somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধোঁয়া ধোঁয়া ভালোবাসা........... পর্ব- ১০

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব- ১
পর্ব- ২
পর্ব- ৩
পর্ব- ৪
পর্ব- ৫
পর্ব- ৬
পর্ব- ৭
পর্ব- ৮
পর্ব- ৯


আজকে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের রিইউনিয়ন।
তিতলি, তিতলির ব্যাচের সব মেয়েরা শাড়ি পরে বেশ সেজেগুজেই স্কুলে গিয়েছে। পুরনো ছাত্র-ছাত্রীদের হৈ হুল্লোরে পুরো স্কুল ক্যাম্পাস মুখোরিত। চারদিকে যেন আনন্দের বন্যা বইছে......


তিতলি খুব গুঁছিয়ে শাড়ি পড়েছে। সচরাচর তার শাড়ি পড়া হয় না। খুব বেশি হলে বছরে হয়তো ৩, ৪ বার এর বেশি তার শাড়ি পড়া হয় না।
তিতলির শাড়িটা খুব সুন্দর। একটা সুতি টাইপের নীল রঙের শাড়ি। শাড়ির রঙটাও খুব সুন্দর। একেবারে আকাশী না আবার একেবারে নেভি ব্লু না, অনেকটা ও্যশেন ব্লু এর কাছাকাছি বলা যায়। তিতলি খুব বেশি গয়নাও পড়েনি। কানে ছোট ছোট নীল রঙের কানের দুল, দুহাতে কয়েকটা আঙটি আর দুহাত ভর্তি করে কাঁচের চুড়ি পড়েছে।
তেমন আহামরি সাজগোজও সে করেনি। চুলগুলো ছেড়ে রেখছে, মুখে হালকা করে ফেসপাউডার ঘসেছে, চোখে একটু হালকা ব্লু শেড, তবে চোখে কাজল দিয়েছে গাঢ় করে, চোখের উপর চিকন করে আইলাইনার দিয়েছে আর পাপড়িতে হালকা মাশকারা, ঠোঁটে লাইট চকলেট কালারের লিপস্টিক........

তিতলি তার মতো করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। চারদিকে উৎসব উৎসব ভাব। স্কুল মাঠে বিশাল স্টেজ করা হয়েছে। সেখানে টিচারদের বক্তৃতা শেষ হলে কিছুক্ষন পর কনসার্ট শুরু হবে। সন্ধ্যার পরে মাঠে নাকি ফায়ার ওয়ার্কস হবে। স্কুলের এখনকার স্টুডেন্টরা একদিকে কিছু স্টল করেছে, অনেকটা মেলার মত।

তিতলি ঘুরোঘুরি করছে, চারপাশের আয়োজন দেখছে.....

"এই এই তিতলি" তিতলি পেছন ঘুরতেই দেখে একটু দূর থেকে সুপ্তি তাকে ডাকাডাকি করছে। তিতলি কাছে যেতেই সুপ্তি হরবর করে কথা বলা শুরু করলো।
> কিরে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছিস কেনো? আমাদেরকে কি একবারে ভুলে গেছিস নাকি? আমরা সবাই কত্ত মজা করে আড্ডা মারছি আর তুই কিনা ভেড়ার মত সারা স্কুল ঘুরে বেড়াচ্ছিস....!!!
> আরে তোদেরকে ভুলতে যাবো কেনো? আসলে আমাদের ফ্রেন্ডদের কাউকে দেখছিলাম না তাই একটু ঘোরাঘোরি করছিলাম।
> হুম। আচ্ছা তোর ঘটনা কি বল দেখি। আজকাল তো বেশ সুন্দর হয়ে গেছিস। মাশাআল্লাহ্ দিনে দিনে তো একবার ডানাকাটা পরী হয়ে যাচ্ছিস! ব্যাপার কি? হুম রুপের রহস্য কি? প্রেম-টেম করিস নাকি?
> কিযে বলিস না আবোল-তাবোল! আমার আবার রুপ বাড়তে যাবে কেন! আর প্রেম, কার ঠ্যাকা পড়েছে আমার সাথে প্রেম করতে আসবে! প্রেম-টেম করার সময় নাইরে।
> হুম বুঝি বুঝি, এত ঢঙের আলাপ করিস না। তিতলি তোকে আজকে যা সুন্দর লাগছে, কি আর বলবো! সব ছেলেগুলা তো তোর পেছনে ঘুরঘুর করবে! বিয়ের বয়স হয়ে যাচ্ছে, আমার এখনও কোন বয়ফ্রেন্ড হলো না। আয়হায় রে তিতলি সব ছেলে যদি তোর পেছনে ঘুরে তাহলে আমার কি হবে! আমার দিকে কি কেউ তাঁকাবে না, এই জীবনে কি প্রেম-ভালোবাসা আসবে না....!?!
> হা হা হি হি (হাসতে হাসতে অস্থির!) তোর পেছনে হাজার হাজার ছেলে ঘুরবে, টেনশন করিস না। তুই দেখতে কি পঁচা নাকি? তুই আমার চেয়ে অনেক সুন্দর।
> হুউউউউউম আচ্ছা। তাহলে কি আর করা, হাজার হাজার ছেলেরা একটু ঘোরাঘোরি করতে থাকুক। চল যাই, সবাই ওখানে বসে আছে।

