somewhere in... blog

ফটোগ্রাফির চমচম থুক্কু পঞ্চম পাঠ

০৭ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পোস্ট

লাইট মিটার আর এক্সপোজার

যেহেতু টার্ম গুলা মোটামুটি জানেন, তাইলে এখন আমি বলতে পারি "এক্সপোজার হইল অ্যাপারচার, শাটার স্পিড আর আই.এস.ও এই তিন এর কম্বিনেশন"। এই তিনটারে কমায়া বা বাড়ায়া একটা ফটোরে আপনি কারেক্ট এক্সপোজারে তুলতে পারবেন। এখন প্রশ্ন হইলো কারেক্ট এক্সপোজার কি? কারেক্ট এক্সপোজার হইলো একটা সাবজেক্ট থেইকা যেই লাইট টা রিফ্লেক্ট করতাসে, ঠিক ওই লাইটটারেই ফ্লিম/সেনসর বন্দি করা। এর চেয়ে কম লাইটও না, বেশী লাইটও না ।

ছবিতে যদি বেশী লাইট চইলা আসে তাইলে কি হইবো? তাইলে ছবিটা এট্টু সাদা সাদা হইয়া যাইবো বা "ওভার এক্সপোজ্ড" [Over Exposed] হইবো। আর যদি মূল আলোটার চেয়ে কম আলো ফ্লিম/সেনসরের উপর পরে তাইলে ছবিটা এট্টু অন্ধকার আসবো বা "আন্ডার এক্সপোজ্ড" [Under Exposed] হইবো ।

এখন একটা ছোট্ট বাড়ির কাজ দেই। আজ প‌র্যন্ত যতো ছবি তুলসেন, সেগুলা নিয়া একটু বসেন। এরপর প্রত্যেকটা দেইখা দেইখা একটু চিন্তা করেন যে, ছবিটা কি ওভার এক্সপোজ্ড না আন্ডার এক্সপোজ্ড না ওই সময় ওইখানে যে আলোটা ছিলো তাই আসছে? ছবি গুলা জুম কইরা দেখেন ছবিতে গ্রেইন বা নয়েজ আসছে কিনা। গ্রেইন থাকলে বুঝতে পারবেন ওই সময় ক্যামেরার আই.এস.ও খুব হাই হইয়া গেসিলো। অটো মোডে তুললে ঠিক এক্সপোজার পাওয়ার জন্য, ক্যামেরা নিজে নিজেই আই.এস.ও হাই কইরা দেয়। তাই ছবিতে গ্রেইন চইলা আসে।

নিশ্চই এই প্রশ্নটা এতক্ষনে ভাবা শুরু করসেন যে, ছবি তোলার পর তো বুঝতাসি কিন্তু ছবি তোলার সময় কেমনে বুঝুম যে ছবিটা আন্ডার/ওভার এক্সপোজ্ড হইতাসে কিনা ? এইটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যেই যন্ত্রটা, তার নাম "লাইট মিটার"। লাইট মিটার আপনার ক্যামারার লগে আলাদা কইরা কিনতে হইবো না। যদিও আলাদা কিন্তে পাওয়া যায়, কিন্তু সব ক্যামেরাতেই একটা বিল্ট ইন লাইট মিটার থাকে। সেইটা দিয়া কেমনে লাইট মাপন যায় আর ঠিক এক্সপোজারে ফটুক তুলন যায় সেইটা আমরা এখন দেখুম।

আসেন তাইলে পরথমে দেখি লাইট মিটার কেমনে কাজ করে আর এইডা দেখতেইবা কেমন। এক এক ক্যামেরাতে লাইট মিটারের ইন্ডিকেটর এক এক রকম থাকে যদিও সবগুলার কাজ একি। লাইট মিটার একটা সিনের লাইট মাপে আর আমাদের এক্সপোজার দেখায়। আপনি যদি সাবজেক্টের দিকে ক্যামেরা তাক কইরা, যে সুইচটা টিপ দিলে ফটো উঠে (এইটারে কয় Shutter Release Button) ওইটাতে পুরা টিপ না দিয়া অর্ধেক টিপ দেন, তাইলে ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরায় আর একটু এডভানস্ড ডিজিটাল কমপ‌্যাক্ট ক্যামেরায় ডিসপ্লেতে নিচের মতো একটা কিসু দেখাইবো:



এর মানে হইলো ক্যামেরার লাইট মিটার সামনের আলোটারে মাপসে, আর দেখাইতাসে যে, ঠিক এক্সপোজারের চেয়ে একটু কম আসে এক্সপোজার। যেহেতু কাটাটা মাইনাস "-" এর দিকে তারমানে ক্যামেরায় আলো কম ঢুকতাসে। তাইলে আলো বেশি ঢুকাইতে হইলে আমরা কি করুম? ৩টা কাজ করন যায়:

এক) এপারচারটা আরেকটু খুইলা দেওন যায়। মানে এখন f এর যেই ভ্যালু দেখাইতেসে (ধরেন f/5.6) তার চাইতে এক স্টপ কমায় f/4 করন যায়। আশা করি মনে আসে যে এপারচার ভ্যালু যত কমে এপারচার তত বড় হয়।

দুই) শাটার স্পিড এক স্টপ কমায় দেয়ন যায়। যদি 1/500 থাকে তাইলে 1/250 করন যায়।

তিন) আই.এস.ও এক স্টপ বাড়ায় দেওন যায়। যদি iso 200 থাকে তাইলে iso 400 করন যায় (ডিজিটাল এ)

