somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এইচআইভি মুক্ত দ্বিতীয় পুচকীশ!

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ৮:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ এখন দুটো ভাগে বিভক্ত: শাহবাগ আন্দোলনের পক্ষে আরেকদল শাহবাগ আন্দোলনের বিপক্ষে। বাঙ্গালী যেকোনো ইস্যুতে পক্ষ নিতে ভালোবাসে এবং নিজেকে অধিকতর জ্ঞানী এবং শ্রেষ্ঠ ভাবে বলেই যেকোনো ইস্যুতেই বিরোধীতা করা চাই। এসকময় মনে করতাম স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশে পাকিস্তানের পক্ষ কেউ নিবে না। কিন্তু জামাত শিবিরের পোলাপান দেখে সে ভুলও ভাঙ্গে। তবু আশা ছিলো এক জামাত শিবির ছাড়া কেউ আর পাকিস্হান বা স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলবে না। কিন্তু গোলাপী বেগুম ওরফে খা-ল্যাদা সেটাও করে দেখালেন। এখন আমাদের শেষ ভরসা সাক্ষাৎ ডাইনী হা-চীনা। দেশের ভবিষ্যত যেদিকেই যাক, অন্ধকার ছাড়া কিছু নেই। হয় রাজাকারদের দেশ যাবে পরবর্তী নির্বাচনের পর অথবা ডাইনী বেটি ছিড়েকুড়ে খাবে এই দেশটাকে।

যাই হোক, দেশ গোল্লায় যাক। একটা ভালো খবর দেই।

আজ হতে আড়াই বছর আগে মিসিসিপীর এক হাসপাতালে এক গর্ভবতী মা আসলেন ইমারজেন্সী কেয়ারে। যখন পুচকুটার জন্ম হবার কথা ছিলো তার বেশ কিছু দিন আগেই পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে ডাক্তারগন স্বভাবতই রক্ত সহ সবকিছুর স্ক্রিনিং টেস্ট করাতে গিয়ে দেখেন মহিলাটি এইচআইভি পজিটিভ এবং শিশুটি এইচআইভি পজিটিভ নিয়ে জন্ম নেয়। যেহেতু নবজাতকের এন্টিবডি খুবই দুর্বল থাকে সেহেতু কয়েকঘন্টার মধ্যে এইচআইভির জীবনু এইডসের রূপ নেয় যেটা নবজাতকের জন্য ভয়াবহ। নব্যজাত শিশুর দেহে এইডসের এই ভয়াবহ রূপ ধারন না করে এই আশায় নবজাতককে প্রচলিত কিছু স্বল্প ডোজের ওষুধ দেয়া হয়।কিন্তু গ্রামের ঐ ছোট হাসপাতালে এই ঔষুধগুলো না থাকায় তারা ঐ পুচকুটাকে পাঠিয়ে দেয় গে এর মেডিক্যাল সেন্টারে।

মিসিসিপি ইউনিভার্সিটির এইচআইভি স্পেশালিস্ট ড: হান্নাহ গে প্রচলিত সেই স্নল্প ডোজের ঔষুধের বদলে দ্রুত কাজ করতে সক্ষম এবং তার চেয়ে কয়েক গুন বেশী শক্তিশালী ঔষুধ পুচকুরে দেয়। পুচকুর জন্ম নেয়ার ৩০ ঘন্টার মধ্যে ওর রগে তিনটা ঔষুধের ডোজ দেয়া হয়। এখানে উল্লেখ করা শ্রেয় যে পুচকুর মার এর আগে জানতোই না যে এইচআইভি আছে তাই কোনো ট্রিটম্যান্টও নেয়া হয় নাই। যাই হোক কোনো দেরী না কইরাই এই ঔষুধগুলান পুচকুরে দেয়া শুরু করা হয়।

ধারনা করা হয় প্রথম ধাক্কায় এরকম কড়া ডোজ পেয়ে পুচকুর শরীরে লুকিয়ে থাকা এইডসের জীবানু ধরা শায়ী হয়ে যায়। সাধারনত দেখা যায় এইসব নবজাতক যারা প্রচলিত ধারার ঔষুধ নিয়া থাকতো তারা একবার ঔষুধ নেয়া বন্ধ করলে লুকাইয়া থাকা জীবানুগুলা আবারও পুরা জেকে বসে এবং এইডসের প্রাদুর্ভাব ঘটায়। এক্ষেত্রে ১৮ মাস পর দেখা যায় পুচকু খুবই সুস্হ ভাবে টিং টিং করতেছে এবং সেই ঔষুধ নেয়া বন্ধ করে দিছে। তার আরও কয়েকমাস পর পুচকুরে যখন টেস্ট করা হলো তার শরীরে জীবানু খুইজা পাওয়া গেলনা।