তিতলি আর সুপ্তি হাসতে হাসতে এগোতে থাকলো......

অনেক পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হলো। সম্পা, কনা, বিন্তি, নাহিয়ান, আসিফ, বুশরা, ফারিয়া, রেজওয়ান, শাফকাত, বীথি, ফাহিম, শোভন, সোহান, তমাল, সিফতা, নিন্নি, সূচি, প্রান্তি, মৌরী, মাইশা, সাব্বির, তানভির, সাদাফ, এশা, দিপু, অনিন্দা, হিমি, অন্তরা আরো অনেকের সাথে দেখা হলো........

চুটিয়ে আড্ডা চলতে থাকলো। আড্ডা চলতে চলতে বন্ধুদের অনেক গোপন খবর বেড়িয়ে আসলো।
অন্তরা আর সাব্বির এর বিয়ে হয়ে গেছে। বিয়ে হয়ে গেছে বলতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেছে। সাব্বিরের মা ব্যাপারটা জানে, অন্তরার বাসায় কেউ এখনো জানে না। স্কুলে পড়ার সময় সবাই ভাবতো ওরা মনে হয় প্রেম করে। কিন্তু আসলেই যে এত গভীর প্রেম সেটা কেউ বুঝতেই পারেনি...........
ওদিকে এসএসসির পর থেকে নাকি এশা আর সাদাফ চুটিয়ে প্রেম করছে। আর এক বছর পরই নাকি তাদের বিয়ে।
আসিফ বেচারা সেই কবে থেকে বুশরার প্রেমে পড়ে বসে আছে, কিন্তু বুশরা কিছুই জানে না...........

সব বন্ধুরা ভীষন মজা করতে থাকলো। মাঝে সবাই বুশরাকে বলেই দিলো আসিফের ব্যাপারটা। বুশরা তো পুরো বেকুব হয়ে গেলো! যাই হোক, ওদের প্রেমের সূচনা ঘটলো.........

সন্ধ্যার পর থেকে ভীষন ফূর্তিবাজী শুরু হলো। কনসার্ট, গান-বাজনা, নাচানাচি, ফায়ার ওয়ার্কস আরো অনেক কিছু........

তিতলি অনেক রাত করে বাসায় ফিরলো, প্রায় পৌনে ১১টায়।
আনন্দের কোনো কমতি ছিলো না আজকে, তবুও তিতলির মাঝে একটা চাপা মন খারাপ ভাব কাজ করতে থাকলো। আজকেও দেখা হলো না বর্ষনের সাথে, আর কবে দেখা হবে? বর্ষন কেনো আসলো না আজকে? নাকি এসেছিলো, হয়তো তিতলির সাথে দেখা হয়নি.........

তিতলি জানেই না, একজন তাকে ঠিকই দূর থেকে দেখছিলো। আজকে একমূহুর্তের জন্যও তিতলি তার চোখের আড়াল হতে পারেনি, যা তিতলি একটুও টের পায়নি..........


(চলবে......)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:৪৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×