somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ট্রোল ফুটবলের লিজেন্ডরা

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ফুটবল নিঃসন্দেহে এই গ্রহের জনপ্রিয়তম খেলা। আর তাই ফুটবল নিয়ে ট্রোলিং বা পঁচানির কালচারটাও বেশ জমে উঠেছে। বিশেষ করে এই ইন্টারনেটের যুগে ফেসবুক এবং অন্যান্য ওয়েবসাইটে নানারকম ছবি এবং মিমিতে, সরস এবং ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যের মাধ্যমে ফ্যানরা ফুটবল ট্রোলিংকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। ফুটবলে কখনই বর্ণিল চরিত্রের অভাব ছিলো না। ক্রিকেটের মত এখানে এত নিয়ম মেনে চলার বাধ্যবধকতাও নেই। তাই কেউ মারমুখী আচরণ করে, কেউ বিদঘুটে ড্রেস পরে, কেউ ডাইভ দিতে গিয়ে ধরা খেয়ে মুখোমুখি হন ট্রোল আদালতের! আজকে পরিচয় করিয়ে দেব ট্রোল ফুটবলের বিশিষ্ট কিছু চরিত্রের সাথে।

Emile Heskey:


সাবধান! আপনি এখন Lord heskey'র মুখোমুখি হয়েছেন। হ্যাঁ, ট্রোল ফুটবলের জগতে তিনি এই নামেই পরিচিত। তার প্রকান্ড শরীর এবং পাথুরে মুখভঙ্গির কারণেই এমন নামের উৎপত্তি। ইংল্যান্ডের এই প্রাক্তন স্ট্রাইকার এখন খেলছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউকেসল জেটস টিমে। হলিউডে যেমন চাক নরিস, বলিউডে রজনীকান্ত, ট্রোল ফুটবলে তেমনই এক মহা মহানায়ক এমিল হেস্কি। উদাহরণ স্বরূপ এই ছবিটি দেখুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন ট্রোল ফুটবলের জগতে সম্রাট হেস্কির প্রতিপত্তি!



Victor Valdes: ভিক্টর ভালদেস গোলকিপার হিসেবে খুব একটু খারাপ না। গত বছরের ফিফা নির্বাচিত সেরা দশ গোলকিপারের তালিকাতেও সে ছিলো। তাহলে কেন এত ট্রোলিং বার্সেলোনার এই গোলকিপারকে নিয়ে? কারণ হচ্ছে তার হাস্যকর সব ভুল। গত মৌসুমে স্প্যানিশ সুপার কাপে বল রিসিভ করতে গিয়ে পজেশন হারিয়ে গোল খেয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে শিরোপা উপহার দেয়া অথবা চাম্পিয়ানস লীগের ফার্স্ট লেগে পিএসজির বিরুদ্ধে বাউন্স মিস করে গোল খাওয়া, এসব অতুলনীয় কীর্তির কারণে ট্রোল ফুটবলে তার গ্রহণযোগ্যতা কিংবদন্তীর পর্যায়ে চলে গেছে।

ভিক্টর ভালদেস লা লিগা ছেড়ে চলে যেতে চাইলে প্রতিপক্ষের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে দেখুন এই মিমিতে,



Fernando Torres: স্প্যানিশ এই স্ট্রাইকার খেলে থাকেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের বড় দল চেলসির হয়ে। স্ট্রাইকার হিসেবে তার প্রতিভা নিয়ে কোন সংশয় নেই। কিন্তু ট্রোল ফুটবলের জগৎ কখনও কখনও বড় নির্দয়! দীর্ঘ ফর্মহীনতা আর অবিশ্বাস্য এবং হাস্যকর সব মিস তাকে লিজেন্ড না বানিয়ে পারেনি। অবশ্য সমর্থকদেরই বা দোষ দিবেন কিভাবে কেউ যদি নিচের ভিডিও ক্লিপের মত মিস করে!

তাকে নিয়ে একটি জনপ্রিয় মিমি,



John terry: ইংল্যান্ড এবং চেলসির এই নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডারের ওপর সব বিষয়ে নির্ভর করতে গেলে আপনি নির্ঘাৎ ফেঁসে যাবেন! ক্লাব সতীর্থ Wayne bridge যেমন ফেঁসে গিয়েছিলেন! তার স্ত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন টেরি। শেষতক তা এ্যাবর্শনের মত দুঃখজনক ঘটনায় পর্যবসিত হয়। আর ট্রোল ফুটবলের জগতে প্লেবয় হিসেবে স্থান পেয়ে যান টেরি!



Sergio busquets: বার্সেলোনার এই মিডফিল্ডার বিখ্যাত তার অভিনয়কলায় পারদর্শীতার কারণে। পায়ে একটু টোকা লাগলো তো পড়ে গিয়ে কেঁদে ককিয়ে বিপক্ষ দলের কত খেলোয়াড়কে যে কার্ড পেতে বাধ্য করেছেন তার হিসেব নেই। তার সুবিখ্যাত একটি ছবি যার কারণে সে আজ এত বিখ্যাত তা এরকম, দেখেন পড়ে গিয়ে আবার কেমন ফুঁচকি মেরে তাকায়!



