somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাইলস এর ইতিহাস, পারিবারিক ঐতিয্য, কিছু তথ্য ও অসাধারণ কিছু গানের লিরিকস !

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাইলস মানেই, শাফিন -হামিন। তাদের বাবা কমল দাশগুপ্ত । জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম স্বয়ং নিজে শুধুমাত্র কমল দাশগুপ্তকেই কবির অনুমতি ছাড়া নিজের লেখা গানে সুর বসানোর অধিকার দিয়েছিলেন। দুজনে ছিলেন একই গুরুর শিষ্য। দুজনেই উস্তাদ জমিরউদ্দিন খানের কাছে থেকে সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন।


কমল দাশগুপ্ত, সঙ্গীতে বিরল প্রতিভাবান একজন সৃষ্টিশীল মানুষ। খ্যাতির আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে নিরলস সাধনা করে গেছেন সঙ্গীতের, করেছেন একের পর এক নতুন নতুন সুরের সৃষ্টি। বাংলা, হিন্দি, উর্দু সঙ্গীতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন অতি উচ্চ আসনে। ক্ল্যাসিক্যাল, সেমি-ক্ল্যাসিক্যাল, নজরুল সঙ্গীত, শ্যামা সঙ্গীত, গজল, কীর্তন, ইসলামী ও আধুনিক গানসহ সঙ্গীতের নানা শাখায় করেছেন সৃষ্টিশীল ও মননশীলতার উজ্জ্বল এবং অবাধ বিচরণ। এই সুরস্রষ্টার সুর ও সঙ্গীতায়োজনে আছে প্রায় আট হাজারের(৮০০০) মত গান।

কমল দাশগুপ্ত, জীবনের একটা বড় অংশ কাটিছেয়েন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একান্ত সান্নিধ্যে। প্রায় চারশত(৪০০)র অধিক পরিমাণ নজরুলগীতির সুরকারও তিনি।

মাত্র ২০ বছর বয়সে এইচ.এম.ভি(The Gramophone Company of India where HMV represents ‘His Master’s Voice’) তে জয়েন করেন এবং প্রধান সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ ২৫ বছর কাজ করেন। যূথীকা রায়, হেমন্ত মুখার্জী, জগমোহন মিত্র, তালাত মাহমুদ ও ফিরোজা বেগম সহ অনেকেই উনার কাছ থেকে সঙ্গীতের তালীম নিয়েছেন এবং উনার সুরারোপে গান করেছেন। এছাড়াও প্রায় ৯০টির মত ছায়াছবিতে করেছেন সঙ্গীত পরিচালনা। এই উপমহাদেশে উনার সমকক্ষ কিংবা প্রতিদন্ধী একমাত্র উনি নিজে ছাড়া দ্বিতীয়টি আর কেউ নেই। সঙ্গীতের এই কিংবদন্তীর শ্রেষ্ঠত্ব তাই শুধু উনার নিজের সাথেই তুল্য।

শফিন হামিনের মা ফিরোজা বেগম, একমাত্র পরিচয় হিসেবে বলা যায় তিনি একজন নজরুল সঙ্গীত শিল্পী। এই একটি মাত্র পরিচয়ই উনার অন্য সব পরিচয়কে ম্লান করে দেয় নিমিষেই। উপমহাদেশ বিখ্যাত নজরুল সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী ও বিশিষ্ট গুরুজন হিসেবে সব মহলেই সমাদৃত তিনি। নজরুল সঙ্গীতে উনার জ্ঞান, দখল উনাকে খ্যাতির চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। যদিও আজন্ম খ্যাতির আড়ালেই থাকতে পছন্দ করেন তিনি। অনেকটা সময় কাটিয়েছেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সান্নিধ্যে।

লেখাগুলো পেয়েছি সামুর এই পোষ্টে : Click This Link

যাই হোক এই হইল গিয়া মাইলসের মা-বাপ, কথায় বলে বাপ কা বেটা, ওনাদের বেলায় মা-বাপ কা বেটা-বেটা ।

এবার মাইলস গড়ার ইতিহাস :

