পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাতির দুজন সদস্যের মিলনের অন্তর্নিহিত প্রকৃয়ায় একটি শুক্রানুর সহিত একটি ডিম্বানুর নিষেকে যে কোষের সৃষ্টি হয় তাহাকে “জাইগোট” বলে। জাইগোট শুক্রানু ও ডিম্বানু উভয়ের জীনগত বৈশিষ্ট্যসমুহ ধারণ করে। জাইগোটের ডিএনএ’তে শতকরা ৫০ ভাগ জেনেটিক মেক আপ পিতা-মাতা থেকে আসে। উদ্ভিদ, প্রানী এবং মুক্তভাবে বিচরণক্ষম কিছু অর্গানিজমের জাইগোট তখন মাইটোসিস প্রকৃয়ায় বিভাজিত হতে শুরু করে।
প্রাণীকুলের ক্ষেত্রে জাইগোট থেকে ভ্রুনে পরিনত হবার ব্যাপারটুকু ব্লাষ্টুলা, গ্যাষ্টুলা এবং অর্গানোজেনেসিস নামক কয়েকটি ধাপে সংগঠিত হয়।
মনুষ্য ভ্রুন সৃষ্টির প্রথম চার সপ্তাহের মধ্যে মেরুদন্ড তৈরি হয়। পঞ্চম ও ষষ্ঠ সপ্তাহে এসে গর্ভধারিণীর রজঃনিবৃত্তি ঘটে। এসময় মানব ভ্রুন অর্গানোজেনেসিস প্রকৃয়ার ভেতর দিয়ে যেতে থাকে। হাত-পা সৃষ্টির উপসর্গ তৈরি হয়।
সপ্তম থেকে অষ্টম সপ্তাহে এসে মায়োজেনেসিস এবং নিউরোজেনেসিস প্রকৃয়া এমন এক ধাপে উন্নীত হয়, তখন মানবভ্রুন নড়াচড়া করতে শুরু করে। দেহে চোখ সৃষ্টি হতে শুরু করে।
এভাবে আরও কিছু প্রকৃয়ার ভেতর দিয়ে দেহের গঠন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং ভুমিষ্টকালীন সময় নিকটবর্তি হতে থাকে। অবশেষে ৭ থেকে ১০ মাসের ভেতর একটি পূর্ণাঙ্গ মানব শিশু ভুমিষ্ট হয়।
××××××××
উপরোল্লিখিত বিজ্ঞানটুকু ব্যবহার করে একটি জাতির জন্মপ্রকৃয়া বিশ্লেষণ করা যাক।
শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালী তথা বাংলাদেশী জাতির জনক হিসাবে ডাকা হয়। বর্তমানে যদিও অনেকেই শেখ মুজিবুর রহমান কে জাতির জনক হিসাবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন, কিন্তু তাদেরকে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিস্থাপক হিসাবে নতুন কারো নাম প্রস্তাব করতে বলা হলে পিছিয়ে যান। সুতারাং তত্ত্ব বিশ্লেষণের জন্য জনক হিসাবে একমাত্র উপযুক্ত প্রতিনিধি হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে ধরা হল। (বাঙালী/বাংলাদেশী নিয়ে ক্যাচাল লাগাইলে ধরিয়া পোন্দাইয়া দিব!)
আমরা জানি, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে নয়মাস যুদ্ধ করে বাংলাদেশের জন্ম হয়। উপরোল্লিখিত বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বিশ্লেষণের জন্য পিতৃ অংশ হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতৃ অংশের জন্য পাকিস্তানকে ধরে নিলে তত্ত্বটুকু বুঝতে সুবিধা হবে।
দেখা যাচ্ছে, শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের উপর উপুর্যপুরি উপগত হয়ে বাঙালী জাতির জন্ম দিয়েছে। একটি মানবভ্রুন সাধারণত ৭ মাসের পর ভুমিষ্ট হবার উপযোগী হয়ে যায়। বাংলাদেশ নামক ভ্রুনটি নয়মাস সময় ধরে ভুমিষ্ট হবার প্রকৃয়া ধাপে ধাপে সম্পন্ন করেছে।
১৯৭১ সালের শুরুর দিকে শেখ মুজিবুর রহমান কতৃক পাকিস্তানের জঠরে বাংলাদেশ নামক ভ্রুনটির নিষেকে জাইগোটের সৃষ্টি হয়।
সমাজ বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলে থাকেন, পাকিস্তান সামাজিক জীবনের পবিত্রতা রক্ষায় অক্ষম ছিল। পাকিস্তানের বহুগামিতার কথা সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যায়ে অধ্যায়ে বর্ণীত রয়েছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, পাকিস্তানের বহুগামিতার সুযোগ নিয়ে গোলাম আযম, খাজা খয়ের উদ্দিন, মতিউর রহমান নিযামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ পাকিস্তানের পূর্ব অংশে উপগত হয়েছিল।
ফলশ্রুতিতে একটি জটিল প্রকৃয়ায় দুটি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শুক্রানু কতৃক একটি ডিম্বানু নিষিক্ত হয়ে পড়ে।
ডারউইনের বিখ্যাত তত্ত্ব “প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ: যোগ্যতমের জয়” অনুসারে জাইগোটটি মাইটোসিস প্রকৃয়ায় বিভাজিত হবার বদলেএকটি সবল এবং বড় অংশ আরেকটি দুর্বল ও ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সবল অংশটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের শুক্রানুর বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হতে থাকে। ক্রমান্ময়ে বড় অংশটি অমরার দখল নিয়ে নিতে থাকে, এবং দুর্বল অংশটিকে কোনঠাসা করে পায়ুপথের দিকে ঠেলে দিতে থাকে।
ধীরে ধীরে দুটি অংশই মাতৃজঠরে বেড়ে উঠতে থাকে। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বরে সবল অংশটি স্বাভাবিক প্রকৃয়ায় ভুমিষ্ট হয়-দুর্বল অংশটি জায়গা না পেয়ে পায়ুপথে পৃথিবীর আলো দেখে।
সবল অংশটির নাম দেয়া হয় বাঙালী তথা বাংলাদেশী আর দুর্বল অংশটিকে রাজাকার প্রসুত জামায়াত-শিবির নামে অভিহিত করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০০৭ বিকাল ৩:২৯