বাসা থেকে নামার পর একটুকু খোলা জায়গা। সেখানেই একদল কিশোর তরুনের হৈচৈ। কখনো ক্রিকেট, কখনো ফুটবল। মেতে থাকা শিশুদের উচ্ছাস মুগ্ধ করতো। তাদেরই দলের একজন অথৈ। মোঃ রেদুয়ান চৌধুরী অথৈ। আমাদের পাশের ফ্লাটেই থাকে। চঞ্চল একটা ছেলে। বয়স ১২। পড়ে ক্লাশ এইটে।
হঠাৎ বেশ কিছুদিন তাকে দেখিনি। অসুস্থতা। জ্বর নাকি প্রায়ই হতো। কর্মব্যস্ততায় আর খোঁজ নেয়া হয়নি। প্রায় বছর হতে চলল। সেদিন তার মা এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। শুনে অব্দি আমিও ঠায় স্তব্দ হয়ে গেলাম। দীর্ঘদিন জ্বর আসে রাতে রাতে। ডাক্তারের ঔষধেও আর জ্বর নামছে না। রক্ত পরীক্ষায় স্থানীয় ডাক্তার যেতে বলে বড় হাসপাতালে। ঢাকায় এপোলোতে আবু জাফর সালেহ সাহেবকে দেখানোর পর উনি ব্লাড পাঠিয়ে দেন দিল্লি। ফলাফল ধরা পড়ে ব্লাড ক্যান্সার!
শুরু হয় জীবন মরণের দৌড়ঝাপ। কলকাতা সরোজ গুপ্তা ক্যান্সার হাসপাতাল এনড রিসার্চ ইনস্টিটিউট এ ড: আর এন ঘোষ, ড: পিপি গুপ্তা, অন্থ্রোপলজির ডা: সোমা। ২০০১৭ এর ২৩ ফেব্রুয়ারী ভর্তি হয়। হাই-ডোজ কেমো দেয়ার কাগজ পত্রে সাইন করতে গিয়ে কেঁদে ফেলে মা-বোন। বাবা দেশের যা কিছু সঞ্চয় সম্বল বিক্রি করে, ধার দেনা করে পাঠায় সন্তানের নামে। তাঁকে বাঁচাতে হবে।
হাইরিস্ক ৬ টা কেমো দেয়া হয়। এরপর পায়ে ১৬টি ইন্জেকশন। এরপর হাইডোজ কেমো আবার। এর মাঝে আসে ঈদ। কিসের খুশি কিসের আনন্দ। ছেলের মাথার চুল খসে পড়ে। ঠোসের চামড়া তো নয় যেন আস্ত ঠোট খসে পড়ে। আল্লাহর অশেষ রহমত টিকে যায় প্রথম ধাক্কায়। চলতে থাকে নিয়মিত কেমো আর ইন্জেকশন। প্রায় ৮ মাস চিকিৎসার পর আবার নেয়া হয় বোনমেরো রিপোর্ট। এবার বেশ উন্নতির দিকে।
দেশে ফিরে আসে এক মৃতবৎ সন্তান নিয়ে। আশার আলো সাথে লয়ে। কিন্তু লাগবে নিয়মিত চিকিৎসা। প্রতিমাসে কেমো আর ইন্জেকশন। ৪ মাস পরপর নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে আনতে হবে কলকাতায়। এভাবে চালাতে হবে আরো ৪ বছর।
ক্লাশ এইটের রিজাল্ট শিট
আঁচলে চোখের জল মুছতে মুছতে মা জানাল ১০ মাসের চিকিৎসায় এ পর্যন্ত ব্যায় হয়েছে ২৫ লাখ টাকার উপরে। যার একটা অংশ ৭০ হাজারের মতো- এসেছে বড় বোনের ইউনি থেকে। অথৈ যে স্কুলে পড়ে সেখান থেকে ওঠে মাত্র ৬০ হাজার। আমেরিকা প্রবাসী বোনের দেবর দিয়েছে ৫০ হাজার। নিজেদের যা কিছু সঞ্চয়, সম্বল সবই বিক্রি করে দিয়ে, বাবার ব্যবসা স্থলে, আত্মীয়-স্বজন সবার কাছ থেকে ধার দেনায় ডুবন্ত আজ।
এখনো প্রতি কেমোতে লাগবে ৫০ হাজারের মতো, মাসে একটা কেমো, বছরে ১২টি আর প্রতি ৪ মাস পরপর কলকাতা নিয়ে রিপোর্ট টেষ্ট করাতে হবে যার আনুমানিক নূন্যতম ব্যায় ৪০-৫০ হাজার টাকা। এভাবেই কাটাতে হবে ৪ বছর। আজ নিরুপায় পিতা- মাতা তাই সকলের দোয়া এবং সাহায্য প্রত্যাশী।
চিকিৎসার কাগজপত্র :
ফাইল প্রায় ৩ টি বিশাল বিশাল! অল্প কিছু আপ করা হল:
সমাজের বিত্তবান, সহৃদয়, ব্যাক্তিবর্গের সহৃদয়তার মূখাপেক্ষি আজ শিশু অথৈর জীবন। আবার সুস্থ ভাবে হাসার, খেলার, বেঁচে থাকার আশ্বাস যোগাতে পারে সকলের সহৃদয় সহায়তা।
সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা:
মোঃ আদনানুর রহমান চৌধুরী বুলবুল (বাবা)
MD. ADNANUR RAHMAN CHOWDORY BULBUL
এসবি নং- 173151126645
ডাচবাংলা ব্যাংক লিমিটেড
ভৈরব বাজার শাখা, কিশোরগঞ্জ।
বিকাশ নাম্বার পার্সোনাল -০১৯১৯৬৭৯৬৭৮
ঢাকা বিকাশ নং পার্সোনাল -০১৭৪৫৪২৩৬৬৩
এবং আমাদের ব্লগ কমিউনিটির কন্ট্রিবিউশনটা জানার জন্য এবং হিসাব রাখার জন্য সম্মানীত ব্লগার করুনাধারা
ব্লগেই কমেন্টে তার উল্লেখে বিব্রত বোধ করায় নতুন প্রস্তাব হল - যে মাধ্যমেই টাকা পাঠান, শেষে একটু বাড়তি কাজ করুন- ঢাকার বিকাশ নাম্বারে মেসেজ দিয়ে টাকার amount এবং আপনার আইডি বা সামুব্লগার কথাটা জানিয়ে দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে সামু থেকে যারা টাকা দিতে চান তাদের সকলকেই সেই একই গ্রামীন নাম্বারে মেসেজ দিতে হবে, যাতে এমাউন্ট নির্ণয় করা যায়। এছাড়া যারা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন তারাও কেবলমাত্র এই নাম্বারেই ম্যাসেজ দিয়ে জানাবেন যে সামু থেকে এত টাকা পাঠানো হয়েছে। আশা করি সকলেই সহযোগীতা করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করার কথাও কেউ কেউ বলেছেন। কারো ভাল জানাশোনা থাকলে জানাতে পারেন।
অথবা কোন কর্পোরেট হাউজে বা সংস্থার পক্ষ থেকে যদি কেউ সাহায্য করতে বা ব্যবস্থা করাতে পারেন-
জানাতে পারেন। সমস্ত কাগজপত্র সহ অথৈর বাবা-মার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
কিংবা আরো কোন পরামর্শ থাকলেও জানাতে পারেন।
সকলের হৃদ্যতায় বেঁচে থাকুক অথৈ। বেঁচে থাকুক মানবতা।