সাধারনত দাম বাড়লে ধূমপায়ী আর্থিক সামর্থ্য এর সাথে পেরে না উঠলে কম দামি ব্রান্ডের দিকে ধাবিত হয়, ধূমপান একেবেরাই ছেড়ে দেয় খুব খুব কম লোকেই। তবে এই একঘুয়ে প্রবণতাকে বাজেটে বর্ধিত রাজস্ব আদায়ের জন্য ব্যবহার করা হয় বহু উন্নত দেশেই, বছর বছর সিগারেটের উপর শুল্ক বাড়িয়ে। আমাদের দেশেও এই প্রবনাতা দেখা দিয়েছে।
এই সুযোগে বেনিয়া সিগারেট কোম্পানী গুলা শুল্ক বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য না রেখেই দাম বাড়ায় আরো বেশি, আমাদের দেশে প্রাইস কমিশন না থাকায় বা বাজার মুল্য পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় শুল্ক বৃদ্ধির সাথে সাথে সিগারেট কোম্পানীর লাভও বাড়ে। তাই প্রতি বছর ধূমপায়ী লোকেরা প্রতরানর শিকার হচ্ছেন। ধূমপান করতে গিয়ে দৈনিক খরচের এক বৃহৎ অংশ ব্রিটিশ এমেরিকান টোবাকো (এবং অন্য টবাকো, ব্যাট কে এক্সাম্পল হিসেবে নিন ) কে উজাড় করে দিচ্ছেন । (উদার ভাবে কিংবা বাধ্য হয়ে)।
পরিবেশবাদী দের একটি অংশ কিন্তু ধূমপান প্রতিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই শুল্ক বৃদ্ধিকে স্বাগত জানায়, কিন্ত আদতে প্রটিতি সিগারেট শুল্ক বৃদ্ধি ব্রিটিশ এমেরিকান টোবাকো কে আর্থিক ভাবে লভবান করছে।
তাহলে ধূমপান বিরোধী আন্দোলনের প্রকৃতি কেমন হওয়া উচিত? এটা নিয়েও নতুন করে ভাবতে হবে, কারন বর্তমানের এই মহৎ সামাজিক আন্দোলন ধূমপান কমাতে পারছে না।
তামাক চাষের জমি প্রাপ্তি কে কঠিন করে ফেলতে হবে, কৃষককে তামাক চাষে অনুৎসাহিত করতে হবে। এটা ব্যাপক দুরহ কাজ বটে!! উতপাদিত পন্য সারপ্লাস হবার কারনে, পচনশীল হবার কারনে, পরিবহন কস্টলি হবার কারনে কিংবা গুদাম জাত করন কঠিন এবং ব্যয় বহুল হবার কারনে কৃষক তামাক চাষের মত নিরাপদ চাষাবাদে ঝুঁকছে। সরকারকে এইসবের একটা বন্দোবস্ত করতে হবে।
শুল্ক বৃদ্ধির সাথে সিগারেটের দাম পুনঃ নির্ধারণ কে নিয়ন্ত্রনের আওতায় আনতে হবে, সিগারেট কোম্পানী গুলাকে বেশি পরিবেশ ট্যাক্স এবং কার্বন এমিশন পেনাল্টি দিয়ে তাদের আর্থিক সক্ষমতার লাগাম টেনে ধরতে হবে।
বেনসন কোম্পানী কোন ভাবেই যাতে কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্পন্সর না করতে পারে (বিশেষ করে কনসার্ট, টিভি কন্টেস্ট ), স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন প্রোগ্রাম বা সার্কুলেশনে স্পন্সর করতে না পারে সেটা পরিবেশ বাদী আন্দোলনের কন্টেক্সট এ আনতে হবে।
ব্রিটিশ এমেরিকান টোবাকো সহ সব বিড়ি সিগারেট কোম্পানী বছর বছর কি পরিমাণ বনায়ন করছে সেটা টার্গেট দিয়ে পরে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে। বছর বছর শুল্ক বৃদ্ধির সাথে বনায়নের টার্গেট ও বাড়াতে হবে।
টোবাকো কোম্পানিকে স্বাস্থ্য খাতে সোশাল রিস্পন্সিবিলিটি ভিত্তিক আর্থিক বরাদ্দ দিতে বাধ্য করতে হবে। ক্যান্সার, যক্ষ্মা ইতায়দি মরনব্যধি প্রতিরোধে তাদের আর্থিক এবং জনসচেতনতা তৈরির ভুমিকাকে বাধ্যতা মুলক করতে হবে।
ধূমপায়ীকে তার শখের আর্থিক মুল্যে যেভাবে কুপকাত করা হয় , ঠিক তেমনি টোবাকো কোম্পানিকে পরিবেশ, বনায়ন, কার্বন এমিশন আর জনস্বাস্থ্য পেনাল্টি দিয়েই তবে ব্যবসা করতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৪ রাত ৯:০৮