সংসদীয় কমিটির তলবের পর এখন আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছি, এইচটি ইমামকে রক্ষার জন্য সরকারি দলের নেতারা, এমনকি আজ খোদ আইন প্রতিমন্ত্রীও নাকিকান্না কাঁদছেন। শুরু হয়েছে নানা ধানাইপানাই। বিষয় অতি সামান্য- সংসদীয় কমিটির কাছে যাওয়া কিংবা না-যাওয়া। অথচ অবস্থা এখন এমন যে, সংসদে গেলে যেন এইচটি ইমামের জাত যায়! তা নিয়ে নানান হাংকিপাংকি। তাকে নাকি আগে সংসদের কার্যপরিধি হেন তেন খতিয়ে দেখতে হবে। তারপর যাওয়া-না যাওয়ার সিদ্ধান্ত। আসলে এখন আর আমাদেরও বুঝতে বাকি নেই, যে সংসদ আর সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে সারাবছর নাকিকান্না চলে, বক্তব্যে-বিবৃতিতে যে সংসদকে প্রায় সৃষ্টিকর্তার সমান আসন দিয়ে মুখে ফেনা তোলা হয়, সেই সংসদ আসলে এই বাংলাদেশে একজন এইচটি ইমামের চেয়ে ছোট, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা-ঈশ্বরদের চেয়ে তুচ্ছ। যার পাঁচ মিনিটের দর্শন পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে লাখ লাখ ডলার দিয়ে লবিয়িস্ট নিয়োগ করতে হয়েছে অতীতে, যুক্তরাষ্ট্রের সেই রাষ্ট্রপ্রধান বিল ক্লিনটনকে আমরা দেখেছি, ডাকতেও হয়নি যেন, ইশারা পেয়েই বাপ বাপ করে হাজির হয়েছেন কংগ্রেসের সামনে, চৌদ্দবার। এইচটি ইমামের মাথার ওপর খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছায়া আছে। তার কাজকর্মে সায়ও আছে নিশ্চয়ই। সুতরাং তিনি বিল ক্লিনটনের চেয়ে বড়ো, অতএব তিনি একজন বাংলাদেশী ঈশ্বর। বরং সংসদই তাকে ডাকাডাকি করে অপমান করেছে!
হায় প্রধানমন্ত্রী! রমজানের শেষদিকে যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন আমাদের মহারাণী। সফরে তার সঙ্গে থাকছেন বোন শেখ রেহানা। কিন্তু কিসের বলে? শেখ রেহানাটা কে? তিনি কি সরকারের কেউ? তিনি কি মন্ত্রী? কিভাবে তিনি সফরে থাকেন?
কৃষ্ণগহবরের কসম, মনটা খুব ছোট হয়ে থাকে রাজতান্ত্রিক এই বাংলাদেশে। হয়তো বয়সের কারণেই। হয়তো মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতাই নেই আমার কিংবা আমাদের!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৫০