somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাযহাব অনুসণ করা ফরয? (দলীল ভিত্তিক ধারাবাহিক ---- ১ম পর্ব)

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে ‍বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি।


মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.
অর্থঃ- “তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ।”

অর্থাৎ আমলে-আখলাকে, সীরতে-ছূরতে প্রতিক্ষেত্রে আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, খতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। তথা সুন্নত মুতাবিক চলতে হবে। তবেই সঠিক পথের পথিক হওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, যে কোন মানুষ ইসলামের বিধান পেশ করলেই তা গ্রহণ করা যাবে না। কেবলমাত্র আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধানকেই গ্রহণ করতে হবে। এটাই আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,
ما اتاكم الرسول فخذوه وما نهاكم عنه فانتهوا واتقوا الله ان الله شديد العقاب.
অর্থঃ- “আমার রসূল তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছেন তা গ্রহণ কর আর যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক। এ বিষয় আল্লাহ পাককে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক কঠোর শাস্তিদাতা।”

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ইরবায বিন সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমি দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পর তোমাদের মধ্য হতে যে ব্যক্তি জীবিত থাকবে সে ইসলামের বহু বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ বা মতবিরোধ দেখতে পাবে। সুতরাং তখন তোমাদের জন্য একান্ত জরুরী হবে আমার সুন্নত এবং খুলাফায়ে রাশিদীনগণের সুন্নতের উপর আমল করা।” (আবূ দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, বণি ইস্রাঈল সম্প্রদায় পরস্পর দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিলো। আর আমার উম্মত তেহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। এই তেহাত্তর দলের মাত্র একটি দলই ভিন্ন আর বাহাত্তর দলই জাহান্নামে যাবে। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট জানতে চাইলেন ঐ (জান্নাতী) দল কোনটি? আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, ‘আমি এবং আমার ছাহাবাগণকে যারা অনুসরণ করবে একমাত্র তারাই জান্নাতী হবে।” (পবিত্র তিরমিযী, মিশকাত শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি শরীয়তের ছহীহ্ নিয়মের অনুসারী হতে চায় তার জন্য একান্ত কর্তব্য আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছাহাবাগণের অনুসরণ করা। ছাহাবাগণই উম্মতের মধ্যে অতি উত্তম। তাঁরা আত্মার দিক দিয়ে অতি পবিত্র। ইলমের দিক দিয়ে গভীর জ্ঞানের অধিকারী। মানুষকে দেখানোর জন্য তাঁরা কোন কাজ করেননি। আল্লাহ পাক তাঁদেরকে মনোনীত করেছেন আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সোহবত অর্জনের জন্য এবং দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য। সুতরাং তোমরা তাঁদের মর্যাদা সম্পর্কে অবগত হও এবং তাঁদের কথা ও কাজের অনুসরণ কর এবং যথাসম্ভব তাঁদের গুণাবলী ও চরিত্র মুবারককে গ্রহণ করো। কারণ তাঁরা হেদায়াত ও সীরাতে মুস্তাকীমের উপর দৃঢ় ছিলেন।” (পবিত্র মিশকাত শরীফ)

“হযরত ইমরান হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের মধ্যে সব চাইতে অতি উত্তম আমার যুগ। অর্থাৎ ছাহাবাগণ অতি উত্তম। এরপর তাবিয়ীনগণ। এবং তারপর তাবি তাবিয়নগণ উত্তম।” (পবিত্র বুখারী শরীফ)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার দর্শণপ্রাপ্ত মুসলমান তথা ছাহাবীগণ অথবা আমার ছাহাবাদের দর্শণপ্রাপ্ত তাবিয়ীনগণকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবেনা। (পবিত্র তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই ঘোষণার সমর্থনে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত শরীফও রয়েছে। যেমন, ইরশাদ হয়েছে, “ঈমান ও আমলের সর্বপ্রথম স্থান অধিকারী মুহাজির ও আনসার ছাহাবাগণ এবং উত্তমভাবে উক্ত ছাহাবাগণের অনুসারী সকলের প্রতি আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট এবং তাঁরাও আল্লাহ পাক-এর প্রতি সন্তুষ্ট।”


------------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৩৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

Testimony of Sixty- By Edward Kennedy বাংলাদেশের রক্তাক্ত সত্যের এক আন্তর্জাতিক স্বীকারোক্তি

লিখেছেন কিরকুট, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩




১৯৭১ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গভীর বৈপরীত্যের বছর। এটি যেমন ছিল অন্ধকার ও রক্তাক্ত, তেমনি ছিল সত্যের প্রতি অবিচল এক সময়কাল। এই বছরের গণহত্যা, শরণার্থী স্রোত ও মানবিক বিপর্যয়ের বিবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×