
দেবী আফ্রোদিতি। প্রেম, সৌন্দর্য ও উর্বরা শক্তির দেবী। শুধু তাই নয় -দেবী আফ্রোদিতি নাবিকদেরও রক্ষাকর্ত্রী । গ্রিক উপকথায় দেবী আফ্রোদিতি একজন অতীব সুপরিচিত দেবী। গ্রিক উপকথায় দেবী আফ্রোদিতির অবস্থান অনন্য । দেবী আফ্রোদিতি কে ঘিরে যেন কি এক রহস্য রয়েছে। যে রহস্য প্রাচীনকাল থেকেই শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করেছে। শিল্পীরা দেবী আফ্রোদিতি র ভিতরে এক অশেষ আকাঙ্খিত নারীকে খুঁজে পান, যে নারীর আবেদন এত বছরেও ক্ষুন্ন হয়নি। রোমান সভ্যতায় দেবী আফ্রোদিতি ভেনাস নামে পরিচিত।
প্রথমেই দেবী আফ্রোদিতির জন্মকথা।
গ্রিক উপকথায় রয়েছে ... এককালে দুই দেবতার যুদ্ধ হয়েছিল। একপক্ষে দেবতা আওয়ারানস ও অন্যপক্ষে ক্রোনাস। ক্রোনাস আওয়ারানস এর লিঙ্গ সমুদ্রে নিক্ষেপ করে। তখনই সমুদ্র-ফেনা থেকে আফ্রোদিতিরর জন্ম। কারও কারও মতে দেবতা জিউস ও ডিওনে আফ্রোদিতির বাবা ও মা। যাক।দেবী আফ্রোদিতি ঝিনুকে ভেসে ভেসে সাইপ্রাস দ্বীপে পৌঁছলেন...এই আশ্চর্য মিথিয় উত্থানটি প্রাচীন ও আধুনিক চিত্রকলায় বারংবার প্রতিফলিত হয়েছে। যে কারণে আফ্রোদিতি যেন স্বর্গীয় নারীত্বের প্রতীক রূপে চিহ্নিত হয়ে আছেন।

এই ছবিটি ইতালিয় চিত্রকর Sandro Botticelli ( 1445 – May 17, 1510) -র আঁকা। ছবির নাম The Birth of Venus. কিন্তু Venus কেন? মনে থাকার কথা: রোমান সভ্যতায় দেবী আফ্রোদিতি ভেনাস নামে পরিচিত। Sandro Botticelli ইতালিয় চিত্রকর
আশ্চর্য এই-দেবী আফ্রোদিতির শিশুবয়েসের উল্লেখ নেই। যেন দেবী আফ্রোদিতি পূর্ণবয়স্ক বিবাহযোগ্যা হয়েই জন্মেছেন। যার যৌন আকর্ষন তীব্র। সৌন্দর্যও গভীর।

আমরা ট্রয়যুদ্ধে দেবী আফ্রোদিতির ভূমিকার কথা জানি। পেলেউস ও থেটিস এর বিয়ের উপলক্ষে জিউস একটি ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন। এরিস ছিলেন বিরোধ এর দেবী। তাকে ভোজসভায় নিমন্ত্রন করা হয়নি। এরিস অবশ্য ভোজসভায় যায় এবং একটি সোনালি আপেল ছুঁড়ে বলে: এটি সেরা সুন্দরী পাবে। আফ্রোদিতি সহ সোনালি আপেলটি দেবী আথেনা ও হেরাও দাবী করে বসে। জিউস কারও পক্ষে না থাকায় ট্রয়ের রাজপুত্র প্যারিস বলা হল সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য। কাজেই তিনজন দেবী প্যারিসকে নানা রকম প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। আফ্রোদিতি প্যারিসকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী নারীকে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দরী এই নারী হলেন গ্রিক রাজা মেনেলাউসের স্ত্রী হেলেন অভ স্পার্টা। । প্যারিস হেলেনকে দেখে মুগ্ধ হল এবং হেলেনকে নিয়ে ট্রয়ে পালিয়ে গেল।
এর ফলে ট্রয় যুদ্ধ আরম্ভ হয়।

গ্রিক দেবদেবীদের মধ্যে দেবী আফ্রোদিতি ছিলেন বিবাহিতা। যা একটি বিরল ঘটনা। দেবী আফ্রোদিতির স্বামী হেপহ্যাসটাস। আগ্নেয়গিরির দেবতা হেপহ্যাসটাস ছিলেন অত্যন্ত কুৎসিত দেখতে । দেবী আফ্রোদিতি স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন না; তিনি স্বাধীন থাকতেই পছন্দ করতেন এবং প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন প্রেমিক খুঁজে নিতেন। এতে অবশ্য দেবী অনুশোচনা ছিল না। তিনি যাকে চাইতেন তাকেই পেতেন। চন্ড মেজাজের যুদ্ধের দেবতা আরেস ছিল প্রিততম প্রেমিক। আরেসকে দেবী বিয়েও করেছিলেন।
দেবীর অন্যতম প্রেমিক ছিলেন অ্যাডোনিস ।
এ বিষয়ে বিস্তারিত দেখুন ...
দেবীর অভিসারের ফলে কয়েকটি সন্তান। এদের মধ্যে প্রেমের দেবতা এরস ও এনিয়াস উল্লেখযোগ্য। এরস ও দেবী আফ্রোদিতির কাহিনীটি এখানে পাবেন।

Greek mythology: Who is Aphrodite? নিবন্ধে Anja Emerson লিখেছেন: Aphrodite represents erotic love as an alluring form of divine influence. The representation of the nude Aphrodite carries powerful meaning and it became a way of delve into exploring female physical attractiveness, sex appeal and beauty.

অ্যানজা এমারসন লিখিত Greek mythology: Who is Aphrodite? অবলম্বনে
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:২১