ফরিদ, হ্যাপি আখন্দ, কমল, মুসা, ল্যারি, ইশতিয়াক ও রবিন কে নিয়ে ১৯৭৯ সালে গড়ে উঠে ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। ঐ সালেই কিছু সদস্য ব্যান্ড ছেড়ে গেলে হামিন আহমেদ ও শাফিন আহমেদ মাইলস-এ জয়েন করেন। সেই-ই শুরু। আজকের এই বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ব্যান্ডটি অতিক্রম করেছে দীর্ঘ তিন যুগেরও কিছুটা বেশী সময়। দাপিয়ে বেড়িয়েছে দেশবিদেশের উন্মক্ত মঞ্চে। রেড়িও, টিভি কিংবা খবরের কাগজের রঙ্গীন পৃষ্ঠা জুড়ে এঁকে দিয়েছে তারুণ্যের হৃদপিন্ডের স্পন্দন। জয় করেছেন খ্যাতির পুষ্পমালা। হামিন আহমদে ও শাফিন আহমেদ, এই দুই ভাইয়ের হাতের ছোঁয়ায় বাংলাদেশের ব্যান্ড মিউজিকে শুরু হয়েছে সৃষ্টিশীল নান্দনিকতার আরেক অধ্যায়, যার নাম ‘মাইলস . . . . . .’


১৯৮২ এবং ১৯৮৬ তে ‘Miles’ & ‘A Step Farther’ নামে দুটি ইংলিশ অ্যালবাম প্রকাশ করে। ‘Miles’ শিরোনামের অ্যালবামটি তিনটি মৌলিক গানসহ সাতটি কাভার সং এবং ‘A Step Farther’ অ্যালবামে থাকে সাতটি মৌলিক গান ও তিনটি কাভার সং। এরই মাঝে হ্যাপি আখন্দ ব্যান্ড ছেড়ে চলে গেলে ১৯৮২ সালে কীবোর্ডিস্ট ও ব্যাক ভোকালিস্ট হিসেবে জয়েন করেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা কীবোর্ড বাদক ও একজন সফল সুরকার মানাম আহমেদ। এবং ১৯৮৭ সালে রক-স্টারটার মাহবুব রশীদ মাইলসের ড্রামার হিসেব জয়েন করেন।

বিভিন্ন রদবদলের মধ্য দিয়ে ১৯৯১ সালে হামিন, শাফিন, মানাম ও মিল্টন(On Drums)কে নিয়ে বাংলা ব্যান্ড মিউজিকে অনবদ্য সঙ্গীত রচনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বের হয় মাইলসের প্রথম বাংলা অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’। প্রথম বাংলা অ্যালবামেই শ্রোতা হৃদয়ে রক-ফিউশানের ঝড় তুলে দিয়ে শুরু হয় নতুন যাত্রা। ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রকাশের ২০ বছর পরে আজকের বর্তমান সময়ে একুশ শতকের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে ঐ অ্যালবামের একটি গানও পুরোনো মনে হয় না আবেদন কমে যায় নি এতটুকুও। ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘প্রথম প্রেমের মত’, ‘ঘরে লইয়্যা যাও’, ‘পাতা ঝরে যায়’, ‘এ মনতো আর মানে না’ কিংবা ‘গুঞ্জন শুনি’ এই বর্তমান সময়েও চূড়ান্ত রকমের আবেদন নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শ্রোতা থেকে শ্রোতা হৃদয়ে।

