকামনা।

[ছবিঃ বোকা মানুষ বলতে চায়]
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০১৫ ভোর ৬:০২
৩৩টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

'অপ্রেমের মৃত্যু' - ব্লগার আলমগীর সরকার লিটনের এক দারুণ সৃষ্টি

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৬ ই মে, ২০২৫ রাত ৮:৫৮



চর্ম চোখ আমাদের অনেক কিছু দেখায়। আমরা তা বুঝার চেষ্টা করি। কোন কোনটাকে সত্যি বলে মেনে নেই। কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করেছি, আমরা যাকে সত্য বলে মেনে নেই,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামীর তরুণ রাষ্ট্র নায়কদের জন্য ড. ইউনূস হতে পারেন অনুকরণীয় আদর্শ !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৪০


আগামীর বাংলাদেশে আমরা কি করাপ্টেড অথবা বাবার উত্তরাধিকারী কাউকে রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে ক্ষমতায় দেখতে চাই ? অবশ্যই না ! বাংলাদেশের তরুণেরা চায় ভবিষ্যতের রাষ্ট্রনায়ক হবে ইয়ং এবং ডায়নামিক চরিত্রের অধিকারী। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Natural Justice.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:০৯

Natural Justice.....

Natural Justice বা প্রকৃতির বিচার কিম্বা রিভেঞ্জ অব ন্যাচার বলে যে একটা কথা আছে, সেই ব্যাপারটা গভীরভাবে অনুধাবন করার একটা বাস্তব উদাহরণ আশা করি সবার সামনেই এখন ভিজিবল।

আমরা অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসের মতো বোকা হওয়া শিখতে হবে! | দৈনিক কালবেলা উপসম্পাদকীয়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ০৬ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:৫৭



আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারা জীবন উল্টো কাজ করে সাফল্য পেয়েছেন। কনভেনশনাল ব্যাংকগুলো ধনী ব্যক্তিদের ঋণ দেয়, অথচ তার গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্রদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করে। বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মধ্যরাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাল ভারত

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৭ ই মে, ২০২৫ রাত ৩:৫২


পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, কোটলি ও মুজাফফরাবাদের পাহাড়ি অঞ্চলের কাছে একাধিক জায়গায় হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলায় এক শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী এক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×