
রাগ বা ক্রোধ ঈমানের বড় শত্রু। কারো থেকে প্রতিশোধ নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের সময় যে তোলপাড় সৃষ্টি হয় তাকে ক্রোধ বলে। ক্রোধ যেমনিভাবে মানুষের ঈমান ও আত্মার শত্রু তেমনিভাবে অনিয়ন্ত্রিত ক্রোধ জীবনেরও বড় শত্রু। ক্রোধের কারণে মানুষের পশুসুলভ আত্মা সক্রিয় হয়। চেহারা বিবর্ণ হয়। শিরা-উপশিরা ফুলে যায়, মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। যার কারণে অনায়াসে মুখে অশ্নীল কথা, অঙ্গে অশ্নীল কাজ প্রকাশ পায়। ক্রোধ একটি জ্বলন্ত অগ্নিশিখা, তাই মানুষ ক্রোধান্বিত হলে সে অগ্নি সহজে নেভে না ।
স্বামীর উত্তেজনা/বা রাগের মূহুর্তে স্ত্রীর কি করণীয়-----------------
@ আপনার স্বামী কখনও অসন্তুষ্ট হয়ে মুখ কালো করলে আপনিও তার সাথে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবেন না।
@ বরং তোষামোদ করে,অনুনয়-বিনয় প্রকাশ করে, হাত জোর করে যেভাবে সম্ভব তাকে খুশী করবেন।
@ ত্রুটি যদি আপনার না হয়ে স্বামীর হয়, তাহলেও তার উত্তেজনার জবাবে আপনি ও উত্তেজিত হয়ে যাবেন না।
@ বরং করজোড়ে নতি স্বীকার করে তার কাছে ক্ষমা চাওয়াকে নিজের জন্য গর্ব ও মর্যাদার বিষয় মনে করবেন।
@ আর ক্রটি যদি আপনার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে তো আপনার অসন্তুষ্ট হয়ে মুখ ফুলিয়ে রাখা চরম বোকামী ও নির্বু্দ্ধিতা ছাড়া কিছুই নয়।
@ আর এ জাতীয় আচরণের ফলেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনের দুরত্ব, মন কষাকষি ও বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়।
@ আপনার স্বামী কোন কারনে উত্তেজিত হয়ে গেলে তার মুখের উপর এমন কোন কথা বলা উচিত নয়, যার কারনে তার উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পায়।
@ উত্তেজনার বশে তিনি ভাল-মন্দ কিছূ বললে তা সহ্য করে নিবেন, এবং জবান দানে নিজেকে সম্পূর্ন নিবৃত্ত রাখবেন।
@ তিনি উত্তেজিত হয়ে অবিরাম বলতে থাকলেও নিরবে শুনে যাবেন।
@ উত্তেজনা অবদমিত হবার পর দেখবেন তিনি নিজেই আপনার কাছে লজ্জিত হবেন।
@ উপরন্তু আপনার প্রতি তার আকর্ষণ ও ভালবাসা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাবে এবং ভবিষ্যতে কখনও আপনার প্রতি উত্তেজিত হবেন না।
@ আর যদি স্বামীর উত্তেজনার জবাবে আপনিও উত্তেজিত হতে থাকেন, তাহলে পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটে এর ফলে শেষ পরিণতি কোথায় গিয়ে দাড়াঁবে তা বলা মুসকিল।
কোরআন ও হাদীসের আলোকে রাগ বা ক্রোধঃ
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হচ্ছে-রাগ সংবরণকারী এবং মানুষের ত্রুটি মার্জনাকারীদের জন্য আল্লাহ তায়ালার ক্ষমা ও জান্নাত নির্ধারিত। আল্লাহ পাক সৎ কর্মশীলদের ভালবাসেন।
রাসূলে আকরাম (সাঃ) বলেন, "তোমাদের কেউ যখন রাগান্বিত হবে সে যেন ওজু করে। কেননা, রাগ শয়তানের প্ররোচনা, শয়তান আগুনের তৈরী আর আগুন নিভে যায় ঠান্ডা পানিতে (মেশকাত)।
হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, "রাগ ঈমানকে এমনভাবে ধ্বংস করে যেমন পিপুল গাছের তিক্ত রস মধুকে বিনষ্ট করে।"
রাসূল (সাঃ) আরোও বলেছেন, যে ক্রোধকে বাধা দেয় আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তার আজাবকে বাধা দেবেন।
অন্য হাদীসে বর্ণিত আছে, "সে ব্যক্তি এমন শক্তিশালী নয় যে, মানুষকে ধরাশায়ী করে বরং সেই শক্তিশালী যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে।
জনৈক সাহাবী রাসূল (সাঃ) কে বললেন, আমাকে কিছু নসিহত করুন। তিনি বললেন, তুমি রাগ করোনা।
হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন, আমি রসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে আলস্নাহর রাগ থেকে কিসে রক্ষা করবে? তিনি বললেন, তুমি নিজে রাগান্বিত হয়ো না। রসূল (সাঃ) বললেন, যে আপন ক্রোধ দমন করে আলস্নাহ তায়ালা তার দোষ গোপন করেন। তিনি আরো বলেন, যখন তোমাদের কেউ রাগান্বিত হয় সে যেন বসে পড়ে, এতেও যদি রাগ প্রশমিত না হয় তাহলে যেন সে শুয়ে পড়ে। (মেশকাত)

তাই---------সংসারে-রাগারাগি নয়-----------স্বামীকে ভালবাসুন---------

স্বামীর উপর আস্থা রাখুন-বিশ্বাস রাখুন-------

সুন্দর জীবন যাপন করুন----------------------
আপনাদের দাম্পত্য জীবন হোক ধন্য হাসি-খুশি আর আনন্দে পরিপূর্ন।