somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলা ফিল্ম কেন আমাদের মন মত হচ্ছেনা ? সিনেমাখোররা আসেনতো !!!

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক হলো সমালোচনা। এবার ক্ষ্যান্ত দিব তাহলে। যারা ভাবে তারা ভাবতেই থাকে। ভাবনার শেষ নেই। ভেবে কাজ করাটাই আমার উদ্দেশ্য। বাংলা ফিল্ম কেন আমাদের মন মত হচ্ছেনা ? কি করলে এর শেষ মিলবে। আসুন সমাপ্তি বের করি, বন্ধ করি বাজে সমালোচনা।

কবিগুরু বলেছেন, উপদেশ দেওয়া সহজ, কঠিন হলো উপায় বের করা।


অডিয়েন্স কি চায় ?
বাংলা ফিল্মে তা আছে কিনা ?
থাকলে কতটুকু ?
কিভাবে আনা যেতে পারে ?
আমরা কি আনতে বাধ্য করতে পারিনা ?

অডিয়েন্স কি চায় ?

যত ভালো সিনেমা আপনি বানান না কেন, সর্বদা আপনাকে যেটা মাথায় রাখতে হবে সে হলো পাবলিক। যদিও আমি ওইসব আবাল পাবলিক পছন্দ করিনা যারা বাংলাফিল্মের ডাউনলোড লিঙ্ক খুজে আর বাংলা মিডিয়াকে গালাগালি করে। আবাল তারাই যারা বাংলা ফিল্ম না দেখে, আন্দাজের উপরে, কিছুটা মুখে মুখে শুনে, নিজেকে প্রচুর মেধাবী ভেবে, পোষ্টার দেখে, এবং অবশ্যি মনের মাধুরি মিশিয়ে বাংলা ফিল্মের সমালোচনা করে থাকে। সেক্ষেত্রে আবালগুলোকে বাদ দিয়ে যেসব মানুষ ফিল্ম দেখে তাদের আমরা অডিয়েন্স হিসেবে আক্ষায়িত করে আলোচনা করি।

ইদানিং বন্ধুসহ হলে গিয়ে সিনেমা দেখলাম। ইংলিশ,বাংলা, কোলকাতার মুভি, সকল ধারাই দেখলাম। গোটা দশেক বন্ধু নিয়ে সমপরিমান বাংলা নাটক দেখলাম।

আমার দৃষ্টিকোন থেকে অডিয়েন্স-এর টপ ১০ চাহিদা দিলাম।

১। একটা সুন্দর চেহারার নায়িকা।
২। পরিপুর্ন কমেডি এবং রোমাঞ্চ।
৩। অসাধারন মেলোডি ও সাড গান।
৪। একটা ভিন্নধারার গল্প।
৫। সুপুরুষ।সুন্দর হাসি এবং লম্বা নায়কের প্রাধন্য বাংলাতে বেশী।
৬। খুব কমন কিন্তু গভীরের দৃশ্য।
৭। টানটান সংলাপ
৮। আবেগ। অশ্রু ঝরাতেই হবে।
৯। অসমতা,ব্যার্থতা,এবং তা থেকে বের হয়ে আসার কৌশল
১০। এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা যা ৯০ % মানুষের কাছে কমন। যেমনঃ প্রেম,

মোটামুটি এরকমের ১৩১ টা পয়েন্ট আমি নোট করেছি। এই জিনিষগুলো আমি বেশি দেখেছি।

এবার একটু নিচের দিকে নেমে দেখি, বেশ বড়সড় একটা জনতা জুড়েই সেরা ৫ টা জিনিষ। যদিও এগুলো সব ফিল্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না।

১। সাকিব খান ও অপু বিশ্বাস
২। একটি ধর্ষন দৃশ্য।
৩। যেকোন একটা দৃশে যে কাউকে বেশ হিংস্র হিসেবে প্রকাশ করা
৪। সততাকে উল্লেখযোগ্য করে দেখানো।
৫। অশ্লীন গান

যাই হোক, এই হলো বাংলাদেশি, সকল প্রকার মুভিখোরদের চাহিদা। যদিও ১ মাসের অভিজ্ঞতায় বলছি। সামনে এব্যাপারে আরোও আলোচনা করতে পারবো।

বাংলা ফিল্মে তা আছে কিনা ?