এতে সবার টনক নড়ে, তখন পুচকুর শরীরের রক্ত প্রায় আধা ডজন রকমের স্ক্রিনিং টেস্ট করা হয় এইচআইভির জীবানুর জন্য এবং সব গুলাতে এই এইচআইভির জীবানুর ন গন্য পরিমান ডিএনএ রক্তে পাওয়া যায় যেগুলো মোটামোটি নিজেদের প্রতিলিপি তৈরী করতে অক্ষম। এভাবে প্রতি দ মাস অন্তর অন্তর পরীক্ষা করে যখন আর এইডসের জীবানুর সক্রিয়তা পাওয়া গেলনা তখন ধরে নেয়া হলো এই পুচকু এখন এইচআইভি মুক্ত দুনিয়ার দ্বিতীয় সৌভাগ্যবান। গত বছর প্রায় ৩ লাখ শিশু সারা পৃথিবী জুড়ে এইডসের জীবানু নিয়ে জন্মগ্রহন করেছিলো যার বেশীর ভাগই তৃতীয় বিশ্বের মতো দেশে।



ছবিতে ডাক্তার ডেবোরাহ প্রসাদ, জন হপকিন্স হাসপাতালের যার মতে এই পুচকুর এইডস ফিরা আসবো কি না সেইটা বলা যাইতেছে না।


প্রথম জন জার্মানীতে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করে জীবানুমুক্ত করা হয় যদিও ধারনা করা হয় জার্মানীর এই টিমোথী ব্রাউন স্পেশাল ডোনারের কাছ থেকে বোন ম্যারো নেয়ার ঘটনায় আরোগ্যলাভ সবার জন্য একই না হতে পারে। এটা হতে পারে একেক জাতী বা স্হানের জন্য এইডসের জীবানু থেকে মুক্তির একেক রকম চিকিৎসা ব্যাবস্হার প্রয়োজন।

তবে এই পুচকুর যে আবার এইডস ফিরে আসবে না সে ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারছে না তবে এখন যে সে প্রায় জীবানু মুক্ত এবং ঔষুধ ছাড়াই ভালো আছে এটাই তার আরোগ্যলাভের বড় ঘটনা।

এই ঘটনা থেকে ২০১২ পর্যন্ত আমরা ১০ টা জিনিস জানতে পারি।

১) বেশীরভাগ এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর এইডসের ইনফেকশন নিয়ন্ত্রনে নেই।

১.১ মিলিয়নের এক চতুর্থাংশ মানুষের এইডস নিয়ন্ত্রনে আছে, আর বেশীরভাগই এইডসের দ্বারা আক্রান্ত। এখানে নিয়ন্ত্রন বলতে এইচআইভি পজিটিভ কিন্তু এর ফলে তৈরী হওয়া উপসর্গ সমূহ বিদ্যমান না, মানে কোনো অসুখে এখনো ধরে নাই। তবে সবাই যদি কাল জেনে যায় তারা এইচআইভি আক্রান্ত তখন সবাই এর ট্রিটম্যান্ট কি পাবে?

২) এইচআইভি মুক্ত হবার জন্য বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট একটা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে।

বার্লিনের টিমোথী ব্রাউনের মতো বোস্টনের আরো দু জন এইডসে আক্রান্ত রোগী বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। তারা দু'জন টিমোথী ব্রাউনের মতোই লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলো এবং এন্টি রেট্রোভাইরাল ঔষুধ নিতো নিয়মিত। অপারেশনের পর তাদের রক্তে কিছুদিন পর এইচআইভির কিছু জীন পাওয়া যায় যেগুলোর অবস্হা ঠিক টিমোথী ব্রাউনের মতোই অর্থাৎ জীবানুগলো শ্বেতকনিকাকে গ্রাস করে নিজের ডুপ্লিকেট বানাতে অসমর্থ। সমস্যা হলো টিমোথী ব্রাউনের অপারেশনের ৫ বছর ঔষুধ নেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই কিন্তু গতবছর অপারেশনে যাওয়া এই দু রোগীকে এখনও ঔষুধ নিতে হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা আশংকা করছে যেহেতু এইচআইভির নিষ্ক্রিয় কিছু জীন রক্তে বিদ্যমান সেহেতু তাদেরকে এইচআইভি মুক্ত বলা গেলেও ভবিষ্যতে যে ফিরে আসবে না সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে এটা ঠিক যে সবার জন্য বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের মতো রিস্কি অপারেশন কাজে নাও লাগতে পারে।