কথাগুলো কবি ও কাব্য এর পেয়েছি সামুর এই পোষ্টে : Click This Link

অ্যালবামঃ প্রতিশ্রুতি, প্রকাশকালঃ ১৯৯১
১. চাঁদ তারা/ লিরিকঃ কাজী ফারুক বাবুল, সুরবিন্যাসঃ মানাম
২. সে কোন দরদিয়া/ লিরিকঃ ফেরদৌস নাহার, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
৩. প্রথম প্রেমের মত/ লিরিকঃ ফেরদৌস নাহার, সুরবিন্যাসঃ হামিন
৪. সুপ্ত বাসনা/ লিরিকঃ শাফিন আহমদে, সুরবিন্যাসঃ হামিন আহমেদ
৫.গুঞ্জন শুনি/ লিরিকঃ শাফিন আহমেদ, সুরবিন্যাসঃ শাফিন আহমদে
৬. শান্তি নেই/ লিরিকঃ হামিন আহমেদ, সুরবিন্যাসঃ হামিন আহমেদ
৭. আশা নিরাশা/ লিরিকঃ হামিন আহমদে, সুরবিন্যাসঃ হামিন
৮. ফিরে এলেনা/ লিরিকঃ কাজী ফারুক বাবুল, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
৯. কে ওরা রাজপথে/ লিরিকঃ হামিদুর রহমান, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
১০. পাতা ঝরে যায়/ লিরিকঃ অতনু চক্রবর্তী, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
১১. ঘরে লইয়্যা যাও/ লিরিকঃ কাওসার আহমেদ চৌঃ, সুর: হামিন
১২. এ মন তো আর/ লিরিকঃ মাহমুদ খুরশীদ, সুরবিন্যাসঃ মানাম

এবার প্রতিশ্রুতির কিছু কালজয়ী গানের লিরিকস :
বেশীর ভাগ ই http://gitikabya.wikispaces.com/ থেকে

চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি
চাঁদ তারা সূর্য নও তুমি
নও পাহাড়ী ঝর্না
যদি বলি ফুল তবুও হবে ভুল
তোমার তুলনা হয়না
তুমি না এলে এই পৃথিবী আমার
হারাবে আপন ঠিকানা
যদি দূরে যাও স্বপ্ন গুলো আমার
ভেঙ্গে যাবে জানো না
তোমার কথা ভেবে ভেবে
আমি গল্প কবিতা আর কাব্য লিখি
তোমার চোখে চেয়ে থেকে
সুন্দর আমার পৃথিবী দেখি
জীবন চলার পথে জানি
তুমি প্রথম দিয়েছ দেখা
ভুল বুঝে কোনোদিন
আমায় তুমি করোনা একা



সেই মিষ্টি হাসি ভুলতে পারিনি
সেই মিষ্টি হাসি ভুলতে পারিনি
তার মনের কথা জানতে পারিনি
দিন চলে যায়
রাত চলে যায়
এ মন তো আর মানেনা

ভালোবাসা সে তো শুধু মিছে আশা
আমি তো আগে বুঝিনি
আমারি মনে রেখে গেছে স্মৃতি
তা আজো মুছে ফেলিনি
তাকে ভালোবাসি বলা হলো না
সে যে চলে গেছে ফিরে এলো না
দিন চলে যায়
রাত চলে যায়
এ মন তো আর মানেনা

মায়াবি ঐ চোখে
কি যাদু আছে
করেছে আমায় উতলা
দুচোখে ভাসে শুধু তারই ছবি
তাই আমি এতো উতলা


শেষ বিকেলের আলোয়
শেষ বিকেলের আলোয়
বিষাদ সন্ধ্যায়
চলতে চলতে এই পথে
হঠাত্‌ প্রশ্ন জাগে
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়

মাঝরাতে ঘুম ভাঙে
চেয়ে দেখি আকাশে তারার মেলা
রাতের হিম ঝরে গাছের পাতায়
এমন সময়
হঠাত্‌ প্রশ্ন জাগে
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়

মাঝরাতে ঘুম ভাঙে
চেয়ে দেখি আকাশে জোসনার ধারা
উদাসী পাখি কাঁদে
চেয়ে শূন্যতায়
এমন সময়
হঠাত্‌ প্রশ্ন জাগে
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়
আর কতকাল খুঁজবো তোমায়


তুমি আমার চোখে চেয়ে
তুমি আমার চোখে চেয়ে
আশার প্রদীপ জ্বেলেছিলে
হাতে হাত রেখে বলেছিলে
চিরদিন আমার হয়ে থাকবে

আমি তো সেই দিন থেকে
তোমার পথ চেয়ে থেকে
ভালোবাসার স্বপ্ন দিয়ে
তোমাকে আমার করে নিলাম
কত স্বপ্নের মাঝে হারিয়ে গিয়ে
আশার প্রদীপ জ্বেলেছিলাম