এই ৩টা করার কোন সিরিয়াল নাই। প্রয়োজন অনুসারে, কোনটা বাড়াইতে আর কোনটা কমাইতে হবে এইটা ঠিক করা হয়। প্রয়োজনটা কি এইটা ৩টা জিনিষ বুঝানোর সময় কিছুটা বলসি, সামনে আরো বলবো। উদাহারন হিসাবে বলা যায়, আপনে চাইতাসেন ছবিতে একটা ফোয়ারার পানি ফ্রিজ করতে। এইখানে এক্সপোজার ঠিক করতে গিয়া আপনে যদি শাটার স্পিড কমায় দেন তাইলে তো আর ফ্রিজ হইবো না। তাই কমাইতে হইবো এপারচার ভ্যালু অথবা বাড়াইতে হইবো আই.এস.ও।

এখনকার সব ডিজিটাল এসএলআর ক্যামেরায় আর একটু এডভানস্ড ডিজিটাল কমপ‌্যাক্ট ক্যামেরায় মিটার টা এইভাবেই স্কেলের মতো দেখায়। কিছু পুরানো ফ্লিম এসএলআরে দেখাইতো ছোট্ট একটা লাল আর সবুজ লাইট আর +/- দিয়া। শাটার রিলিজ বাটন হাফ ওয়ে প্রেস করার পর, View Finder এ (যেইটা দিয়া দেইখা ফটু তুলী) যদি একটা লাল আলো আর "-" দেখাইতো তার মানে আন্ডার এক্সপোজ্ড। আর যদি "+" আর লাল আলো দেখাইতো তার মানে ওভার এক্সপোজ্ড। এইভাবে সবুজ আলো না আসি পর্যন্ত এপারচার বা শাটার স্পিড চেঞ্জ করতে হইতো। আই.এস.ও চেঞ্জ করার উপায় ছিল না কারন ওইটা করতে হইলে তো পুরা ফ্লিমই বদলানো লাগবো।

আমি কালকে বান্দরবন/বগা লেক যাইতাসি। সাথে বাংলাদেশের ৩০ জন অসাধারন ফটোগ্রাফার। উদ্দেশ্য কিছু ভাল ছবি তোলা আর উনাদের কাছ থেইকা কিছু শিক্ষা নেওয়া। দোয়া রাইখেন যাতে সব উদ্দেশ্য পুরা হয় আর ঠিকঠাক মতো ফিরা আইসা ছয় নম্বর পোস্টটা লিখতে পারি।

যাওয়ার আগে আপনাদের জন্য ফটো গিফ্ট। এই রাধা চুড়ার ফটো টা তুলসিলাম আমদের অফিসের সামনের রাস্তা থেইকা, কোন এক লাঞ্চ টাইমে। হ্যাপ্পি ফটোগ্রাফি এভরিওয়ান.... :)
১৩৯ বার পঠিত
২৭টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইউনূস বিদেশে দেশকে করছেন অপমান-অপদস্থ

লিখেছেন sabbir2cool, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪৬


দুর্নীতির কারণে তার যাওয়ার কথা ছিল জেলে, গেছেন তিনি বঙ্গভবনে প্রধান উপদেষ্টার শপথ নিতে। এটা খোদ মুহাম্মদ ইউনূসের স্বীকারোক্তি ছিল। তার দেশশাসনের আট মাসে বিদেশে যখন গেছেন তিনি, তখন স্বীকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈদের বাড়ি

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:২৭


রোজার ঈদে মাকে খুঁজতে যাব
পাঁচ হাজার টাকা রেখে দিয়েছি-
সিঁলিকের শাড়ি কিনবে বলে;
বাবা আর বিড়ি খাওয়া দায়ে
আমাকে নাক সেছুর দিবে না
কোন কোরবানী ঈদে-কোন
পথে যাবো- কোন ঈদ আসবে!
আর অপেক্ষা করতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এখানে আর নিরাপত্তা কই!=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:১৩


কোন সে উন্নয়নের পথে হাঁটছি বলো
এই গিঞ্জি শহর কি বাসের অযোগ্য নয়?
শূন্যে ভাসমান রাস্তা-নিচে রাজপথ
তবু কি থেমে আছে যানজট কিংবা দুর্ঘটনা?

দৌঁড়ের জীবন-
টেক্কা দিতে গিয়ে ওরা কেড়ে নেয় রোজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই শহর আমার নয়

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:০২




এই শহর আমার নয়
ধুলিমলিন, পোড়া ধোঁয়ায় ঘেরা
ধূসর এক স্বপ্নহীন চেহারা।
এই শহর, আমার নয়।

ঘোলাটে চোখে জমে হাহাকার,
চেনা মুখেও অচেনার ছাপ।
পথে পথে স্বপ্নরা পোড়ে,
আলোর ছায়ায় খেলে আঁধার।

এই শহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

টিউবওয়েলটির গল্প

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৪



এটা একটি টিউবওয়েল।

২০০৯ সালে, যখন আমি নানী বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতাম, তখন প্রতিদিন এই টিউবওয়েল দিয়েই গোসল করতাম। স্কুল শেষে ক্লান্ত, ঘামাক্ত শরীর নিয়ে যখন ঠান্ডা পানির ঝাপটায় নিজেকে স্নান... ...বাকিটুকু পড়ুন

×