সবার জানা যে,
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে পাঁচ ও ছয় নম্বর অভিযোগে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
"পঞ্চম অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন।
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে হযরত আলী লস্করের বাসায় যান। কাদের মোল্লার নির্দেশে হযরত, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হন এক মেয়ে।"
কিন্তু এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাইব্যুনালের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল। ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, বিভিন্ন বাম দল এবং জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতাও কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এটি সবার জানা।
আর শিবিরের হরতালকে কোন পরোয়া না করে ব্লগার ও ফেসবুক এক্টিভিটিস নেটওয়ার্ক সহ বিভিন্ন সংগঠনের ডাকে হাজার হাজার জনতা মঙ্গলবার থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করছে সেটাও সবার জানা। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কেরাণীগঞ্জের ঘাটারচর গণহত্যার অভিযোগ সন্দোতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণে ওই অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের ওই অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করেই প্রসিকিউশন আপিল করা হবে এটাও সবার জানা।
আজকের এই গণ জাগরণের উত্তাপ কে জামাত শিবির এর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবীর ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সফলকাম করতে হবে রাজাকারের ফাসী চাই জামাত শিবিরের রাজনীতি বাতিল করে দিতে হবে। এই হলো সকল দেশবাসীর দাবী।
সকল দেশবাসী যখন এই দাবীতে উত্তাল তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কি হচ্ছে?
জানি যে ঢাকায় যেটা সম্ভব সেটা জেলা শহর গুলোতে সম্ভব নয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা কেন নীরব? দেশবাসী যখন এই আন্দোলনে একাত্ততা ঘোষনা করছেন তখন কেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের স্টুডেন্ট থেকে শুরু করে শিক্ষকরা পর্যন্ত ডিপার্টমেন্টাল পিকনিক নিয়ে ব্যাস্ত থাকবেন? কোন কারণে? জানি যে পিকনিকের পরিকল্পনা আগে থেকেই করা ছিল কিন্তু পিকনিকের আগে বা পরে তো আমরা সমাবেশ করে দেশবাসীর সাথে একাত্ততা ঘোষনা করতে পারি! আমি যখন আজ সারাদিন চেষ্টা করেও কাওকে পাইনি সমাবেশের জন্যে যে নাকি সাহায্য করতে পারবে তখন আমার বারবার রয়ের পরে কাদের মোল্লার দেখানো ভি সাইনটার কথাই মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন আমাদের এই নিরবতা অনুমান করেই ভি সাইন দেখিয়েছিল! কিন্তু আজ বিকালের পরে অনেকের কাছ থেকেই অনেক সাড়া পেলাম। তাই সাহস করে ইভেন্ট ক্রিয়েট করে ফেললাম।
কিন্তু সমাবেশ হয়নি এমন নয়। কিন্তু রাজনৈতিক দলের কিছু আতি নেতা পাতি খেতা আজ প্রেসক্লাবের সামনে কিছুক্ষণ যা করলো তাতে মনে হলো “তারা আইসে, খাইসে, গেসে মাঝখানে কিছুক্ষণ চিল্লাইসে” মাখন মুক্তমঞ্চের মতো বড় যায়গা থাকতে এই ছোট্ট যায়গায় সদর হাসপাতালের সামনে আজ যা হলো তা মানুষকে আকর্ষন করেনি বরং বিরক্ত করেছে। আর সেখানে ছিল না কোন স্টুডেন্ট ছিল না কোন সাধারণ মানুষ। ঢাকায় ও অন্যান্য যায়গায় যা হয়েছে তা হয়তো তাদের কল্পনাতেও নেই। অথচ গতকাল সেই মুক্তমঞ্চে ওলামার দল বিরাট ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করে সবাইকে বিরক্ত করেছে।
কিন্তু তাই বলে তো আমরা নিরব থাকতে পারি না! কোন তরুণ সমাজ নিরব থাকতে পারে না। আমি যাদের কে বলেছি শুধু একজন ছাড়া অন্য সবার কাছ থেকে আমাকে একটি কমন প্রশ্ন শুনতে হয়েছে।সেটা হলো “আপনি কি রাজনীতি করেন?” কেন কাদের মোল্লাসহ অন্যদের ফাঁসির দাবী শুধু রাজনীতির বিষয় হবে? এটা কি সাধারণ মানুষ চায় নি? আর কেনই বা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবী চাইলেই কাওকে কোন দলীয় ট্যাগ খেতে হবে? আর গোলাম আযমের মতো কুখ্যাত ও চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর জন্ম যদি ব্রাহ্মণবাড়িয়অ হয়ে থকে তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বীরমুক্তিযোদ্ধারাও জন্মেছেন! দেশের জন্যে প্রাণ দিয়েছেন। আসুন আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একত্র হই। এটি কোন সরকার বিরোধী আন্দোলন নয় বা ট্রাইবুন্যাল বিরোধী আন্দোলন নয়। সকল সাধারণ মানুষের দাবী এটি যা হলো “সব রাজাকারের ফাঁসি চাই।”
তাই সকল ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাসীদের বলছি যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকেন তারা নয় তারিখ শনিবার সকাল আটটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজের মূল ক্যাম্পাসে সমবেত হউন। শাহবাগে যদি মঙ্গলবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সাধারণ মানুষ দিনরাত সমবেত হয়ে থাকতে পারেন তাহলে আমরা কেন অন্তত দুই এক ঘন্টার জন্যে একত্র হয়ে সমাবেশ করতে পারবো না? জানি অনেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর ক্যাচালের ভয়ে আসতে চাইছেন না। কিন্তু আগে তো আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে! আমরা কাওকে রাজনৈতিক পরিচয়ে এলাউ করবো না। আসতে হবে সবাইকে একটি পরিচয়ে আর সেটি হলো আমি বাঙ্গালী।
(যারা এই ব্লগটি পড়ছেন তারা এই লেখাটি শেয়ার করুন ফেসবুকে। আপনার লিস্টে হয়তো বি বাড়িয়ায় কেউ থাকতে পারেন)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৫