তখন ক্লাস সিক্স এ কি সেভেন এ পরতাম। ক্লাসের বই ছাড়া অন্যান্য যে কোনো বইয়ের প্রতি ছিল আমার তুমুল আগ্রহ। যার বাসায় মেহমান যাইতাম তাদের সব পুরাতন বইয়ের বান্ডিল খুলে পড়ার বই বাইর করে পড়তাম। একবার এরকম অনুসন্ধান করতে করতে আমি একজনের বান্ডিল থেকে গুপ্তধনও বের করে ফেলেছিলাম
যাহোক আসল কথায় আসি। ষেই সময় আমাদের এলাকায় কিশোর কন্ঠ মানে একটি মাসিক পত্রিকা পাওয়া যেত। অনেক সুন্দর সুন্দর বিভাগ ছিল যেমন হাসির বাকসো, মোরা বড় হতে চাই, কবিতা, ছোটগল্প, কিশোর উপন্যাস ইত্যাদি। মাঝে মাঝে ধারাবাহিক উপন্যাসও থাকতো। কবিতা গুলো অধিকাংশই ছিল ছড়া টাইপ। আর পাঠকদের লেখা পাঠাবার ব্যাবস্থাও ছিল। এই ছড়াগুলো পড়তে পড়তে মনে হলো আরে, আমিও তো লিখে পাঠাতে পারি আমিও লেখক হতে পারি। এভাবে একটা ছড়া লিখে আমি এতটাই সিরিয়াস হয়ে গিয়েছিলাম যে আমি কিভাবে বই ছাপাবো তাও প্রায় ফাইনাল করে ফেলেছিলাম।
এবার তো ছড়া পাঠাবার পালা
তার পরদিন আবিস্কার করলাম ঠিকানা ভুল করিয়া বসিয়া আছি
আসল ঠিকানা ছিল ৬০/সি, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০। এখনো মনে আছে!!! আমি আবুল ১০০০ না লিখে ১১০০ লিখে বসে আছি। কি যে দুঃখ পাইছিলাম।
এরমধ্যে আবার কাহীনি ঘটিয়া গিয়াছে। আমার আম্মা যে কাপড় ধুইতে যাইয়া আমার পকেট হাতায় এইটাতো আমার জানা ছিল না। আমার আম্মা রিসিট পাইয়া এভিডেন্স মনে করে আমার আব্বার কাছে চালান করে দিছে।
ঐদিন সন্ধায় আমার আব্বা আমাকে রিমান্ডে নিল পাক্কা তিরিশ মিনিটের জন্য। প্রথম পাঁচ মিনিট তুমুল মাইর
তারপরের পনের মিনিট জিগ্গাসাবাদ।
আমার আব্বা মনে করেছিল যে আমি ফের কোনো মাইয়াপাইনের কাছে চিঠিপত্র পাঠাই নাকি
এরপর চোখের জল নাকের জল এক করে এই শর্তে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পাই যে জীবনে আর আর কুনোদিন চিঠি পাঠাবো না। এরপর থেকে আর কুনোদিন কাউকে চিঠি পাঠাই নাই।
আর সেইরাত থেকেই কবিতার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






