আপনি কি শিক্ষিত চাকরীজীবি মেয়েকে লাইফপাটনার করতে চান?
আমাদের দেশে দিন দিন শিক্ষিত নারীদের সংখ্যা বাড়ছে। পড়াশুনা শেষ করে বিয়ের আগেই অনেক নারী বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্টানে কাজ করছে। তাদের বেশীর ভাগ পরিবারের আর্থিক অভাব-অনটনের কারনে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। বাবা বৃদ্ধ হলে, উপার্জনসক্ষম ভাই না থাকলে বা বাবা মারা গেলে নারীদেরকে চাকরী করে সংসার চালাতে হয়। কেউ কেউ ভাইয়ের সংসারে বোঝা না হবার জন্য চাকরী করে।
চলার পথে এই নারীদেরকে বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। আমাদের সমাজের কিছু শ্রেনীর মানুষ কর্মজীবি নারীদেরকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে। অনেকে আজে-বাজে মন্তব্যও করে। মন্তব্য করার আগে একজন নারী কেন চাকরী করছে, তার পরিবারে কোন সমস্যা আছে কিনা তা দেখা উচিত নয় কি?
মতিন সাহেবের পাঁচ মেয়ে। কুয়েত প্রবাসী মতিন সাহেবের সুখের সংসারে হঠাৎ করে কালো মেঘের ছায়া নেমেছে। চাকরী ছেড়ে দিয়ে দেশে এসেই অনেক দিন ধরে বেকার। বেকারত্বে কারনে বড় দুই মেয়েকে বাধ্য হয়ে চাকরী করতে হচ্ছে। মেয়েদের চাকুরীর টাকা দিয়ে তার সংসার চলে। চাকরী করতে গিয়ে মতিন সাহেবের মেয়েদেরকে অনেক কথা শুনতে হয়। বিভিন্ন আজে-বাজে মন্তব্য হজম করতে হয়।
চাকরী করে বাবার সংসার চালিয়ে মতিন সাহেবের মেয়েরা এখন বিবাহিত। সবাই সুখে আছে। শাশুরবাড়ী থেকে বাবা-মাকে ও তারা সাহায্য করে।
হে অবিবাহিত যুবক! এই রকম লক্ষ লক্ষ মতিন সাহেব আছে যাদের মেয়েরা চাকরী করে সংসার চালাচ্ছে। আপনি চাইলে চাকরীজীবি মেয়েকে বিয়ে করতে পারেন। আপনার সামর্থ থাকলে চাকরীজীবি বউকে চাকরী ছেড়ে দিতেও বলতে পারেন।
বর্তমানে সংসারে খরচের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় অনেক অবিবাহিত যুবক চাকরীজীবি মেয়েদেরকে বিয়ে করতে চায়। আমি মনে করি চাকরীজীবি মেয়ে বিয়ে করার আগে দুজনে বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কিভাবে সংসার সাজাবে তা ঠিক করা উচিত। আলাপ-আলোচনা না করে হুট করে বিয়ে করলে পরবতীতে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। বিয়ের পরে বউকে চাকরী ছেড়ে দিতে বাধ্য করলে বউয়ের সাথে ঝগড়া হতে পারে। তাই বিয়ের আগেই বিষয়টি পরিস্কার হওয়া উচিত।
সখের বসে চাকরী করছে এমন নারীর সংখ্যা খুব বেশী নয়। তারাও বিয়ের পরে চাকরী করবে এটাই স্বাভাবিক। মোট কথা আপনি যদি চাকরীজীবি নারীকে বিয়ে করতে চান তাহলে প্রথমে তার সাথে আলাপ-আলোচনা করুন। হবু বউয়ের অফিস টাইমিং জেনে নিবেন। চাকরীজীবি নারীকে বিয়ে করলে আপনার পরিবারে কোন সমস্যা হবে কিনা সেই দিকটাও একটু খেয়ালা রাখা উচিত।
পরিশেষে, চাকরীজীবী নারীদেরকে আমি সম্মান করি। তারা যদি ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক চলাফেরা করে ইসলামী রীতিনীতি মেনে চলে চাকরী করে তাহলে তাদেরকে সবাই সম্মান করা উচিত। আর যারা চাকরী করতে গিয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে তাদেরকে অবশ্যই ঘৃনা করা উচিত। তাদের কাছ থেকে দুরে থাকা উচিত।