ন্যাশনাল ইয়থ সার্ভিস
সরকারি (ক্যাডার, নন ক্যাডার যেখানে স্নাতক নুন্যতম যোগ্যতা) চাকুরিতে আগ্রহীদের জন্য ন্যাশনাল ইয়থ সার্ভিস প্রবর্তিত হবে।
২ বছর ন্যাশনাল ইয়থ সার্ভিস এর স্কোপ এরকম হতে পারে-
১। প্রথম ২ মাস সেনা নৌ বিমান বাহিনী, ডিক্টেটিভ ব্রাঞ্চ সমূহ, পুলিশ, বিজিবি, আনসার সমন্বয়ে সম্মিলিত আন্ত বাহিনী নিয়মানুবর্তিতা পেশাদারিত্ব এবং শৃঙ্খলা ট্রেনিং।
২। সরকারী আইন এবং ইন্টার ডিপার্টমেন্টাল ফাংশনালিটির উপর ব্রিফিং - ২ মাস (ইন্টার্ন শীপ-পরিকল্পনা, সংসদ,বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন ইমপ্লিম্নেটেশন প্রজেক্ট, একাডেমিক ফিল্ড রিলেটেড মন্ত্রণালয় এর আইন এবং ওয়ার্ক প্রসেস ফ্লো সম্পর্কিত জ্ঞান।
৩। কালচারাল এক্সেপ্টিবিলিটির জন্য নিজ জেলার বাইরে ভিন্ন জেলায় ৮ মাসের শিক্ষা এটাচমেন্ট, প্রাথমিক-২ মাস, মাধ্যমিক-৩ মাস এবং উচ্চ মাধ্যমিক ৩ মাস।
৪। নিজ একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এর রোলে ১ বছরের ন্যাশনাল জব সার্ভিস।
এই পুরো সময় (২ বছর ) সরকার একজন গ্রাডুয়েট কে বেতন দিবেন, একটি মানসম্পন্ন কিন্তু ফ্রেশারস স্কেলে।
এই পুরো প্রক্রিয়ার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা মানের সমন্বয় করতে হবে, মানে গ্রাডুয়েশন ডিগ্রির কি ধরনের শিক্ষা মান থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানের গ্রাডুয়েট কে সরকার ঐ প্রতিষ্ঠানের গ্রাডুয়েট দের ইন্টার্ন হিসেবে এব্জরব করতে বাধ্য থাকিবে। এই স্ট্যান্ডার্ড সকল উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত শিক্ষা মান নিশ্চিত করনে বাধ্য করবে। বিশেষ ভাবে পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয় যাদের স্নাতকদের চাকরির বাজারে চাহিদা কম এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় জাদের বিরুদ্ধে নাম সরবস্ব সার্টিফিকেট এডুকেশন দেয়ার অভিজোগ রেয়েছে।
এই বিধান শিক্ষা জীবন কন্টিনিউ করা শিক্ষার্থী দের বেলায় প্রযোজ্য হবে না বরং (শুধুমাত্র) ফুল্টাইম জব এ আগ্রহীদের বেলায় বাধ্যতামূলক।
বর্তমানের মেডিক্যাল ইন্টার্নশিপের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসবে। বর্তমানের ইন্টার্ন ব্যবস্থা কে বাধ্যতামূলক একাডেমিক এটাচমেন্ট এ নিয়ে, চাকুরী প্রার্থীদের জন্য ন্যাশনাল ইয়ুথ সার্ভিস প্রযোজ্য হবে। (এই ক্ষেত্রে মেডিক্যাল প্র্যাক্টিসিং কন্টিনিউয়েসন কে মাথায় রেখে ৩ নং ধাপ কিছুটা শিথিল যোগ্য। শিক্ষা এটাচমেন্ট, প্রাথমিক-১ মাস, মাধ্যমিক-২ মাস এবং উচ্চ মাধ্যমিক ২ মাস, পরবর্তী সময় ৪ নং এর সাথে একীভূত হবে)।
সব ধারার স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ন্যাশনাল সার্ভিসে আসবেন না। স্নাতকোত্তর শিক্ষা শেষে সরকারি জব এ আসতে চাইলে উনাকে ন্যাশনাল সার্ভিস এ এনরোল করতে হবে। সরকারি জব এ ইন্টারেস্টেড না এমন স্নাতক শিক্ষার্থী ডিক্লেরেশন দিয়ে ন্যাশনাল ইয়ুথ সার্ভিস কে ডিনাই করে সরাসরি বেসরকারি জব করতে পারেন। সেক্ষেত্রে উনাকে একটি নিরদিস্ত সময়ের রি ডিসিশন টাইম দেয়া যেতে পারে (যেমন সর্বচ্চ ৫ বসর)। স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পর রিসার্চ লেভেলের শিক্ষার্থীও ন্যাশনাল সার্ভিস এর আওতামূক্ত।
BCS এবং সকল সরকারি নিয়োগ প্রথা বিলুপ্ত হবে
(যেখানে প্রাথমিক রিকোয়ারমেন্ট গ্রাডুয়েশন )
ন্যাশনাল ইয়ুথ সার্ভিস এর চারটি ধাপ কঠোর ভাবে মান নিয়ন্ত্রিয়ত গ্রেডিং এর আওতায় আসবে (পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন, লিডারশীপ, ইন্নোভেশন এবং ক্রিয়েটিভিটি ইত্যাদির মানদণ্ডে)। এই গ্রেডিং এবং একাডেমিক রেজাল্ট ক্যাডার অন্তুরভুক্তিতে সরাসরি বিবেচ্য হবে। অন্য কোন ধরেনের পরীক্ষা, ভাইভা, সুপারিশ, এপ্টিচুড টেস্ট নেয়া যাবে না। এই প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে আসা স্টুডেন্ট সখম হতে বাধ্য। এই পুরো ধাপে রাজনৈতিক দুরবিত্তায়ন ঠেকিয়ে মেধা ভিত্তিক জন প্রশাসন গড়া সহজ হবে।
