somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কৃত্রিম টেলিপ্যাথি, মন নিয়ন্ত্রণের মারণাস্ত্র! -১

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই রাডার, এটম বোমাসহ নানা ধরণের যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সাথে পরিচিত হচ্ছে সারা বিশ্ব। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় টেলিপ্যাথি নিয়ে যান্ত্রিক গবেষণা। এর আগ পর্যন্ত টেলিপ্যাথি ছিল মনোঃযোগাযোগের প্রাকৃতিক উপায় বা বলা চলে অতিপ্রাকৃতিক উপায়! বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধের যুগ আর তখনই শুরু হয় কৃত্রিম উপায়ে শত্রুপক্ষের মনকে ট্রেস করার নানা উপায় আবিষ্কারের। এর জন্য বেশ কিছু ব্যয়বহুল প্রজেক্ট চালু করে আমেরিকা এবং রাশিয়া। আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রচুর অর্থ অনুদান দিতে থাকে তাদের দেশের প্রজেক্টগুলোতে।

এ গবেষণার শুরুতেই মানুষের মস্তিষ্ককে মেকানিক্যালী মডেল করা হয়। এটাকে একটা জটিল যন্ত্র বা কম্পিউটার হিসেবে চিন্তা করা হয় যা কিনা বিভিন্ন জটিল কাজ করতে সক্ষম এবং একে বিভিন্ন ছোট ছোট অংশে ভাগ করে পুনরায় জোড়া দেয়া যাবে এরকম একটা যন্ত্র হিসেবে মডেলিং করা হয়।

এরপর মানসিক যন্ত্রের দ্বারা রেডিও ট্রান্সমিশানের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে নিমিষেই যোগাযোগ করার প্রযুক্তি হিসেবে টেলিপ্যাথিকে বেছে নেয়া হয়। সাধারণতঃ টেলিপ্যাথি মেডিটেশানের মাধ্যমে দুটি মনের মাঝে সংযোগ তৈরী করে যার মাধ্যমে দুইজন মানুষের মধ্যে চিন্তা, আবেগ, চিত্র, তথ্য এসব আদান প্রদান করা সম্ভব হয় প্রচলিত পঞ্চইন্দ্রিয়ের সাহায্য ছাড়াই। মূলত ষষ্ট ইন্দ্রিয়ের যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবেই টেলিপ্যাথি সুপরিচিত। এই টেলিপ্যাথির মাধ্যমে শত্রুকে কনফিউজড করা, তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা বা জোর করে তার মনের পরিকল্পনা জানতে চাওয়ার চেষ্টা শুরু হয়।

পেন্টাগন টেলিপ্যাথিকে এক ধরণের শক্তিশালী বহুমুখী মারণাস্ত্র হিসেবেই গ্রহণ করে। তাদের স্নায়ুযুদ্ধের সমরাস্ত্র গবেষণায় কৃত্রিম টেলিপ্যাথি সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেতে থাকে।

এই মন নিয়ন্ত্রণের গবেষণার আওতায় বেশ কিছু প্রজেক্ট হাতে নেয়া হয়,

১। প্রথম ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক বিম অস্ত্রঃ

১৯৪০ সালের মাঝামাঝিতেই এ নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।
জাপানীজ “মৃত্যু রশ্মি”:
ইউ.এস. স্ট্র্যাটেজিক বোম্বিং জরিপের (প্যাসিফিক সার্ভে, মিলিটারি এনালাইসিস ডিভিসন, ভলিউম ৬৩) মতে জাপানের গবেষণা ও উন্নয়ন ফোর্স এক ধরণের রশ্মি আবিষ্কার করেছে যেটা ৫ থেকে ১০ মাইল দূরে অবস্থিত কোন অরক্ষিত ব্যক্তিকে হত্যা করতে সক্ষম। তারা এই রশ্মির নাম দিয়েছে ‘মৃত্যু রশ্মি’ (Death Ray). ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই প্রজেক্টের ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ মিলিয়ন ইয়েন।

[এরকম আরো গবেষণার কথা জানতে পারলে মনে হয় জাপানে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপটাকে আমাদের খুব বেশি অমানবিক নাও মনে হতে পারে। জাপানিরা যে ভীষণ রকমের অত্যাচারিত ছিল সেটা কোরিয়ার ইতিহাস ঘাঁটলেও খুঁজে পাওয়া যায়। কোরিয়ার শিশুদের জীবন্ত পুড়ে ফেলতো, কতশত কোরিয়ান নারী জাপানিজ সৈন্য কর্তৃক সম্ভ্রম হারিয়ে আত্মহত্যা করেছে তার কোন হিসেব নেই।]

২। মন মেনিপুলেশনে নাজি পরীক্ষণঃ
প্রজেক্ট চাটারঃ
দ্বিতীয় বিশযুদ্ধ শেষে জার্মানে প্রচুর শিল্পজাত এবং বৈজ্ঞানিক সামগ্রী পাওয়া যায় যেটা প্রমাণ করে যে নাজিরাও মন নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি নিয়ে গোপন গবেষণা করছিল। পরে আমেরিকান নেভাল টেকনিক্যাল মিশন তাদের বিজ্ঞানিদের নিয়ে শুরু করে চাটার প্রকল্প, এর কাজ শুরু হয় ১৯৪৭ সালে।

৩। প্রজেক্ট পেপারক্লিপঃ
আগেই বলেছি অনেক নাজি বিজ্ঞানী এবং ডাক্তার বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে এই নিয়ে এবং আমেরিকান আর্মি তাদেরকে আমেরিকায় নিয়ে যায় পেপারক্লিপ প্রজেক্টের অধীনে। প্রাক্তন নাজি বিজ্ঞানী ডঃ হাবার্টাস স্ট্রাগহোল্ডের নেতৃত্বে ৩৪জন নাজি বিজ্ঞানী এই ‘পেপারক্লিপ’ প্রজেক্টে চুক্তিবদ্ধ হয় এবং টেক্সাসের সান এন্টোনিওতে র্যা ন্ডলফ বিমান বাহিনী বেসে এই নিয়ে কাজ শুরু হয়।

৪। এরপর সিআইএ ১৯৫২ সালে ব্রেনের ইলেক্ট্রনিক স্টিমুলেশানের (E.S.B. – Electronic Stimulation of the Brain) মাধ্যমে মন ট্র্যাকিং, আচরণ নিয়ন্ত্রণ, প্রোগ্রামিং এবং গোপন অপারেশানের গবেষণা শুরু করে। এ প্রজেক্টের নাম মুনস্ট্রাক।


চলবে...
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×