Zlatan Ibrahimović: সুইডিশ ফুটবলার। এই মুহূর্তে তিনি ফ্রেঞ্চ ক্লাব পিএসজিতে খেলছেন। তবে পরের মুহূর্তে কোথায় যাবেন বলা মুশকিল! ক্লাব বদলানোতে তার এতই আগ্রহ! তার সম্পর্কে সবচেয়ে প্রচলিত বাক্য হল, Loyalty, what the fuck is this? এমনিতে তার ফুটবল প্রতিভা নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। বার্সেলোনা, মিলানের মত বড় বড় ক্লাবে খেলেছেন। করেছেন অসাধারণ সব গোল। গত মৌসুমে চাম্পিয়্যানস লীগে করা তার বাইসাইকেল ব্যাকভলিতে করা গোলটি তো ফুটবল ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে! তিনি প্রসিদ্ধ তার সুদীর্ঘ নাকের জন্যেও!



Luis Suárez: উরুগুয়ের এই প্রতিভাবান স্ট্রাইকারের বর্তমান নিবাস লিভারপুল। ফুটবল মাঠে তিনি কখন কী করবেন বলা মুশকিল। ২০১০ এর বিশ্বকাপে ঘানার বিরুদ্ধে হাত দিয়ে গোল বাঁচিয়ে দলকে পরাজয় থেকে রক্ষা করেছেন। ২০১২ তে প্যাট্রিক এভরাকে বর্ণবাদী গালি দিয়ে নিন্দিত এবং নিষিদ্ধ হয়েছেন। আর এই বছরে তার কীর্তি হল ইভানোভিচকে মাঠের ভেতর কামড়ে দেয়া!



সবশেষে বর্তমান ফুটবলের সবচেয়ে বর্ণিল চরিত্র Mario Balotelli


ইতালিয়ান এই স্ট্রাইকার এখন খেলছেন এসি মিলানের পক্ষে। তার সম্পর্কে স্বল্প পরিসরে কিছু বলা অসম্ভব। ব্লগার শূন্যতানিমের পোস্ট থেকে কিছু অংশ তুলে দিচ্ছি,
► বালোতেল্লির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ম্যানসিটি কোচ রবার্টো ম্যানচিনি বলেন, "ওর সাথে প্রতিদিন আলাপ করলে আমাকে সাইকিয়াট্রিস্ট দেখাতে হবে।"

► গোল্ডেন বয় পুরষ্কার জেতার পর তাঁর অনুভুতিঃ "পুরষ্কার পেয়ে ভালোই লাগছে, তবে আমি ছাড়া জেতার মত আর কেউ আছে নাকি?"

► পুরষ্কার পাবার পর দ্বিতীয় সেরা জ্যাক উইলশেয়ার সম্পর্কে বালোতেল্লি বলেনঃ "কি যেন নাম ওর? উইল... নাহ, ওকে চিনি না। তবে নেক্সট টাইম আর্সেনালের সাথে খেলার সময় ওর ওপর কড়া নজর রাখবো। পারলে ওকে আমার ট্রফিটা দেখাবো আর মনে করিয়ে দেব যে আমিই জিতেছি এটা, ও নয়।"

পুরো লেখাটা এখানে

সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। বালোতেল্লির তরফ থেকে আপনাদের জন্যে সামান্য সান্ধ্য আয়োজন,



ফুটবল ট্রোলিং এর স্বর্গে প্রবেশ করতে চাইলে এই পেইজে ভিজিট করুন, Troll Football

হ্যাপি ফুটবল ট্রোলিং! তবে সাবধান, নিজের দল হারলে ভুলেও এই পেইজে যাবেন না। তারা বলে, Don't come here if your team looses, you are gonna have a bad time!

সংযোজন: বার্সা ফ্যান হয়ে কোন রিয়াল মাদ্রিদের ফুটবলারকে ট্রোল করবো না তা কী হয়! আমি ভুলেই গিয়েছিলাম সার্জিও রামোস এর কথা!
sergio ramos: রিয়াল মাদ্রিদের এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বিখ্যাত হয়ে আছেন তার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উঁচু শটে পেনাল্টি মিস করার জন্যে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য ২০১২ এর চাম্পিয়্যানস ট্রফির সেমিফাইনালে বায়ার্নের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে নেয়া শটটি। রসিকে ফুটবলমোদীরা বলেন বলটি নাকি পৃথিবী ছেড়ে মহাশূন্যে পরিভ্রমণ করছে। চাঁদে বা মঙ্গল গ্রহেও যেতে পারে, সেটা নিশ্চিত না। তার সাম্প্রতিক কীর্তি হল কনফেডারেশনস কাপে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে এমন একটি হাই কিকে পেনাল্টি মিস করা।



পুনঃসংযোজন
Pepe: পেপেকে বলা হয় পেপে দ্যা এনিমেল। পর্তুগীজ এই ডিফেন্ডার খেলেন রিয়াল মাদ্রিদে। আমার ফেভারিট ট্রোল ফুটবল ক্যারেকটার। ইনি ফুটবল খেলার পাশাপাশি মারামারিতেও বেশ দক্ষ। এবং সেটা খুব উপভোগও করেন। রিয়াল-বার্সার শেষ মুখোমুখিতে দেখেছিলাম শেষ মুহূর্তে নেমেই একটা মারামারি লাগিয়ে দিয়েছিলো। মারামারি লাগার পর তার মুখে ছিলো তৃপ্তির হাসি! লাল কার্ড পাওয়া তার জন্যে নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার। কিন্তু কার্ড দেখালে তার প্রতিক্রিয়া কেমন হয়? এরকম অনেকটা,


সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০০
৪৩টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×