আগে প্রচুর বাংলা ফিল্ম দেখা হয়েছে। নতুন গোটা ৫০ দেখার পর যা বুঝলাম।

১। একটা সুন্দর চেহারার নায়িকা।

==> সময় ফিরছে। লাক্সেরগুলো মাঠে নামছে। ন্যাকামিটা বাদ দিলে দাঁড়িয়ে যাবে। ফারুরিকে ছেড়ে তৃষা আরও কিছু কাজ বাড়াতে পারে। পুরোনোদের ভিতরে পুর্নিমা এখনো নিয়মিত, বাজারও তার পক্ষে আছে। শাবনুর আর মৌসুমীর সাস্থের দিকে খেয়াল দেওয়া উচিত। অপুর সময় আর থাকবেনা।

২। পরিপুর্ন কমেডি এবং রোমাঞ্চ।
==> দিলদারের গতের পর থেকে আর আসেনি। কিন্তু আনতে হবে। দারুচিনি দ্বিপ এই জন্য অডিয়েন্স গ্রহন করেছে। কোলকাতার দেবের মুভি দেখলেই বোঝা যায়। কমেডিও রোমাঞ্চ কতটা পছন্দ, অডিয়েন্সের। বাংলা নাটকে হচ্ছে, বুদ্ধিদিপ্ততার সাথে এসব জিনিষ ফিল্মে নিয়ে আসতে হবে।

৩। অসাধারন মেলোডি ও সাড গান।
==> প্রজাপতি সিনেমা হলে যেকদিন চলেছে, তা হাবিবের ডুবের জন্য। ফারুকির থার্ড পারসনও হাবিবের দ্বিধার জন্য। আর যাও পাখি ও নিথুয়া পাথারের জন্য মনপুরা। হৃদয় খানের চাইনা মেয়ে ব্যবহার করার জন্য প্রিয়া আমার প্রিয়া সুপার হিট। কি যাদু করেছ বলনা মেলোডি গানটার জন্যও সিনেমা হিট। গান আছে, কিন্তু আরও প্রভাব বিস্তার করতে হবে।

৪। একটা ভিন্নধারার গল্প।

==> এটা বিশেষ করে বলার কিছু নেই। রিক্সেওয়ালা থেকে যারা আই এম ডি বিতে লিষ্ট করে তারাও এই জিনিষটার প্রতি দুর্বল। এটা খুব দরকার।

৫। খুব কমন কিন্তু গভীরের দৃশ্য।

==> গানের ক্ষেত্রে দেশের কমন জায়গাগুলো একটু বিশেষ করে দেখানো, যেখানে চাইলেই যেতে পারে। এবং পছন্দের স্থান যেমন, সমুদ্র,নদী,কাশবন,বালুচর, ইটের ভাটা, শর্ষের ক্ষেতে, কৃষঞ্চুড়ার নিচে, নার্সারিতে, এগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে।

৬। টানটান সংলাপ।
==> খুব দেখেছি, বাবা-মা, প্রেমিক প্রেমিকা, ভিলেন নায়কের কনভারশেষনটা দর্শক খুব মনযোগ সহকারে দেখে। ওখানে সংলাপের কিছু চেঞ্জ আনতে হবে।
তাছাড়া নায়ক নায়িকার হিংসে-হিংসি খেলাটা দর্শক আনন্দের সহিত গ্রহন করে। উত্তম সুচিত্রার মুভির কথাকাটি থেকে শুরু দর্শক আজও তা চায়। কিন্তু সেটুকু চাহিদাও আমরা দিতে পারছিনা।

৭। আবেগ। অশ্রু ঝরাতেই হবে।

===> বাংলার দর্শক শৌখিন দুক্ষ প্রিয়। কষ্টে তাকে থাকতেই হবে। তাই সিনেমার চরিত্রের দুক্ষগুলোকে নিজের করে নিয়ে জল ঝরতে তারা বেশ পছন্দ করে। অঞ্জন চৌধুরির ছোত বউ, মেজ বঊ, এই বঊ সিরিজটা দেখেনি এমন বাংলা সংসারি মহিলা পাওয়া মুসকিল। যতবার চলবে তারা ততবার দেখবে। কারন আমরা কাদতে ভালবাসি।
কাজী হায়াতের কাবুলিওয়ালা। আর ছুটির ঘন্টা আমরা গ্রহন করেছি সাদরে।

