যদি নতুন/রিকন্ডিশন গাড়ি (কার) কিনতে চান, তাহলে এর অনেকগুলো পয়েন্ট আপনার নাও লাগতে পারে, কিন্তু পুরনো (সেকেন্ডহ্যান্ড) গাড়ি কিনতে গেলে এই পোষ্টটায় একটু চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন।
যে ব্র্যান্ডের গাড়িই কিনুন, আপনার বাজেটের উপরে মুলতঃ এর মডেল নির্ভর করবে। আপনার বাজেট বেশী হলে নতুনতর মডেল, কম হলে পুরাতন এর দিকে দেখতে হবে। সাধারনভাবে চলতি গাড়িগুলোর মধ্যে টয়োটাকে আমি প্রাধান্য দেই, কারন দেশের যে কোন জেলায় এমনকি উপজেলাতেও এর সার্ভিসিং/পার্টস পাবেন যাঅন্য ব্র্যান্ডগুলোর ক্ষেত্রে দুস্প্রাপ্য। তবে ইদানিং নিশান, হোন্ডা –এগুলোর ক্ষেত্রেও কোন কোন জায়গায় উপরক্ত সুবিধাগুলো স্থানবিশেষে পাওয়া যাচ্ছে।
নতুন হলে আপনার বাজেট অনুযায়ী, কিন্তু পুরাতন কার কিনলে ৯৬-এর চেয়ে পুরাতন মডেল কেনা উচিত না।
চালানোর সুবিধা ও ট্রাফিক জ্যামের কারনে অটো-গিয়ার সাজেষ্টেড। এসি সুবিধা ও গতি-এর জন্য ১৫০০ সিসি সাজেষ্টেড। এর কম হলে ফুয়েল কম কঞ্জিউম করবে, কিন্তু এসি পার্ফর্মেন্স ভালো নাও হতে পারে। আর এর বেশী হলে বাৎসরিক ট্যাক্স একটু বেশী পড়বে।
চেষ্টা করবেন দালাল ছাড়া মুল মালিকের কাছ থেকে কেনার।
প্রথমত গাড়ির কাগজপত্র। কাগজের সাথে গাড়ির চেসিস নম্বর, ইঞ্জিন নম্বর, সিসি, রঙ মিলাবেন। কতদিন পর্যন্ত আপডেট আছে দেখবেন।
গাড়িতে যেগুলো দেখবেনঃ
>এর ইঞ্জিন পার্ফর্মেন্স (ওভারহলিং ইঞ্জিনসহ না কেনাই ভালো),
>গিয়ার ফাংশন, অনেক ভালো ইঞ্জিনের গাড়িও দুর্বল গিয়ার এর কারনে ভালো পারফর্ম করতে পারে না।
> বডি (কোন মেজর রিপেয়ার আছে কিনা), রঙ পরিবর্তন করা হয়েছে কিনা -হলে কি কারনে,
> এসি পার্ফর্মেন্স(ঠান্ডা কেমন হয়, হিটার কাজ করে কিনা, মুল যন্ত্রাংশ কতদিন আগে পরিবর্তিত),
> টাইরয়েড, রেডিয়েটর, ফ্যান, ব্রেক সিষ্টেম, টায়ার-এর কন্ডিশন।
> হুইল এলাইনমেন্ট ও চেসিস -কোন বড় এক্সিডেন্ট আছে কিনা বোঝার জন্য,
> দরজা-বনেট-ডিকি -এর লাইনিং (কোন এক্সিডেন্ট করে থাকলে বোঝার জন্য)।
> উইন্ডশীল্ড (ঘোলা বা স্ক্র্যাচ আছে কিনা), ব্যাক শীল্ড, উইন্ডো গ্লাস।
> বিভিন্ন অটো পার্টসের পার্ফর্মেন্স (গ্লাস, সাইড মিরর ইত্যাদি)।
> সিএনজি কনভার্টেড হলে ভাল কোন কোম্পানী থেকে করা কিনা।
এরপর ইন্টেরিওর দেখবেন, মূল সীট, দরজার ভিতরের কাপড়/লেদার-নব, ষ্টিয়ারিং হুইল এবং ভিতরের গন্ধ।
গাড়ি অবশ্যই চালিয়ে দেখবেন। চুড়ান্ত করলে রাতেও চালিয়ে দেখবেন এর গ্লাস ও লাইট-এর পার্ফর্মেন্স দেখার জন্য।
এছাড়া অন্যান্য বিষয়গুলো, যেমন শক এব্জর্ভার, রীম, ব্রেক, সাউন্ড সিষ্টেম, সিট কভার, বাম্পার, স্পয়লার, ফগ লাইট, ইঞ্জিনের ইঞ্জেক্টর –ইত্যাদি দেখতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে এগুলো বড় ব্যাপার মনে হয় না, যেহেতু এর অনেকগুলোই সহজে চেঞ্জ করা যায় বা কেনার পরে করতে হয়, এছাড়াও অনেকে কেনার পরে নিজের পছন্দ অনুযায়ী চেঞ্জ করে থাকেন।
যার থেকে কিনবেন, তার কাছে গাড়ির ইতিহাস (মামলা, এক্সিডেন্ট, সাধারন ত্রুটি) ইত্যাদি জেনে নিন। উপরে বর্নিত বিষয়গুলোর যে কোনটি/গুলোর জন্য একই মডেলের বিভিন্ন গাড়ির মধ্যে দামের অনেক পার্থক্য হতে পারে।
সব শেষে আবার গাড়ির কাগজপত্র। পেপারস্এর কপি নিয়ে নিজে বিআরটি-এ তে চেক করবেন (মূল ভলিউম থেকে, দালাল ছাড়া)।
ক্রয় এর পরে দ্রুত গাড়ির কাগজ-পত্র নিজ নামে করে নিবেন।
আর সব শেষে, গাড়ি কেনা হলে আমাকে দাওয়াত দিবেন। আপনার গাড়িতে করে মাওয়া ঘাটে ইলিশ-ভাজা খেতে যাবো।
(পোষ্টে অনেকগুলো ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করেছি। প্রকৃত অর্থ বোঝাতে প্রতিশব্দের চেয়ে এগুলোই আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছিলো, তাই।)