somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাযহাব অনুসরণ করা ফরয? (দলীল ভিত্তিক ধারাবাহিক ----২য় পর্ব)

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে ‍বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি।

১ম পর্বের পর....................

স্মরণীয় যে, আল্লাহ পাক-এর বিধান পালন করাই মূলতঃ মু’মিন ও মুসলমানের কাজ। আল্লাহ পাক-এর বিধানকে পাওয়া রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যম ছাড়া সম্ভব নয়। এই কারণে আল্লাহ পাক নিজেই রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধানকে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

আবার রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধান ছাহাবা ও মুজতাহিদ ইমামগণের মাধ্যম ছাড়া পাওয়া এবং সঠিকভাবে আমল করা সম্ভব নয়। কারণ এমনও কিছু বিষয় আছে যা ইসলামের প্রথম দিকে নিষিদ্ধ না থাকলেও তা পরবর্তীকালে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষিদ্ধ করেছেন। যেমন- শরাব পান করা। এমনি করে বহু বিষয় আছে যা প্রথমে করা নিষিদ্ধ না থাকলেও পরবর্তীকালে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুতরাং প্রথম ও পরে কোন সময় কোন হুকুম হয়েছে এটা ছাহাবাগণের বর্ণনা ও তাঁদের আমলের মধ্যে পাওয়া যায়।

এ জন্য ইসলামের সঠিক বিধান হিসেবে উত্তমভাবে ছাহাবীগণের অনুসরণকারীদেরকে আল্লাহ পাক জান্নাতী মানুষ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ছাহাবীগণের থেকে সঠিক ইসলাম পাবার জন্য মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ করাটাই বিশেষ গুরুত্বের বিষয়। এর বহু কারণ রয়েছে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দু’টি বিষয় হচ্ছে-

১। ইসলামের পূর্বপর বিধান সঠিকভাবে নির্ধারণ ইমামগণই করেছেন।
২। ইসলামী বিধানের মান নির্ধারিত নিয়মে তথা ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নত হিসেবে ইমামগণের মাধ্যমেই পাওয়া যায়। যা কুরআন শরীফের আয়াত ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফে স্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না।

উদাহরণ স্বরূপ- নামাযের কোন কাজটা ফরয, কোনটা ওয়াজিব এবং কোনটি সুন্নাত এর বর্ণনা হাদীছ শরীফে সরাসরি বলা হয়নি। অথচ সকলেই জানে এবং মানে যে, সব কাজগুলো ফরয নয় অথবা সব কাজগুলো ওয়াজিব বা সুন্নত নয়।

সুতরাং ইসলামের পূর্বপর বিধানকে যেমন ছাহাবীগণের মাধ্যমে পাবার জন্য তাবিয়ীন এবং তাবি তাবিয়ীন তথা মুজতাহিদ ইমামগণের বর্ণনা থেকেই গ্রহণ করতে হবে। তদ্রুপভাবে ইসলামী বিধানের মান নির্ধারণ করে আমল করার জন্য মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ ব্যতীত দ্বিতীয় কোন পথ নেই।

ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তাবিয়ী ছিলেন। ছাহাবাগণের দর্শন লাভ করে ইসলামের সর্ববিধ বিষয় শিক্ষা গ্রহণ করেন। ছাহাবা ছাড়া বিশিষ্ট তাবিয়ীনদের থেকেও ইসলামী বিধানের শিক্ষা লাভ করেন। মাযহাবের ইমামগণের মধ্যে একমাত্র তিনিই তাবিয়ী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।

পৃথিবীতে যদি অনুসন্ধান করা হয়, তবে দেখা যাবে যে, বর্তমানে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতই একমাত্র সঠিক মু’মিন ও মুসলমান। আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সঠিক ইসলামের উপর চলার যে নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেটা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের লোকেরা অনুসরণ করে চলেন।

ইসলামের নামে অন্য যারা পরিচয় দিচ্ছেন তারা আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিধান গ্রহণ করছেনা। যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই, খারিজী, রাফিজী, মুতাজিলা, লা-মাযহাবী, সালাফী ইত্যাদি বাহাত্তর ফিরক্বা।

উল্লেখ্য, ইসলামের শত্রুপক্ষ সর্বদাই মানুষকে পথভ্রষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কুরআন শরীফ ও নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অস্তিত্বকে মিটিয়ে দেয়ার জন্য যেমন কাদিয়ানী সম্প্রদায় আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে তদ্রুপভাবে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব মিটিয়ে দেয়ার জন্য এক শ্রেণীর লোক যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলছে। কারণ, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত সম্পর্কে যদি লোক সমাজে কু-ধারণা সৃষ্টি করা যায়, তবেই মানুষকে পথভ্রষ্ট করা সহজ।

বর্তমান বিশ্বে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীগণ চার মাযহাবেরই অন্তর্ভূক্ত। হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী, হাম্বলী। পৃথিবীতে হানাফী মাযহাবের লোক বেশী। বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশে হানাফী মাযহাব ব্যতীত অন্য মাযহাবের অনুসারী নাই বললেই চলে। এই কারণে ইসলামের শক্রপক্ষ সর্বদাই হানাফী মাযহাবের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। কাগজপত্রে কখনও লিখছে যে, মাযহাবে বিশ্বাসী হলে কাফির হবে, ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি কাফির ছিলেন। নাউযুবিল্লাহ। হানাফীদের কোন আমল ঠিক নয় ইত্যাদি। ঈমানের পর যেহেতু নামাযের গুরুত্ব- এই কারণে হানাফীদের নামায সম্পর্কে বহু ভুল লিখা ছাপিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
তবে সর্বসম্মত কথা এই যে, কেউ যদি সঠিকভাবে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আইন বা জীবনব্যবস্থা খোঁজ করে তবে তার হানাফী মাযহাবের ফিক্বাহ শাস্ত্রের সাহায্য নিতেই হবে। কারণ হানাফী মাযহাব ব্যতীত অন্য কোন মাযহাবে খিলাফত ব্যবস্থার মাসয়ালাগুলো নেই।


---------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে।)

১ম পর্ব।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×