রাজশাহীর কুখ্যাত রাজাকার আফাজ উদ্দিন পাকিস্থানে পালিয়ে গিয়ে সেখানে বসেই মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যš- এ দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিভিন্নভাবে সাহায্য, সহযোগিতা ও পরামর্শ যুগিয়ে গেছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় জামাতি নেতাদের সঙ্গে ছিল তার নিত্যযোগাযোগ। স্বাধীন বাংলাদেশে জামাতিদের উত্থানে তার বিশেষ ইন্ধন রয়েছে বলে জামাতি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
একাত্তরে পাকিস্থানের স্বৈরশাসক গোষ্ঠী বাঙালি নেতৃত্বকে ক্ষমতায় আসতে না দেওয়ায় সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও প্রতিবাদের ঝড় উঠলো। ৭ মার্চের পর ক্রমে পরিস্থিতি বদলিয়ে গেলো। রাজশাহীতে জামাতে ইসলামী নেতারা কৌশলে পাকিস্থানি বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে লাগলেন। জামাতে ইসলামীর নেতা নগরীর রানীবাজার এলাকার বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন সরাসরি পাকিস্থানি সৈন্যদের দোসর হয়ে বাঙালিদের অধিকার আদায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করলেন। তার বাড়ির সামনেই ছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ অফিস। আফাজের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই ২৫ মার্চের কাল রাতে পাকিস্থানী সৈন্যরা আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হক সরকারকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। আফাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবতী মেয়েদের জোরপূর্বক ধরে নিয়ে এসে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়া হতো। এভাবে অল্পদিনের মধ্যেই আফাজ উদ্দিন শত্রু বাহিনীর প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন।
রাজশাহীর জামাতি নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, বিগত জোট সরকারের মদদপুষ্ট স্বাধীনতা বিরোধী জামাতি নেতাদের মাধ্যমে আফাজ উদ্দিন রাজশাহী অঞ্চলে জামাতের কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। এই কুখ্যাত রাজাকার পাকি¯-স্থানের মাটিতেই ১৯৯৩ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বর্তমানে রাজশাহী শান্তি কমিটির অনেক সদস্যই মুখোশ পাল্টে নিজেদেরকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে দাবি করছে। তাদের দাপটে এলাকার অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা আজ নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে। একাত্তরে এই দেশদ্রোহী শয়তানদের হাতে রাজশাহীর যারা নির্যাতিত, নিগৃহীত হয়েছে, স্বজনদের হারিয়েছে তারা কি সহজেই ভুলে যাবে মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের নির্যাতনের কাহিনী? স্বাধীনতা বিরোধীরা আর কতোদিন এদেশে দম্ভ দেখাবে? এই প্রশ্ন এখন ঘুরেফিরে আসছে রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে মুখে।
ভোরের কাগজ প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্ত রূপ।
রাজাকারের একাত্তরনামা : আফাজের ইন্ধনে পাকস্থানি বাহিনী রাজশাহীতে চালায় হত্যা ধর্ষণ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঢাকায় শান্তিতে বসবাসের জায়গাগুলো
ঢাকায় শান্তিতে বসবাস করা যায় যেসব এলাকা: একটি বাস্তবভিত্তিক পর্যালোচনা
ঢাকা, বাংলাদেশের রাজধানী শহর, জনসংখ্যা ও যানজটের দিক থেকে অন্যতম ব্যস্ততম নগরী হলেও এখানকার কিছু কিছু এলাকা... ...বাকিটুকু পড়ুন
হেজেমনি, কাউন্টার-হেজেমনি ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ !
একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে নিঃশব্দ অথচ গভীর যুদ্ধ চলে তার ইন্টেলেকচুয়াল সেক্টরে। গোলা-বারুদের বদলে এখানে অস্ত্র হয় কলম, টকশো, নাটক, পাঠ্যবই, এবং ইউটিউব। বাংলাদেশে এই হেজেমনি বহুদিন ছিল প্রথম আলো,... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশে দলীয় সরকার কখনই জনগণের সরকার হয় না
সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলেও আওয়ামী লীগ সেটা স্বীকার করলো না। সেজন্য তারা বাকশাল নামে একদলীয় শাসন শুরু করে ছিল। কিন্তু সেনা বিদ্রোহে তাদের বাকশালী শাসনের অবসান ঘটে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রস্থান-পথ কঠিন হয়ে গেছে মুহাম্মদ ইউনূসের
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (৮ই আগস্ট ২০২৪ থেকে চলমান...) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা ছাড়ার পথ কঠিন হয়ে গেছে।
এমনিতেই তার পদ ছাড়ার প্রবল অনাগ্রহ, তার ওপর আছে ক্ষমতা গ্রহণের পরের মাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
বৃষ্টি ঝরছে সারাদিন
ইচ্ছা ছিল প্রথম আষাঢ়ে ছাদে যাবো
বৃষ্টি দেখতে,
যাওয়া হয় নাই।
বৃষ্টি তো আর ক্যালেন্ডার দেখে আসে না।
সে কখনো মাসের আগেভাগেই দরজায় কড়া নাড়ে,
আবার কখনো হুট করে হাওয়ায়
হালকা জলছবি আঁকে।
বৃষ্টি... ...বাকিটুকু পড়ুন