লেক প্লাসিড ছবিটা অনেক্ই দেখেছেন। তেমনি একটা লেকের নাম লেক মাধবপুর।

ছবির মত সুন্দর। পাহাড়ী টিলার মাঝ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। অনেক দিন আগে এখানে এসেছিলাম এবং এসেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম লেকের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে। এবারও ছুটে গিয়েছিলাম পুরাতন প্রেমের টানে। মাধবপুর লেকে যেতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থেকে লাউয়াছড়া অভয়ারণ্য হয়ে পাহাড়ী পথের উঁচু নীচু পথ পেরিয়ে যেতে হয়। যাওয়ার সময় ফাও দেখে নিলাম লাউয়াছড়া। লাউয়াছড়া থেকে একটা ছোট পাহাড়ী রাস্তা ধরে উচু নীচু পথ পেরিয়ে যেতে হয় মাধবপুর। আসার সময় লাউয়াছড়া দেখে কিছুটা হতাশ হলাম। আগে কী গভীর জঙ্গলই না ছিল। এখন যত্র তত্র গাছ কাটা। জঙ্গলের অনেক স্থান ফাঁকা। তেমন কোন পশুপাখী চোখে পড়ল না। লাউয়া ছড়ার মাঝ দিয়ে চলে গেছে রেললাইন ও মহাসড়ক। ছবি দেখুন।

জানা গেল বেড়ায় ক্ষেত খায়। এখানে অভয়ারণ্য পাহাড়া দেয়ার জন্য একটা কমিটি আছে। সে কমিটিতেই আছে সে এলাকার সবচেয়ে গাছখোকো ব্যক্তি। তিনি আবার সরকারী দলেরই লোক। তবে সবচেয়ে অবাক হলাম যখন লাউয়াছড়া সম্বন্ধে জানতে সঙ্গী বন্ধু তার ল্যাপটপ থেকে উইকিপিডিয়ার প্রথম পাতা দেখাল। উইকিপিডিয়ায় লাউয়াছড়ার যে ছবি দেয়া আছে সেটা একটা চা-বাগানের। যে কেউ দেখলে মনে করবে লাউয়া ছড়া একটি চা-বাগান। ছবিটা নেয়া হয়েছে আবার ফ্লিকার থেকে এবং ঐ ছবিটা হল ৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী কুলাউড়া উপজেলার কোন এক চা-বাগানের। উইকিপিডিয়া একটি অভয়ারণ্যের স্থলে চা-বাগানের ছবি ছাপবে, সেটা বিশ্বাসই করা যায় না। লিংকটা তাই এখানে দিলাম।http://en.wikipedia.org/wiki/Lawachara_National_Park ছবিটাও দিলাম

। মাধবপুর লেক ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন মাধবপুর চা-বাগানের সম্পত্তি। সেখানেও এসেও মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো, যে দিকে তাকাই কেবল ফাঁকা পাহাড় আর গাছের কর্তিত গুড়ি। ছবি দেখুন।

সব দেখে শুনে মনটা ভাড়ি হয়ে উঠল। আমরা আমাদের বন সম্পদ কেবল উজার করিছি না, আমরা আমাদের দেশের সৌন্দর্যকেও নিস্পেষিত করে চলেছি। আমার মনের ভার লেক মাধবপুরের শীতল পানিতে স্নান করেও মুক্ত হল না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:১০