৮। অসমতা,ব্যার্থতা,এবং তা থেকে বের হয়ে আসার কৌশল

===> কিছু উপায় বের করে দেওয়া। ধরেন ভিলেনের সাথে ঝগড়া। ওইখানে মারামারিটাই বাংলা ফিল্মের মুখ্য। কিন্তু বুদ্ধি করে ভিলেনকে বোকা বানিয়ে বেচে আসাটা দর্শকের মুখে একতা মৃদু হাসি এনে দেয়।

গবীর ধনী, প্রেমে ব্যর্থতা, প্রিয়জন মারা যাওয়া ইত্যাদি কমন জিনিষ থেকে বের হয়ে আসার একটা অভিনব উপায়।

৯। এবং বিষয় নিয়ে আলোচনা যা ৯০ % মানুষের কাছে কমন। যেমনঃ প্রেম,

===> রবীন্দনাথকে নিয়ে বানালেই হবেনা। কয়জন জানে ভাবতে হবে। এমন কিছু সেন্স অফ হিউমার আপনার কাজে লাগাতে হবে যাতে দর্শেকের না ভেবেই ব্যাপারটা বুঝতে পারে। যেমন একজন পুলিশ অফিসারকে আপনার পরিচয় করাতে হবে, তার অফিসিয়াল ড্রেস পরিয়ে। এরকম কিছু জিনিষ রাখতেই হবে। সাস্পেন্স রক্ষার ক্ষেত্রে আলাদা।

১০।সিনেমার পাবলিসিটি।

== সঙ্গিত বাংলা টাইপ আমাদের একটা চ্যানেল দরকার। যেখানে সারাদিন ধুধু সিনেমা নিয়েই আড্ডা হবে। বিজ্ঞাপন ছাড়া অডিয়েনশ টানা খুব কষ্টের।

১১। সুদর্শন নায়ক, লম্বা ও সুন্দর হাসির প্রাধন্য বেশি

==> বাংলাই মেয়েরা নিজে যাই হোক বিয়ের ক্ষেত্রে বা রুচির ক্ষেত্রে অস্মভব বাচবিচার প্রিয়। সেই পিছুটান থেকেই খাট নায়কদের গ্রহন করতে চায়না। কষ্টে করে, না পেরে। সুন্দর হাসিটা ছেলেরা নকল করে। প্রেয়সীকে শুনায়। আমার উত্তম কুমারের মত হাসতে ইচ্ছে করে। রাজ্জাকের মত গ্যাবাইডিং এর প্যান্টের সাথে শোয়েটার পরে, চা খেতে ইচ্ছে করে। শালমান শাহের মত ঘাড়ে গামছা দিতে ইচ্ছে করে।

এই যে বিষয়গুলো উল্লেখ করলাম, এই জিনিষগুলো যে বাংলা ফিল্মে নেই তা না। আছে কিছু তাতে যত্নের ছাপ নেই, অপরিপক্কতা এবং আরও বেশ কিছু সমস্যার তা ফুটে উঠছে না। ৪৫ % লজিক বাংলা ফিল্ম ধারন করলেও বাকিটুকু করেনা। সেটা করাতে হবে।

আজ আর নয়। বাকিটা পরে একদিন আলোচনা করবো।

আমার সব থেকে পছন্দের এশিয়ান নায়িকা।





রাইমা সেন
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:২৯
৪৮টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজী মুক্ত সামু!!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২







মনপুরা মুভিতে একটা ডায়ালগ ছিলো যে, গাজী বেটারে তুমি চিনো না, বেশি ফাল পাইরো না। এদিকে ব্লগের গাজীকে সবাই চিনে, যারা লাফালাফি করে তারা ব্যবস্থা নেয়,গাজী কিছু করতে পারে না,ব্যান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মবিদ্বেষের উদ্দেশ্য-বিধেয়

লিখেছেন জটিল ভাই, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

গত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসুন সবাই মিষ্টিমুখ করুন

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০৪



কোণ খুশিতে যদি কেউ জিজ্ঞাষা করেন, তবে বলব আপনি আপনার মত করে ভেবে নিয়ে খান। তবে কোন মিষ্টিটা খাইলেন , তা জানাতে ভুইলেন না কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×