হঠাত্‌ একদিন তুমি বললে
তোমাকে ভুলে যেতে
পেরিয়ে গেলে আমার প্রহর
কারো আশার প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে

আমি তো সেই দিন থেকে
তোমার আশায় থেকে
নিরাশে ফিরে গেলাম
তোমার স্মৃতি বুকে নিয়ে
কত স্বপ্নের মাঝে হারিয়ে গিয়ে
আশার প্রদীপ নিভে দিলাম


ধ্বিকি ধ্বিকি আগুন জ্বলে
ধ্বিকি ধ্বিকি আগুন জ্বলে
বুকে নদী বইয়া চলে
ও ও ও…

ভালোবাসি এতো তোরে আগে বুঝিনাই
এখন তোরে কোথায় পাই
উথাল-পাথাল বুকের মাঝে
কইরাছি কি ভুল
তাইতো এ মনটা ব্যাকুল

তোরে ছাড়া এ জীবন আপন কেহ নাই
এ কথা কেমনে বুঝাই
কোথায় গেলি ফাঁকি দিয়া বইলা গেলিনা
তাই মনে সুখ পাইলামনা


দিন গেলো আবার দিন ফিরে এলো
দিন গেলো আবার দিন ফিরে এলো
সেই তুমি গেলে আর ফিরে এলে না
কোথায় আছো তুমি কেমন আছো
একবারও কেন তুমি দেখা দিলে না

আমায় ছেড়ে যদি চলেই যাবে
ইশারায় কেন কাছে ডাকলে
এতো কাছে এসে ভালোবেসে
অজানায় কেন সরে থাকলে
জীবনটা আমার বদলে গেল
স্বপ্নগুলো আজ শূন্য হলো

তোমার চোখে আজ দুচোখ রেখে
সুখের আড়ালে বিরহ দেখি
আবার নতুন করে আসবে তুমি
সেই আশায় পথ চেয়ে থাকি

যে মন তোমায় ভালোবেসেছিলো
আগের মতই আজো রয়ে গেলো


একটা লিরিক এখান থেকে : Click This Link




প্রথম প্রেমের মত প্রথম কবিতা এসে বলে
হাত ধরে নিয়ে চলো
অনেক দুরের দেশে

কত পথ প্রান্তর ঘুরে ফিরেছি
পাইনিতো আজো তোমায়
সেই পথ চলা শেষ হলে
কাছে এসে যেও বলে
এই তো আমি
এই তো আমি

তোমারই আশায় বসে থেকেছি
নাম ধরে ডাক দিলে কে গো তুমি
ফিরে এলে আজ কাছে
ভালোবাসা যত আছে
দিলাম তুলে
দিলাম তুলে

প্রথম প্রেমের মত
প্রথম কবিতা এসে বলে
হাত ধরে নিয়ে চলো
অনেক দুরের দেশে

প্রথম প্রেমের মত

ব্যান্ড - মাইলস
এ্যলবাম - প্রতিশ্রুতি



এ মন কেন মানেনা
এ মন কেন
মানেনা মানেনা মানেনা
নিঝুম আঁধার
কাটেনা কাটেনা কাটেনা
প্রতীক্ষায় জীবন আমার
কেঁদে কেঁদে ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে

শূন্য বুকে এই মনে
ফিরে আসলো আবার
সোনালী স্বপ্নগুলো
কেন কাছে এসে আবার
হারিয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে

সারাক্ষণ ভাবি তোমাকে
কত যে আশায়
রূপালী কোনো মাঝরাতে
প্রেমেরই কবিতা কোথায়
হারিয়ে যায়
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ মন জুড়ে
হায় জ্বালা জ্বালা জ্বালা
এ অন্তরে
এতো নিষ্ঠুর কেন হলে



