স্বপ্নের সৈকতে এঁকে যাই পদচিহ্ন (দ্বিতীয় কিস্তি)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
স্বপ্নের সৈকতে এঁকে যাই পদচিহ্ন (প্রথম কিস্তি)
যে কোন ট্যুরে গেলে যে মধুর সমস্যায় আমি পড়ি তা হল সারাদিনের ধকলের পর রাতে আড্ডায় মেতে ওঠা এবং সকাল বেলা খুব ভোরে উঠার কষ্ট মোকাবেলা করা। আমি আসলে সব চাই’য়ের দলের সদস্য হয়ে যাই। রাতভর আড্ডা দিতে হবে, খুব ভোরে উঠে বেড়িয়ে পড়তে হবে এবং এই দুইয়ের মাঝে আট থেকে দশ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। যদি কোন উপায়ে এই তিনের সমন্বয় করা সম্ভব হত!!! এইবার ভ্রমণ বাংলাদেশের ইভেন্ট “স্বপ্নের সৈকতে এঁকে যাই পদচিহ্ন – ২০১৪” এর প্রথম দিনের হাঁটা শেষে বেশীরভাগ ঘুমের কোলে আশ্রয় নিলেও আমরা কিছু ভ্রমণসাথী অনেক রাত পর্যন্ত দক্ষিণ শিলখালি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের খোলা ছাঁদে তাবু টাঙ্গিয়ে গান আর আড্ডায় মেতে ছিলাম। ফলে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে শুরু করি পরের দিনের যাত্রা।
মাঝের কথা (দ্বিতীয় দিন)ঃ দ্বিতীয় দিনের যাত্রা ছিল দক্ষিণ শিলখালি ইউনিয়ন থেকে ইনানি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কি.মি. পথ। সকাল সাতটা নাগাদ কিছু শুকনো খাবার আর দুপুরের লাঞ্চের জন্য ফ্রাইড রাইস নিয়ে রওনা দেই সবাই। টেকনাফ থেকে কক্সবাজার সৈকত ধরে হাঁটার মধ্যে এই দ্বিতীয় দিনের সৈকত আর সমুদ্রের রূপ অসাধারণ, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। সাগরের নীল জল দেখে আপনার মনে হবে নীল জল দেখতে এতো কষ্ট করে সেন্টমার্টিন বা দেশের বাইরে যাওয়ার কি দরকার? বীচ জুড়ে প্রায় দশ কিলোমিটার এলাকায় লাল কাঁকড়ার চাদর দেখে মনে হবে এ কোথায় এলাম?
ইভেন্টের আগেই জানা ছিল দ্বিতীয় দিনের এই রুপময় সৈকতের কথা, আর তাই এদিন মিস করেনি কেউ এই রুপসুধা। সুবিশাল সৈকত, সর্পিলাকারে বাঁক নিয়ে নিয়ে ভাঁজে ভাঁজে এগিয়ে গেছে যেন সেই সুদুরপানে। মাঝে মাঝে পেড়িয়ে যাচ্ছিলাম জেলে পল্লীগুলো, সেখানে সৈকতে এক এক করে ভিড়ছিল জেলেদের মাছ ধরার নৌকাগুলো, সারারাত ধরে মাছ ধরে ফিরে এসেছে সেগুলো। সাগরের নীলজল, মাথার উপরে নীলাকাশ, সাথে ঝাউবন ঘেরা সবুজের দেয়াল সাগরের বিপরীতে... তার উপর মুগ্ধতায় ঘায়েল করা লাখো লাল কাঁকড়ার দল। পুরাই মাথা নষ্ট!!!
এই পথের জাদুময় রূপের কারণেই কিনা জানিনা, দ্বিতীয় দিন বেশীরভাগ সদস্যই পুরো পথ হেঁটে পাড়ি দিয়েছে। রাত সাতটা নাগাদ শেষ দল ইনানি এসে পৌঁছে। আমরা সন্ধ্যা নাগাদ ইনানি পৌঁছই, ইয়ে... আমি কিন্তু পুরো পথ হাঁটি নাই শেষ বিকেলে সূর্য ডোবার আগে একদল বাউন্ডুলের দল নেমে পড়ি ইনানি বীচের জলে। শীতের সন্ধ্যায় সমুদ্রের জলে খুনসুটি শেষে সন্ধ্যা হতে শুরু হয় বারবিকিউ এর আয়োজন। ভ্রমণ বাংলাদেশের ইভেন্টে বারবিকিউ থাকবে না এটা কি হতে পারে?
রাত দশটা নাগাদ বারবিকিউ শেষ হলে শুরু হল ভক্ষণ পর্ব, শেষ হতে হতে রাত এগারোটা। এরপর আমরা দশ-বারো জনের দল চলে গেলাম বীচে। আমাদের এদিনের ডেরা ছিল ইনানিস্থ সৈকত সংলগ্ন মোটেল। মোটেল থেকে সাগরের ঢেউ দেখা গেলেও আমরা চলে গেলাম একেবারে সাগর পাড়ে। রাতের খোলা আকাশের নীচে, সাগরের ফেনিল ঢেউ আমাদের পা চুমু দিয়ে যখন বার বার ফিরে যাচ্ছিল তখন কোটি তারার মেলা আকাশ জুড়ে, লুঘু সপ্তর্ষি মাথার উপর।
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ভিসা বন্ধ করায় ভারতকে ধন্যবাদ।
ভারত ইদানীং ভিসা দিচ্ছেনা; তারা ভিসা না দিয়ে আমাদেরকে শিক্ষা দিতে চায়! তাদের করদ রাজ্য হাতছাড় হওয়া খুবই নাখোশ, এতোই নাখোশ যে মোদী মিডিয়া দিনরাত বয়ান দিচ্ছে এই দেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতের চিকিৎসা বয়কট এবং
ভারতের এক হাসপাতাল ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কোন রুগিকে তারা চিকিৎসা দিবে না। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যে হাসপাতাল থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছিল দেশ
চামচা পুঁজিবাদ থেকে দেশ চোরতন্ত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা মিলে চোরতন্ত্র করেছে।
সোমবার... ...বাকিটুকু পড়ুন
শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত পাঠাবে তবে............
শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে বিচারের জন্য ভারতের কাছে ফেরত চাইতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে প্রতিহিংসামূলক বিচারপদ্ধতি বাদ দিতে হবে। বিচারে শেখ হাসিনা যাতে ন্যায় বিচার পান বাংলাদেশকে আগে তা নিশ্চয়তা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারত সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে
শেখ হাসিনা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার করছেন। ভারত চাচ্ছে বাংলাদেশে একটি অশান্তি হোক। কারণ ভারত একটি মসনদ হারিয়েছে। সোনার ডিম পাড়া হাঁস হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রতিদিন একটি সোনার ডিম পেড়ে নরেন্দ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন