আপনি একজন দ্বিতীয়প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।ক্রিকেটিয় দেশপ্রেমের মানদন্ডে আপনি কঠিনভাবে উত্তির্ন।কারন বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ সবার আগে করেন।সানি-তাসকিন নিষিদ্ধ হওয়ার খবর শুনেই কিবোর্ড নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছেন।বিশ্লেষন করে দেখিয়েছেন, ষড়যন্ত্র করে কিভাবে ৩ মিনিটি ৯টি বাউন্সার বল তাসকিনকে দিয়ে করিয়ে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। শুরু করে দিয়েছেন আইসিসি তথা ভারতের মুন্ডুপাত। আপনি সশ্রদ্ধ সালাম গ্রহন করুন।
কিন্তু সাবধান,ভারতকে গালি দিতে যেয়ে যে কাজগুলো করলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থেকে আপনি দেশদ্রোহীর তালিকায় পড়ে যেতে পারে।
১)যেহেতু আপনি সীমান্ত এলাকায় থাকেন না,তাই বিএসএফ প্রায় প্রতিদিন একজন করে বাংলাদেশী মারলে আপনি প্রতিবাদ করবেন না।।কারন ২/৩ হাজার টাকার লোভে ফকিন্নির বাচ্চারা গরু আনতে গিয়ে গুলি খায়।আপনার পাপা আপনাকে এই টাকা প্রতিদিন হাতখরচ দেয়।তাছাড়া কোলেষ্টরেল বেশী বলে গরুর বদলে আপনি মুরগী খান।
২)আপনি বাসায় ওয়াসার পানি খান।বিশুদ্ধ পানির দরকার হলে ফিল্টার মেশিন আছে, বোতলজাত পানি আছে।সুতরাং ভারত পানি না দিলে আপনার কিছু যায় আসে না।আপনার মাথায় ঢোকে না,ভারত পানি না দিলে সমস্যাটা কি?ওয়াসার থেকে পানি নিলেই পারে।সুতরাং উত্তারঞ্চল মরুভুমি হয়ে গেলেও আপনি প্রতিবাদ করবেন না।
৩)আপনি জানেন ৭১ এ ভারত আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। তাই নামমাত্র মুল্যে ট্রনজিট দিয়ে সেই ঋন পরিশোধ করার সুযোগ আছে।তাই এর প্রতিবাদ করা আর অকৃতজ্ঞ হওয়া একই কথা।
৪)আপনার বাসার ছাদে বিভিন্ন গাছ লাগিয়েছেন। তাই ভারতের আগ্রহে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে সুন্দরবন ধংশ হলেও আপনার কিছু যায় আসে না।আর বাঘ-হরিনতো চিড়িয়াখানায়ই আছে।আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেশী বিদ্যুৎ উতপাদন হলে আপনি নিরিবিচ্ছিন্ন খেলা দেখতে পারবেন।সুতরাং যারা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করে তারা আপনার খেলার শত্রু।
৫) আপনি জানেন ৮০০ কোটি টাকা লূট হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের,আপনার নয়।তাই এর প্রতিবাদ করা,আর অন্যের নানী মারা গেলে শোকে কান্না করা একই কথা।
৬)আপনি শুধু জুমার নামাজ পড়তে যান।কোর্ট রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বাদ দিতে পারে শুনেছেন,কিন্তু জুমার নামাজতো নিষিদ্ধ করার কথা বলে নাই।তাই এর প্রতিবাদ পরে করলেও চলবে।আর আপনি জানেন,যারা এর প্রতিবাদ করছে,তারা মৌলবাদী,জংগী।তাই আপনি তাদের সাথে নাই।
এই প্রতিবাদগুলো করলে সরকার তথা ভারত মাতা খুব রাগ করতে পারে তাই এগুলো মনে রেখে আপনি যত ইচ্ছা গালাগালি করুন,মিছিল করুন, কোনোই সমস্যা নাই। উপরন্তু আপনি পেয়ে যেতে পারেন এ যুগের বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি।
*উত্তেজনা বেশী বেড়ে গেলে আবার ইন্ডিয়ান এম্বাসি ঘেরাও করতে যাইয়েন না। ডান্ডার বাড়ি কিন্তু সবগুলাই পাছায় পড়বে,মাটিতে না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১২