somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চোরাবালি-
পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

তাল পাতার ঘড়ি চশমা

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শহুরে জীবনে শব্দটি বেশ বিচিত্রই বটে। আর যান্ত্রিকতায় ভুলে গিয়েছিলাম আমিও এই তালপাতা/নাড়িকেল পাতার ঘরি চশমার কথা।
জীবনের প্রথম বারের মত ঈদ কাটালাম বাড়ীর বাইরে; পরমাত্মীয় ছাড়া কুটুম আত্মীয়দের সঙ্গে। ঈদের পরদিন বের হয়েও ফিরে এলাম বৃষ্টির কারনে। যা হউক তারপরদিন পৌছে গেলাম বাড়ীতে। অলসতা স্বভাবে ঘুমিয়ে কাটালাম বিকেলটা। সন্ধ্যেয় বের হয়ে একবন্ধুর দোকানে বসে সময় কাটিয়ে ফিরে এসে অপেক্ষা পরবর্তীয় প্রহরের। সকালে দেরীতে ঘুম থেকে ওঠার সভ্যাস ছিল সারাটি জীবনের আর সেই ইচ্ছেয় ঘুমের ভান ধরে শুয়ে থাকা সকাল ৮টা পর্যন্ত। অবশেষে বিরক্তের সর্বসীমিয়া পৌছে বিছানা ত্যাগ। তত সময়ে দেখি বাড়ীর অনেক কাজই এগিয়ে চলেছে। বাড়ীর নারিকেল গাছ আর তালগাছগুলি পরিষ্কার করছে গাছি এসে।

ঘুম থেকে উঠে চিরকালের অভ্যাস গোসল সেরে নাস্তার জন্য বারান্দার জলচৌকিতে পাগুটিয়ে আমাদের আদঞ্চলিক ভাষায় যাকে বাবু মেরে বসা বলা হয় সেই ভাবে বসে আছি। ছোটভাইয়ের ছেলে আস্ত একটি নাড়িকেলে গাছের কান্ড বা ডাল যাকে আমাদের এলাকার ভাষায় বাইগে বলা হয় টেনে নিয়ে আসছে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে। উঠনে বসে বহু কষ্টে একটি পাতা ছিরে নিয়ে এসে পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে আদুরে গলায় বলছে ব্যুরো বাবা ঘলি বালাইয়া দাও। গ্রাম বড় চাচাদের বড় বাবা বা বড় চাচা বলে তাদের বিশেষ করে বাবার বড় ভাইকে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ভিন্ন, আমি ভাইদের মধ্যে দ্বিতীয় হলেও বড় ভাইয়ের মেয়ের কাছে বড় কাকু ছেলেদের কাছে বড় চাচা আর ছোটভাইদের বাচ্চাদের কাছে বড় বাবা। এর কারণ হল বড় ভাইয়ের ভাইয়ের মেয়ে যখন কথা বলা শেখে তখন সে কাকুদের মধ্যে আমাকেই বড় দেখে তাই বড় কাকু পর্যায় ক্রমে তার ছেলেরাও ওর কাছ থেকেই শিখে যায় এবং আমিই এখন কারো বড় কাকু/চাচা/বাবা।

হাত খেকে পাতাটি নিতেই দৌড়ে রান্না ঘরে গিয়ে আমার মা অর্থাৎ ওর দাদীর সঙ্গে প্রায় যুদ্ধ শুরু করেছে বটির জন্য- দাও ব্যুরো বাবা ঘলি বানাবে, পাতা কাটতে হবে। উপায়ন্ত না দেখে মা একটা চাকু দিয়ে গেলে পাতা থেকে শলা ফেলে দিয়ে বানাতে গিয়ে দ্বন্দে পড়ে গেলাম। দেখি আমি কিভাবে যে প্যাচ দেয় সেটি ভুলে গেছি। আর মনে পড়ে গেল ছোট বেলার সেই স্মৃতি গুলি। তখন শহরে লোকজন ঘরি পড়তো ফ্যাশন করে গ্রামে গঞ্জে কারো হাতে ঘড়ি থাকলে তো কথায় নেই। আর গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নাড়িকেল পাতা আর তালাপাতা দিয়ে ঘড়ি বানাতো, বানাতো চশমাও খেলনা হিসেবে। আর আমাদের বাড়ীতে আমার ভাবী অর্থাৎ বড় ভাইয়ের বউ সেই গুলোতে খুবই দক্ষ ছিল। ভাবী ছিল আমার থেকে বয়সে বছর ৫ এর বড়। কারণ আমার বড় ভাইয়ের বিয়ে দেয়া হয় ওর বয়স যখন ১৭/১৮ আর ভাবীর বসয় ১৩/১৪ এর বেশী না। সে হিসেবে ভাবী আমাদের খেলার সাথীও ছিল বটে।

এই সময় অর্থাৎ আষাঢ় শ্রাবণ মাসে যখন নাড়িকেল/তাল গাছ পরিষ্কার করা হয় তখন আমাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে কে কত সুন্দর করে ঘড়ি চশমা বানাতে পারত সে প্রতিযোগিতায় নেমে যেতাম আর কখনই আমরা পারতাম না উনার পারদর্শিতার কারনে। হুট করে একদিন ঘড়ি চশমার সাথে তালপাতা আর কাঠাল পাতার মিশ্রণে সুন্দর একটি মুকুট বানিয়ে ফেললে সেটি কে নেবে এই নিয়ে প্রায় যুদ্ধই শুরু হল আমার ছোট দুই ভাইয়ের মাঝে। অবশেষে সমাধান আসে আরেকটি বানিয়ে দেবে এই প্রতিশ্রুতিতে।

যা হইক অনেক চেষ্টা করে মথায় আনালাম ঘড়ি বানানোর প্যাচটি কয়েকবার চেষ্টার ফলে, যত সময়ে একটি খেলনা ঘড়ি তৈরী হল তত সময়ে ভাবী এসে হাজির। পাশে দাঁড়িয়ে বলল সাহেবর কি ঘড়ি কিভাবে বানাতে হয় মনে আছে নাকি আবার শিখিয়ে দিতে হবে?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×