পর্ব- ১
পর্ব- ২
পর্ব- ৩
পর্ব- ৪
পর্ব- ৫
পর্ব- ৬
পর্ব- ৭
তিতলির পরীক্ষা শেষ।
এখন বলতে গেলে পুরোটা সময়ই অবসর কাটছে তার। গান শুনে আর গল্পের বই পড়ে বেশীরভাগ সময় কাটছে তার। এখন সেরকম পড়াশুনার চাপ নেই..............
বিকেলবেলা তিতলি ছাদে বসে ঝালমুড়ি খাচ্ছিল। হঠাৎ করেই স্কুলের রিইউনিয়নের কথা মনে পড়লো তার। সে ভাবলো বুশরাকে ফোন করবে। মোবাইলটা সাথেই ছিল। তাই মাথায় চিন্তাটা আসার সাথে সাথেই সে বুশরাকে ফোন দিলো---
> হ্যালো বুশরা
> কিরে তিতি, খবর কি? নাম্বার নিলি সেই কবে, আর ফোন করলি কিনা আজকে....!!!
> আগেই ফোন করতাম তোকে। আসলে পরীক্ষার কারনে ভীষন ব্যাস্ত ছিলাম।
> হুম বুঝি বুঝি, সব ঢং বুঝি। যাকগে কেমন আছিস বল
> এইতো আছি ভালোই। তুই আছিস কেমন? আর রিইউনিয়নের ব্যাপারে তো আর বললি না।
> হুম, আছি। আমার খবর নেয়ার সময় আছে নাকি তোর? যাই হোক, গেটআপের কথা বললে, মেয়েরা সবাই শাড়ি পড়বে।
> হুম। কি ধরনের শাড়ি?
> দেখাবো তোকে। কালকে কি তুই ফ্রি আছিস? এক কাজ করি, তুই আর আমি মিলে কালকে মার্কেটে যাই।
> ফ্রি আছি, কিন্তু মার্কেটে কেন?
> আরে শাড়ি কিনতে হবে তো।
> আচ্ছা ঠিক আছে। বাসায় আসিস।
> ঠিক আছে। কালকে সকালে আসছি।
> ok then, see you tomorrow. খোদাহাফেজ।
> খোদাহাফেজ।
রাতের খাওয়া শেষ করে তিতলি বারান্দায় হাঁটছিল।
ইকবাল সাহেব দূর থেকে মেয়েকে দেখছিলেন। কিছুক্ষন পর তিনি বারান্দার ইজিচেয়ারটাতে গিয়ে বসলেন। বসেই হাতের ইশারাতে তিতলিকে কাছে ডাকলেন।
> আমার পাশের চেয়ারটাতে বস মা।
> কিছু লাগবে বাবা?
> নারে মা, তোর সাথে একটু গল্প করবো। তোর কি কোন কাজ আছে এখন?
> না বাবা, ফ্রি আছি।
> আসলে কি আর বলবো মা, বয়স যত বাড়ে তার সাথে তাল মিলিয়ে মানুষের একাকিত্বও বাড়তে থাকে।
> হঠাৎ এই কথা কেন বাবা?
> বললাম আর কি, বয়স তো আমার কম হলো না। এতো বড় বাড়িতে পুরোটা সময়ই একাকী কাটে। একসময় তোর বিয়ে হয়ে যাবে, তুই তোর সংসার নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে যাবি। তখন তো এমন দুটো কথা বলারও কেউ থাকবে না। সত্যিই বড় একা হয়ে যাবো আমি.....................
> এসব কথা বাদ দাও তো বাবা। অন্যকিছু বলো।
> হুম। তা পড়াশোনা কমপ্লিট করে কি করবি ভাবছিস?
> শুরুতে তো চাকরিতেই ঢুকবো। ভালো কোন ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করার ইচ্ছা আছে।
> বাহ্, দারুন প্ল্যান করেছিস।
> বাবা রাত তো অনেক হলো, প্রায় সাড়ে ১১টার মতো বাজে। ওষুধ খেয়েছো তুমি?
> হ্যা খেয়েছি মা।
> তাহলে এখন ঘুমুতে যাও। খামোখা রাত জেগে শরীর খারাপ করার দরকার নেই।
> ঠিক আছে, যাচ্ছি মা। তুইও বেশী রাত জাগিস না।
বাবা চলে যাবার পর অনেকক্ষন পর্যন্ত তিতলি বারান্দায় পায়চারি করলো।
রুমে আসার পর কেন যেন কোনভাবেই তিতলির ঘুম আসছিল না।
কিছুক্ষন পর মেঝোফুপু তিতলির ঘরে আসলো।
> কেমন আছিস মা?
> এইতো ফুপু..........
> তোর কি মনটা খারাপ?
> ঠিক তা না। কেন যেন খুব অস্থির লাগছে আর ঘুমুতে পারছি না।
> কোন বিষয় নিয়ে কি খুব টেনশনে আছিস?
> তেমন কিছু না।
> থাক আর কথা বলতে হবে না। এক কাজ কর ঘরের বাতি নিভিয়ে চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পড়। আমি চুলে বিলি কেটে দিচ্ছি, ধীরে ধীরে ঘুম চলে আসবে।
> তোমার কোন অসুবিধা হবে না তো?
> আরে না
> আচ্ছা ঠিক আছে।
ঘরের বাতি নিভিয়ে তিতলি বিছানায় শুয়ে পড়লো। ফুপু চুলে বিলি কাটতে লাগলো। ধীরে ধীরে একসময় তিতলি ঘুমিয়ে পড়লো............
(চলবে.......)