অর্থাৎ আমরা বলছি শিক্ষার্থীর একাডেমিক রেজাল্ট এবং ন্যাশনাল সার্ভিস এর গ্রেডঃ এই দুইয়ের সমন্বয় BCS সহ সকল সরকারি নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রতিস্থাপন করবে। প্রতি বছরের গ্রেডিং সিরিয়াল থেকে নিজস্ব রিকোয়ারমেন্ট অনুসারে গাইড লাইন মেনে যে কোন অধিদপ্তর ক্যান্ডিডেট পিক করবেন, কোন ধরনের পরীক্ষা, ভাইবা, এবং সুপারিশ/তদবির ছাড়া। এটা ওপেন সোরসিং।
ন্যাশনাল সার্ভিস এর যে কোন ক্যাডার চাইলে বেসরকারি জব এ যেতে পারবেন। ন্যাশনাল সার্ভিসের ২ বছর প্রফেশনাল জব সার্ভিস হিসেবে গন্য হবে এবং এর স্বীকৃতি জব এক্সপেরিয়েন্স হিসেবে প্রদান করা হবে।
বিশবিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগঃ
দুর্নীতি ঠেকাতে আমরা বলেছি, সরাসরি মেধা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ প্রথা চালু করতে। যেহেতু ভাল ছাত্র মাত্রই ভালো শিক্ষক নন, তাই বাধ্যতা মূলক শিক্ষক মূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে।
এই মূল্যায়ন করবেন প্রথমতা ছাত্র ছাত্রী এবং পরে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক প্যানেল যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন নিয়ন্ত্রণ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ন্যাশনাল সার্ভিসে এক্সসিলেন্স অর্জনকারী প্রারথীকেও শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবেন।
উচ্চ শিক্ষা স্তরে শিক্ষক মূল্যায়ন
স্নাতক পর্যায়ের সকল মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রতিটি কোর্স এ ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষক মূল্যায়ন এ অংশ নেয়া বাধ্যতামুলক। একাধিক বিষয়ের প্রতিটিতে পর পর ২ টি মূল্যায়নে গ্রান্টেড পয়েন্ট না পাওয়া টিচার কে কোর্স থেকে প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এই শিক্ষক কে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ক্লাস নিতে পাঠাবেন, মাস্টার্স করতে বাধ্য করবেন অথবা রিসার্চ এসোসিয়েট হিসেবে কোন প্রফেসর এর সাথে এটাচ করবেন। নির্দিষ্ট সময়ের (৬ মাস, ১ বছর ) পরে এবার বিভাগীয় শিক্ষক পেনেল শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে গ্রান্টেড না পাওয়া সেই শিক্ষক কে মূল্যায়ন করবেন। পাস করলে পুনরায় স্নাতকের ক্লাসে ফিরবেন, না হলে এই শিক্ষক মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরেই শিখকতা করবেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক নিয়োগ ন্যাশনাল সার্ভিস থেকেই আসবে ( একাডেমিক রেজাল্ট এবং ন্যাশনাল সার্ভিসের যৌথ গ্রেড পয়েন্ট থেকে প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট থেকে আসবে)। আমরা প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষক দের যোগ্যতাও স্নাতক পর্যায় হিসেবে কামনা করি, এই দুটিই আসলে সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ শিক্ষা ধাপ। বর্তমানের প্রাথমিক নিবন্ধন কিংবা মাধ্যমিক নিবন্ধন নয় যাতে এইচ এসসিপাস/ডিগ্রি কে রকোয়ারমেন্ট হিসেবে ধরা হয়। আমরা চাই সর্বোচ্চ শিক্ষিত রাই শিক্ষার ভীত গড়ে দিন আমাদের পরবর্তী প্রজম্ম কে।
এর তাৎপর্য হোল প্রাথমিক, মাধ্যমিক , উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিশ্ব বিদ্যালয় এই সকল পর্যায়ের শিক্ষক বৃন্দ একই এন্ট্রি যোগ্যতা এবং একই মানের বেতন কাঠামো উপভোগ করবেন।
শিক্ষা এগিয়ে যাক,
দুর্নীতি নিপাত যাক,
জন প্রশাসন দক্ষ এবং যোগ্য হয়ে উঠুক।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাক।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:১৭