ক্যাচালের জন্য সামু ব্লগের কোন বিকল্প নেই। রাজনীতি, সিন্ডিকেট, লুলামি, মাল্টিবাজি নিয়ে বেশ একটা ভালো ক্যাচালময় বছর গেল ২০১২। যদিও মডুদের অন্যায় হস্তক্ষেপের কারণে অনেক পোস্টই গায়েব হয়ে গিয়েছে, অনেকে আবার পরে পোস্ট ড্রাফটে পাঠিয়ে দিয়েছে। তো যেগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো হতে বাছাইকরা শীর্ষ ক্যাচালপোস্টগুলোকে নিয়েই আমার এই বিএফসি সঙ্কলন। এখানে শুধুই গালাগালির চেয়ে ক্যাচাল করতে পারদর্শিতার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে।
২০১১ এর সেরা ব্লগার নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা থিতিয়ে আসা মাত্রই পুরানো সিন্ডিকেট ক্যাচাল আবারও শুরু হয়ে গেল। একদিকে দলবলে ভারী জিসান শাহ/মামা গ্রুপ অন্যদিকে ক্যাচালে পারঙ্গম সিপিজি। বছরের প্রথম আক্রমণটা সিপিজি থেকেই আসে, রুদ্রপ্রতাপ পোস্ট দিয়ে জানায়, ব্লগার শিপু ভাই ফোনে সবাককে হুমকি দিয়ে বলেছে, "এইডা মাইনষের পয়দা না। কুত্তা ুইদা এইডা বাইর হৈছে। এ যা করছে, তাতে এরে জানে বাঁচায়া রাখতে পারি না। একেবারে খুন কইরা ফালাইতে হৈবো। জানে মাইরা ফেলতে হৈবো।"
মৃত্যু বিষয়ক ভাবনা চিন্তাঃ মুক্তচিন্তা এবং সিন্ডিকেট ব্লগিং যখন মুখোমুখি
দুই পক্ষের পাল্টা পালটি কমেন্টে প্রায় চারশ কমেন্ট পড়ে সেই পোষ্টে।
এর কিছুদিন পরেই মঞ্চে আসে জাতির নানা। শিপু ভাই এক পোস্ট দিয়ে বলেছিল জাতির নানা নিকটি জাতির জনকের অবমাননা করেছে, তাই ব্যান করা হোক। এতে ক্ষুব্ধ নানা জিশান গ্রুপের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে। লুল, চয়নের গার্লফ্রেন্ড ইত্যাদি একের পর এক আক্রমণাত্মক পোস্ট আসে। সিপিজির বদলে নানাই হয়ে গেল জিশান গ্রুপের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। সেই সব পোষ্টের বেশীর ভাগই নেই, অনেকের কাছে স্ক্রিন শট আছে হয়তো কিন্তু শুধু এই পোস্টটিই আছে। প্রায় তিন শতাধিক কমেন্ট বিশিষ্ট।
সাধু সাবধান !!!!!!!!!!!!!! (লুল বিষয়ক পোস্ট)
মাঝে একটু রুচি বদল করে ব্লগের ক্যাচালবাজেরা ভিন্ন ইস্যুতে ক্যাচাল করে। এইবার সবাক নিয়ন্ত্রিত সিপিজির মুখোমুখি ব্লগার প্রজন্ম৮৬। নাস্তিক হোরাস নিকের পোষ্টে প্রজন্ম ভালোই গালি খায়। এইটার রিভেঞ্জ নিতে সাবেক শিবির কর্মী সবাকের বিরুদ্ধে এই পোস্টটি দেওয়া হয়। দেশী পোলা, মশিউর মামা আর সিপিজির প্রায় সব নিকের উপস্থিতিতে বেশ স্মরণীয় একটি ক্যাচাল হয়েছিল।
একবার যে রাজাকার, চিরকালই সে রাজাকার, একবার যে শিবির চিরকালই সে শিবির!!!
মুবাহিলা: ইসলামের সমালোচনাকারীদের ধ্বংস করার একটি সহি ইসলামী তরিকা (হোরাসের পোস্ট)
এপ্রিল মাসে আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড় হয়। গত বছরেও হয়েছিল কিন্তু এটা শুধু সামুর ব্লগাররাই টের পেয়েছিল। প্রসঙ্গ আবারও সেই সিন্ডিকেট। জিশান গ্রুপ ততদিনে কোনঠাসা, তাদের এক সিনেমাখোর ব্লগার পুশকিন সিপিজির নিকের কাছে ধাতানী খেয়ে একটি সুশীল পোস্ট দেয়। সেখানেও বেশ ভালো ক্যাচাল চলে এবং ক্যাচাল নিক ট্রোজানহর্সকে হাসান মাহবুবের নিক বলে পুশকিন সবার সামনে প্রকাশ করে দেয়। পোষ্টের বেশ কিছু কমেন্ট পোস্টদাতাই মুছে ফেলে, আর কিছু মডু। মডুর মুছে ফেলা গুলো এখনো মোবাইল ভার্সনে পাবেন।
এত ব্লগ ব্লগ করে কি হবে ? ব্লগ আপনাকে খাওয়ায় না পরায় ?
মোবাইল ভার্সন
এইটা ছিল শুরু মাত্র। এর এক সপ্তাহ পরেই আরজুপনি একই শিরোনামে একটি ফাঁদ পোস্ট দেয়।
এতো ব্লগ ব্লগ করে কি হবে??!! ব্লগ আপনাকে খাওয়ায় না পড়ায়??!!