হঠাত ভোরে দেখে তোমার সাথে
হঠাত ভোরে দেখে তোমার সাথে
মিষ্টি হেসে তুমি চলে গেলে
রেখে গেলে শুধু স্মৃতিতাকে
আবার দেখে হবে সেই আশাতে
আমি তো সেই দিন থেকে
ভাবছি বসে আমি বলবো তোমায়
একি প্রেম নাকি ভালোবাসা
নাকি আমার মনের এক সুপ্ত বাসনা

আবার দেখা হলো তোমার সাথে
চোখের ভাষায় তুমি বুঝিয়ে দিলে
তোমার চোখের সেই দৃষ্টিতে
না বলা কথার যত ইঙ্গিতে
তুমি তো সেই দিন থেকে
ভাবছো বসে তুমি বলবে আমায়
একি প্রেম নাকি ভালোবাসা
নাকি আমার মনের এক সুপ্ত বাসনা

‘প্রতিশ্রুতি’র জনপ্রিয়তায় মাইলস জোয়ারে ভাসছে তখন। মাঝে এক বছরেও কিছুটা বেশী সময় বিরতি দিয়েই মাইলস আবারও তাদের নতুন প্রজেক্ট নিয়ে ফিরে আসে শ্রোতাদের কাছে। সেই সাথে ১৯৯৩ সালেই মাইলসে আবারও ফিরে আসেন ড্রামার মাহবুব রশীদ। শ্রোতাদের দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা মাথায় রেখেই শ্রোতা হৃদয়ের প্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকার দিয়ে ১৯৯৩ সালে মাইলস প্রকাশ করে তাদের দ্বিতীয় বাংলা অ্যালবাম ‘প্রত্যাশা’। অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে এবং শ্রোতা হৃদয়ের সমস্ত প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে মাইলসের ‘প্রত্যাশা’ অ্যালবামটি হয়ে উঠে সর্বাধিক জনপ্রিয় অ্যালবাম। ভিন্ন মাত্রার কথা, সুর ও সঙ্গীতায়োজনে খুব সহজেই শ্রোতাদের ভাললাগার শীর্ষ তালিকায় স্থান করে নেয় এই অ্যালবামটি। মাইলসের সর্বাধিক জনপ্রিয় গানগুলোও এই অ্যালবামেরই।

‘ফিরিয়ে দাও, আমারই প্রেম তুমি ফিরিয়ে দাও’,
‘নীলা’,
‘ধ্বিকি ধ্বিকি’,
‘যাদু’,
‘আর কতকাল খুঁজবো তোমায়’,
‘পাহাড়ি মেয়ে’ কিংবা
‘এক ঝড় এসে ভেঙ্গে দিয়ে গেল, তাই জীবনটা এলোমেলো/স্বপ্ন ভঙ্গ

ফিরিয়ে দাও, আমারই প্রেম তুমি ফিরিয়ে দাও’
শিল্পীঃ শাফিন আহমেদ
ব্যান্ডঃ মাইল্‌স : ‘প্রত্যাশা’

নিঃস্ব করেছ আমায়
কি নিঠুর ছলনায়,
তুমিহীনা এই হৃদয় আমার
একাকী অসহায়,
পেয়ে হারানোর বেদনায়
পুড়ে চলেছি সারাক্ষন
কেন তুমি মিছে মায়ায়
বেধেছিলে আমায় তখন।
ফিরিয়ে দাও আমার এ প্রেম তুমি ফিরিয়ে দাও।
ফিরিয়ে দাও হারানো দিনগুলো
এভাবে চলে যেওনা।
আমার হৃদয় জুড়ে, শুধু তুমি ছিলে
যত সুখ ছিল মনে
কেন মুছে দিলে।
অকারণ অভিমানে, তুমি চলে যেওনা
মায়াবী এ বাঁধন ছিড়ে,
দূরে সরে যেওনা।


নিলা ----- (মাইলস) : ‘প্রত্যাশা’

তোমার চোখে
চেয়ে দেখি আমি জীবনটাকে
ভালোবাসার স্মৃতিগুলো
তোমাকেই শুধু চায়
কিছু কথা
কিছু আশা নিয়ে জীবনটাতে
অনাবিল সব সুখের ছোয়ায়
তোমাকে কাছে চায়
ঐ সুদূর নিলীমায়
মন হারিয়ে যেতে চায়
যেথায় সময় থেমে রয়
তোমারি আশায়

