শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার এর একটি লেখা পড়েছিলাম। বরাবরই তাঁর লেখা আমার ভালো লাগে। কিন্তু মাঝে মাঝে আমি তাঁর কিছু কথার সাথে একমত হতে পারি না।
তিনি তাঁর সে লেখায় বেশ যুক্তিপূর্ণ একটি ব্যাপার তুলে ধরেছেন। সেটা হচ্ছে খালেদা জিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন তা নিয়ে। আসলেই তাই, খালেদা জিয়ার মত এতো বড় মাপের নেত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি শুধু ভুল ই করেন নি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গায়ে কিছুটা হলেও কালি মেখেছেন যা কোন সচেতন বাংলাদেশীর কাছে কাম্য নয়। আমি তীব্র নিন্দা জানাই খালেদা জিয়ার এ কথার !
কথা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেছেন খালেদা জিয়া ৭১ এ যুদ্ধের সময় মিলিটারি ক্যাম্পে ছিলেন তাই তিনি দেশদ্রোহী। দুঃখিত তাঁর এ কথার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আমি তাঁর কাছে জানতে চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন? তাহলে এখন কি স্যার দেশদ্রোহীর সংজ্ঞা কি পাল্টে দেবেন???
সব দুধ ভাত ! শ্রদ্ধেয় জাফর ইকাবাল স্যার যুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন? কেন আপনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৮ বছরের তরুণ হয়েও বাংলাদেশে অবস্থান না করে অ্যামেরিকা তে পিএইচডি র জন্য গিয়েছিলেন? আবার অন্যকে দেশদ্রোহী বলে ব্যাঙ্গ করেন। আপনি কি সে সময় টা দেশে থাকলে খুব বড় অন্যায় হয়ে যেত? প্রশ্ন রেখে দিলাম আপনার কাছে !
তিনি সেখানে আরেকটি ব্যাপার টেনে এনেছেন। মুক্তিযুদ্ধের উপর তরুণ আরিফ একটি বই লিখেছেন। জাফর ইকবাল স্যার আরিফ এর বই এর ভূমিকা নাকি লিখে দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাপার টিতে আমার কিছু খটকা লাগে। আরিফের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে, ''মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর এতো সুন্দর একটা বই লিখলা সেটা যে কারো কাছেই অনেক ভালো লাগার ব্যাপার। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থের ভূমিকা কেন একজন নন মুক্তিযোদ্ধা কে লেখাতে গেলা? বাংলাদেশে কি মুক্তিযোদ্ধার অভাব পড়েছিলো?"
ভাই আরিফ, আমি স্যালুট জানাই তোমাকে, আমি স্যালুট জানাই তোমার চিন্তা ভাবনা কে। কিন্তু আমি তোমার ল্যাংগুয়েজ কে রেসপেক্ট করতে পারছি না। সে জন্য আমি দুঃখিত! তুমি ভালো লেখক হতে পারো কিন্তু মনে রেখ ভালো লেখক হবার আগে একজন ভালো মানুষ হতে হয়। ''তুমি একটি প্রসঙ্গে বিএনপির গায়েশশর রায় কে গুণে গুণে ১০ টি থাপ্পর দিবে বলেছিলে, আমি তোমার সে কথার সাথে একমত হতে পারছি না ভাই।" একজন লেখকের ল্যাংগুয়েজ হবে লেখকের মত কোন সন্ত্রাসীর মত নয়।
সবশেষে কথা একটাই। আমাদের গুরুরা যখন নিউট্রালিজম এর কথা বলে পারশিয়ারিজম ঢুকিয়ে দেয় তখন আমরা চিন্তায় থাকি আমরা শিখবো কার কাছ থেকে? আমরা বুঝবো কার কাছ থেকে? আমরা জানবো কার কাছ থেকে?
আমি বিএনপি বুঝি না, আমি আওয়ামীলীগ বুঝি না, আমি রাজতন্ত্র বুঝি না, আমি স্বৈরতন্ত্র বুঝি না। আমি ডেমোক্রেসি বুঝি, আমি মহান মুক্তিযুদ্ধ বুঝি, আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুঝি, আর দিন শেষে আমি বাংলাদেশ বুঝি।
আমার কথা সবার ভালো লাগতে হবে ব্যাপারটি জরুরী নয়। ভাল-খারাপ দুটোই অনুভূতির অংশ। আমি চাই দেশ কে নিয়ে আপনি ভাবেন, আমি চাই দেশ কে নিয়ে আপনি আপনার অনুভূতির জানান দেন !!!
---গোলাম রাব্বানী