সেখানে যথারীতি দুই চারজন ব্লগার কটুক্তি করে, আর সাথে সাথেই দুর্যোধন প্রসব করে তার সেই বিখ্যাত 'প্রগতিশীল কি বোর্ডের আড়ালে মোল্লাতন্ত্র' পোস্ট। আর তাতেই জিশান শাহ একেবারে কাঁত হয়ে পড়ল। দুই দিন পরেই সুলেমানি ব্যান খায় লুল সম্রাট জিশান শাহ ইকরাম।
প্রগতিশীল কি বোর্ডের আড়ালে মোল্লাতন্
ব্লগার মাস্টারের সাথেও শিপু ভাইয়ের ব্লগে ফেসবুকে প্রচুর গালাগালি হয় ওই সময় কিন্তু সেই পোস্টগুলো আর নেই।
দুর্যোধনের পোষ্টের পর ব্লগ অনেক নির্ঝঞ্ঝাট হয়ে গেলেও জুলাই মাসে হঠাৎ বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতই এক পোষ্টে সবাইকে চমকে দেয় সোহেল খান রিমন। জানা গেল এতোদিন ধরে ভালো ইমেজে ব্লগিং করে আসা জনপ্রিয় ব্লগার মাইনাচ আর কেউ নয়, পুরান পাপী বৃষ্টি ভেজা সকাল। রিমন এবং ধূসর ধ্রুব'র দেওয়া তথ্য দিয়ে প্রমাণিত হল মাইনাচ, খাইরুন, বৃষ্টি ভেজা সকাল, পাগলাঘোড়াসিটিজি সব একই লোক। পর দিন মাইনাচ নিক হতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে একটি পোস্ট আসলেও ততক্ষণে ঘটনা সবার জানা হয়ে গেছে, কেউ আর তাতে কান দেয়নি।
একজন সুশীল ব্লগারের মাল্টিনিকে ভন্ডামি উন্মোচন
এরপর গালাগালি, ছোট খাট ক্যাচাল ব্লগে লেগে থাকলেও বড় একটা ঘটনা ঘটে অখ্যাত ব্লগার দেশের কথা'র সঙ্কলন পোষ্টে চয়নের মিথ্যা বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে। এই পোস্টে উল্টা পাল্টা বলা এবং বিভিন্ন ব্লগারকে মাল্টি দিয়ে আক্রমণের কারণে চয়নের আসল নিকটি ব্যান খায়। মোটামুটি গালিগালাজ মুক্ত ক্যাচালে চয়নকে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নিতে হয়, যদিও মাল্টি দিয়ে শেষে হারানো সম্মান উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
ইশতিয়াক আহমেদ চয়ন- অবশেষে আপনি মহান সত্যবাদী এবং আমিই মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হলাম
ব্লগের সর্বশেষ বড় ক্যাচালটি লাগে, দাঁড়িপাল্লার পোস্টকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে সামুকে ঘিরে যেই ষড়যন্ত্র চলে তার বিরুদ্ধে দেওয়া দুর্যোধনের পোস্টটিতে। কিন্তু মেধাবী ব্লগার দুর্যোধন এই পোস্টটিতে এসে লেজে গোবরে করে ফেলে। নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরে নব্য 'রেসিডেন্ট ভাঁড়ে'র ভূমিকায় নামে সে। সিপিজির কিছু নিক প্রথমে সাপোর্ট দিলেও অবস্থা বুঝে ভাগে। ব্লগের নাস্তিকদের সাথে দাঁড়িপাল্লার সম্পর্ক প্রকাশ পেয়ে গেলে আরও বেকায়দায় পড়ে যায় দুর্যোধন। ঘুড্ডির পাইলটের নিক ব্যান খায়, চেয়ারম্যান পোস্ট দিয়ে জেনারেল হয়। ব্লগার মাস্টারেরও জ্ঞানী, প্রগতিশীল ব্লগার সাজার চেষ্টা পরিলক্ষিত হয়। অবশেষে সাধারণ ব্লগারদের তীব্র প্রতিবাদের কারণে দুর্যোধনের পোস্টটি স্টিকি হতে সরিয়ে 'নোটিশ বোর্ড' স্বয়ং ক্ষমা চেয়ে পোস্ট দিলে ব্লগাররা শান্ত হয়। পুরাতন রেসিডেন্ট ভাঁড়ও এসময় এসে একটা উস্কানিমূলক পোস্ট দিলেও ব্লগারদের গদাম খায়।
সামহোয়্যার ইন ব্লগ বন্ধের দাবী: কার স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার আমরা? সামহোয়্যার ইন ব্লগ বন্ধের দাবী: কার স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার আমরা?
সামহোয়ারইনব্লগ বন্ধের জন্য কতিপয় উজবুকের আস্ফালন দেখে মনে হয় ইরানে বাস করছি( কৌশিকের পোস্ট)
গত বছরের ক্যাচাল সঙ্কলনের এখানেই সমাপ্তি। পোস্ট না থাকায় আরও কয়েকটি বিখ্যাত ক্যাচাল পোস্টের লিঙ্ক দেওয়া সম্ভব হল না। আমাদের পরবর্তী আকর্ষণ থাকবে সামুতে ক্যাচালের কারণে যেসব বিখ্যাত নিকগুলো ব্যান খেয়েছে তার একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। চোখ রাখুন বাচাল মানবের পোষ্টে
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৭