নিলা তুমি কি চাও না হারাতে ঐ নিলীমায়
যেখানে দুটি মন এক হয়ে ছবির মত জেগে রয়
নিলা তুমি কি জানো না আমার হৃদয়ের ঠিকানা
যেখানে তোমার আমার প্রেম মিলে মিশে এক হয়

ফুলের মত
সৌরভে ভরিয়ে দিয়ে
তোমায় আমি ভালোবেসে
আরো কাছে পেতে চাই
দুরন্ত প্রেম ঝর্না ধারারই মত
ছুটে চলে অবিরত
তোমার ঠিকানায়
ঐ সুদূর নিলীমায়
মন হারিয়ে যেতে চায়
যেথায় সময় থেমে রয়
তোমারি আশায়

নিলা তুমি কি চাও না হারাতে ঐ নিলীমায়
যেখানে দুটি মন এক হয়ে ছবির মত জেগে রয়
নিলা তুমি কি জানো না আমার হৃদয়ের ঠিকানা
যেখানে তোমার আমার প্রেম মিলে মিশে এক হয়



কত স্বপ্ন ছিলো দু’চোখে
কত স্বপ্ন ছিলো দু’চোখে
কত আশা ছিলো এই বুকে
কত প্রেম কত কথা
কত হাসি গান
সে হাসি নেই তো আজ
হয়ে গেছে মিলান

এক ঝড় এসে ভেঙে দিয়ে গেল
তাই জীবনটা এলোমেলো

বেদনায় কেঁদে উঠে
মন যে আমার
ব্যথার সাগরে মিশে
হয়ে একাকার
এক ঝড় এসে ভেঙে দিয়ে গেল
তাই জীবনটা এলোমেলো

কাঁদাতে তবু আজো বেঁচে আছে হায়
স্মৃতির স্রোত এসে থমকে দাঁড়ায়
এক ঝড় এসে ভেঙে দিয়ে গেল
তাই জীবনটা এলোমেলো

তারপর প্রায় তিন বছরের দীর্ঘ বিরতি। এই বিরতির মাঝেই আমেরিকা থেকে মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলো নিয়ে ‘বেস্ট অব মাইলস’ শিরোনামে একটি অডিও সিডি প্রকাশ করে ব্যান্ডটি এবং এটিই বাংলাদেশী কোন ব্যান্ডের প্রথম সিডি প্রকাশ। ঐ সময়টাতে ভারত সহ দেশ-বিদেশের প্রচুর কনসার্টে অংশগ্রহণ করে মাইলস। ১৯৯৬ সালে ‘প্রতিশ্রুতি’ এবং ‘প্রত্যাশা’র ব্যাপক সফলতার পরে মাইলস তাদের ব্যান্ডের পঞ্চম ও বাংলা তৃতীয় অ্যালবাম ‘প্রত্যয়’ তুলে দেয় শ্রোতাদের হাতে। জনপ্রিয়তার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এই অ্যালবামটিও জনপ্রিয় ও বৈচিত্র্যময় গানের সমাহারে ভরপুর। সর্বাধিক জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘তুমি নাই’, ‘এ সময়’, ‘ফ্রাসট্রেশান’, ‘এইতো সেদিন’ ও ‘ভুলবোনা তোমাকে’ উল্লেখযোগ্য।

‘প্রত্যয়’ অ্যালবাম প্রকাশের মধ্য দিয়ে ড্রামার মাহবুব রশীদ ব্যান্ড ছেড়ে চলে গেলে সেই বছরই মাইলসের ড্রামার হিসেবে জয়েন করেন জিয়াউর রহমান তূর্য। এবং এখন অব্দি ড্রামার হিসেবে মাইলসের সাথে সম্পৃক্ত আছেন সফল ভাবে।


