somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরে দেখা '৭১ : আল-বদর বাহিনী (প্রথমাংশ)

০১ লা আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৮:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতা যুদ্ধকে নস্যাত করার লক্ষ্যে জামাতে ইসলামীর অন্যান্য প্রচেষ্টার মধ্যে একটা উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা ছিল আল-বদর নামে একটা সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রতিষ্ঠা। শিক্ষিত জামাত সদস্য এবং ইসলামী ছাত্র সংঘের (অধুনা ইসলামী ছাত্র শিবির) সমন্বয়ে এই বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধরত জনগোষ্ঠীকে পাকিস্থানী মতাদর্শের গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করা।

পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর সংগে যোগসাজসে বদর বাহিনী সার্বিকভাবে জামাত নেতা গোলাম আজমের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হতো। এর প্রকাশ্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন:

১) বর্তমান জামাতের নায়েবে আমীর মতিউর রহমান নিজামী - সারা পাকিস্থানের প্রধান
২) বর্তমান জামাতের সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মোহম্মদ মুজাহিদ - প্রাদেশিক প্রধান
৩) মীর কাসেম আলী - তৃতীয় নেতা
৪) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান - প্রধান সংগঠক

সেপ্টেম্বর ৭১ এর প্রথম দিকে গভর্নরের উপদেষ্টা রাও ফরমান আলীর সংগে বৈঠকে গোলাম আজম বুদ্ধিজীবি নিধনের অনুমোদন লাভ করেন। তার পরপরই গোলাম আজমের তৎপরতা লক্ষ্যনীয় ভাবে বেড়ে যায়। তিনি সেই সময় আল বদরের মোহাম্মদপুরের হেড কোয়ার্টার পরিদর্শন কালে চরম উত্তেজনাময় বক্তব্য রাখেন। ( দৈনিক সংগ্রাম - ১৭ সেপ্টেম্বর ‘৭১)। সাথে সাথে দৈনিক সংগ্রামও তাল মিলিয়ে উত্তেজনাকর কলাম প্রকাশ করতে থাকে।

১৪ই সেপ্টেম্বর ১৯৭১, দৈনিক সংগ্রামে প্রকাশিত হয় আল-বদর শিরোনামে একটি লেখা, যেখানে বলা হয় -

“আল-বদর একটি নাম! একটি বিষ্ময়! আল বদর একটি প্রতিজ্ঞা! যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী আল বদর সেখানেই। ভারতের চর কিংবা দুষ্কৃতকারীদের কাছে আল বদর সাক্ষাৎ আজরাইল” ।

বাঙালী বুদ্ধিজীবিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে আল-বদর বাহিনীর প্রস্তুতির প্রমান পাওয়া যায় আল বদর প্রধানের ভাষনে। ২৩শে সেপ্টেম্বর ‘৭১ ঢাকার আলীয়া মাদ্রাসাস্থ বদর বাহিনীর ক্যাম্পের এক সমাবেশে বদর বাহিনীর প্রধান মতিউর রহমান নিজামী বলেন -

“যারা ইসলামকে ভালবাসে শুধুমাত্র তারাই পাকিস্থানকে ভালবাসে। এইবারের উদ্ঘাটিত এই সত্যটি যাতে আমাদের রাজনৈতিক বুদ্ধিজীবিরা ভুলে যেতে না পারে সে জন্যে সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালাতে হবে”।

যার ফলশ্রতিতে আমার দেখি ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এর ভয়াবহ বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবিদের নিধনের ঘটনা বিশ্ব দেখেছে।

(চলবে...)

সূত্র: একাত্তরের ঘাতক জামাতে ইসলামীর অতীত ও বর্তমান - শাহ আহমদ রেজা
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০০৭ সকাল ৮:১৬
৩৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিচারের জায়গা না পেলে মানুষ প্রেত হয়ে ওঠে

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯


(সামাজিক অবিচার, রাষ্ট্রীয় অনুপস্থিতি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঠামোর মধ্যে সাধারণ মানুষ কীভাবে হারিয়ে যায়।)

মানুষ যখন বারবার অবিচারের শিকার হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একদিন এসো সন্ধ্যে ফুরোলেই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫



ভালোবাসা ছড়ানো পাতায় পাতায়, সবুজাভ স্নিগ্ধ প্রহর আমার
এখানে উঁকি দিলেই মুগ্ধতারা চুয়ে পড়ে টুপটাপ;
ধূসর রঙ প্রজাপতিরাও এখানে রঙিন ডানায় উড়ে,
কেবল অনুভূতির দোর দিতে হয় খুলে, চোখগুলো রাখতে হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান কোনো চকচকে ল্যাব বা বিলাসবহুল ফ্যাক্টরিতে জন্মায়নি

লিখেছেন নাঈম আহমেদ, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

চীনের জে-১০ এর পেছনেও রয়েছে সেই ত্যাগ আর সংকল্পের গল্প—
১: গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দলের অক্লান্ত পরিশ্রম।
২: বাইসাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী সু চিশৌ।
৩: প্রথম উড্ডয়নের পর কেঁদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিন গেলে আর দিন আসে না ভাটা যদি লয় যৌবন

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬


এমন কোনো ইস্যু আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০%ও একমত এমন কোনো বিষয় চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ বদলাতে চায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×