৩) এন্ট্রো রেট্রোভাইরাল ট্রিটম্যান্ট খরচামুক্ত করে দিলে এইচআইভি ইনফেকশন হার কমে যায়

কানাডার কুইবেক আর অন্টারিও তে এই চিকিৎসা বিনা খরচায় দেয়ার ফলে সম্প্রতি নতুন করে আক্রান্ত হবার হার সবচেয়ে কম।

৪) অনেক যুবকই জানে না সে এইচআইভি আক্রান্ত কি না।

আমি কয়েকদিন আগে শরীর খারাপের কারনে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার সাব হুদাই রক্ত রাখলো। পরে জানাইলো এইটা নাকি সুইডেনে ফ্রিতে করায় সবাইকে এই দেশের নাগরিক হোক কি না হোক। যাই হোক ব্লাড দিতে গিয়াও এর আগে কয়েকবার এই টেস্ট করাইছি গত বছরও করাইছি, আমি ঠিক আছি। তো এই পোস্ট যারা পড়তেছেন, দেশের এই ফ্রি টেস্ট খানা করাইয়েন।
রয়টারের সিডিসি ডিরেক্টর একটা পরিসংখ্যানে দেখাইছে সকল যুবকের মধ্যে ৭২ শতাংশ পুরুষ যারা সমকামী তারা এইচআইভিতে আক্রান্ত এবং ৫০ শতাংশ যারা সমকামী না তারাও আক্রান্ত।

৫) ১০ বছর আগে যত এইডসের রোগী ছিলো এখন তার থেকে ১৮ শতাংশ বাড়ছে।

যদিও মৃত্যুর হার কমছে তবুও এইটা আশংকাজনক। সার্ভেটা করছে জাতিসংঘ।

৬) এইচআইভির ঔষুধের দাম কমছে।

১০ বছর আগে ২০০০ লোকের জন্য এন্টি রেট্রোভাইরাল ঔষুধের পিছনে খরচ যাইতো ১০০০০ ডলার এক বছরে সেখানে এখন মাত্র ১০০ ডলার খরচ যায়।

৭) প্রতিরোধক হিসেবে ট্রুভাদার ব্যাবহার চালু রাখা উচিত।

এফডিএ স্ট্রিবিড নামে নতুন ঔষুধ ছাড়তেছে একই কাজের জন্য। তবে সমকামীদের জন্য এই ঔষুধ অবশ্যই ব্যাব হার করা উচিত এবং যদি ব্যাব হার করা না হয় তাহলে এটা মহামারী আকার ধারন করবে। এমনকি যারা বিপরীত লিঙ্গের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয় তাদের জন্যও এই ঔষুধের দরকার। (নাউজুবিল্লাহ)

৮) স্টেম সেল টেকনোলজী এইডসের চিকিৎসার বিরুদ্ধেও কার্যকর হতে পারে।

তত্বীয় ভাবে জেনেটিক্যালী পরিবর্তিত স্টেম সেল দিয়ে জীবন্ত এইচআইভির জীবানুকে আক্রমন করার ধারনা প্রতিষ্ঠিত হলে এটা ইন্দুরের ক্ষেত্রে চালানো হয়েছে কিছু দিন আগে। এটা নিয়ে আরও বেশী গবেষনার প্রয়োজন কারন এর সামগ্রিক পরিস্হিতি কি হতে পারে সেটাও একটা মূখ্য বিষয়।

৯) সবাইকেই এইচআইভি টেস্ট করানো উচিত।

১০) এইচআইভির ট্রিটম্যান্টের সময়ই এন্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপী দেয়া উচিত।

আগে যাদের সিডি৪ কাউন্ট ছিলো প্রতি কিউবিক মিমি রক্তে ৩৫০ শুধুমাত্র তাদেরকেই এন্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপী দেয়া হতো এই ঘটনার পর নতুন গাইডলাইন অনুসারে এইচআইভি ধরা পরার সাথে সাথেই এটা দিতে বলা হয়েছে।


এইডসের কন্সপিরেসী থিওরী জানতে লিসানী মিয়ার এই পোস্ট পড়তে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১৪
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×