অ্যালবামঃ প্রবাহ, প্রকাশকালঃ ১৯৯৯

১. পিয়াসী মন/ লিরিকঃ দীপন, সুরবিন্যাসঃ মানাম আহমেদ
২. পারিনা বোঝাতে/ লিরিকঃ মাহমুদ খুরশীদ, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
৩. স্বপ্নীল এই রাতে/ লিরিকঃ দীপন, সুরবিন্যাসঃ হামিন আহমেদ
৪. তুমি কি সুখী/ লিরিকঃ মানাম আহমেদ, সুর: মানাম ও বাপ্পী
৫. হ্যালো ঢাকা/ লিরিকঃ লতিফুল ইসলাম শিবলী, সুর :শাফিন
৬. প্রিয়তমা/ লিরিকঃ অনিন্দ, সুরবিন্যাসঃ হামিন আহমেদ
৭. বিষ্ময় যাত্রা/ লিরিকঃ মাহমুদ খুরশীদ, সুরবিন্যাসঃ শাফিন
৮. শেষ ঠিকানা/ লিরিকঃ লতিফুল ইসলাম শিবলী, সুর: হামিন
৯. মিছে আশা/ লিরিকঃ ইকবাল আসিফ জুয়েল, সুরবিন্যাসঃ বাপ্পী
১০. নীরবে কিছুক্ষণ/ লিরিকঃ আসিফ ইকবাল, সুরবিন্যাসঃ মানাম
১১. পলাশীর প্রান্তর/ লিরিকঃ লতিফুল ইসলাম শিবলী, সুর: শাফিন
১২. অনামিকা/ লিরিকঃ অনিন্দ, সুরবিন্যাসঃ শাফিন আহমেদ

সব শেষে আবারও কৃতজ্ঞতা একজন অসাধারণ ব্লগারের প্রতি :
Click This Link
এবং একটি পরিচ্ছন্ন সাইট : http://gitikabya.wikispaces.com/

সব শেষে আমার পক্ষ থেকে আমার খুব প্রিয় একটা পোষ্ট :
ব্যান্ড সংগীতের ইতিহাসে কিছু কালজয়ী গানের লিরিকস
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৭
১৮টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগে তো পানি দিতনা মারার আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে।

লিখেছেন আহসানের ব্লগ, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪


আগে তো পানি দিতনা শেষ নিস্বাশের আগে। এখন ভাত পানি খাওয়াইয়া মারে। আর শামীম মোল্লা ভাইয়ের কপালে অবশ্য অত্যাচার ছাড়া কিছু জোটে নাই। “ভাই আমারে আর মাইরেন না বলে অনুনয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনাকে থাকতে দেয়ায়, আপনি ভারতের উপর কতটুকু রেগেছেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৩



"শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো-ম্যানসল্যান্ডে ঘোরাফিরা করেছে; আশা করছে, যদি কোন বিএসএফ ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত প্রবেশ করার ব্যবস্হা করে;" ইহা ছিলো ১ জন "নতুন মুক্তিযোদ্ধা"... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ এবং ২০২৪ এর হানাদার ও রাজাকারকে সমর্থন করা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০০



১৯৭১ সালের হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ তাদের দেশে নিয়েগেছে। ২০২৪ এর হানাদার আমাদের দেশের সম্পদ বিভিন্ন দেশে নিয়েগেছে। কারণ আমাদের দেশই এদের দেশ। ১৯৭১ সালের হানাদার ছিলো ভিনদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যা আর আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া বিবেক

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬


একটা গল্প প্রচলিত আছে এমন: রমজান মাসে বাংলাদেশে বেড়াতে এলেন উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিক। কোনো এক রোজাদারকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনারা সারাদিন না খেয়ে থাকেন কেন?
উত্তরে রোজাদার বললেন, আমরা স্র্রষ্টার... ...বাকিটুকু পড়ুন

হতভাগ্য তোফাজ্জল

লিখেছেন আনু মোল্লাহ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৩৪

ঘটনার সাথে দুজন ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
কিন্তু এতে সকল পক্ষের দায় মোচন হয়ে যায় না। এরা যদি ছাত্রলীগ নেতাই হয় তবে তারা বিচারের আগে হলে পুনর্বাসিত হলো কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×