সেই ছোটবেলায় গেছিলাম আর যাওয়া হয়নি। তাই অনেকদিন থেকেই ঢাকা চিড়িয়াখানার যাওয়ার ইচ্ছা। যাক্ সময় করে করে শেষ পর্যন্ত গেলাম। দেখার আগে মনে করেছিলাম দারুন একটা ছবি ব্লগ পোস্ট করবো কিন্তু একরাশ হতাশা আর দু:খ নিয়ে লিখতে বসলাম। যাক্ আসি আসল কথায়....
যা যা আমার চোখে পড়লো তা হলো:
১) প্রতিটি প্রাণীর এমন রুগ্ন চেহারা যে খাবার পায় না ঠিকভাবে কনফার্ম। যেমন বাঘ মামারে বা সিংহ রাজাকে দেখেতো এমনি হতাশ.. বেচারাদের নড়ার ও ক্ষমতা নেই। যাক্ আশার কথা কয়েকটি বাঘ নাকি সাফারি পার্কে থেকে শীঘ্রই যোগ হবে।
২) অনেক প্রকার বানর আগে দেখেছিলাম বাট এখন সংখ্যা ও অনেক কম। তারপরও তাদের চঞ্চল পদচারনায় আমার বাচ্চারা মুগ্ধ। তবে চিড়িয়াখানার অনেক সতর্কবানী পোস্টারের পরে ও আমাদের মুগ্ধ দর্শনার্থীরা ব্যাপক ঢিল ও খোচাঁখুচিতে ব্যস্ত ছিল। আমি বুঝি না এরা ঢিল ছুড়ে কি মজা পাচ্ছে ???? তারা কি বুঝে না তাদের ছোড়া ঢিল ওই বানর আর তাদের বাচ্চাদের একটু ও ভালো লাগে না।
৩) আগে হাতি ও ঘোড়া রাইডিং একটা চমৎকার ইভেন্ট ছিল যা এখন বন্ধ। কিন্তু কেন আমরা সামনের দিকে না এগিয়ে পিছনের দিকে যাচ্ছি?? এ ধরনের ইভেন্ট বাচ্চারা খুব এনজয় করে যা বিদেশে খুবই কমন। এতো লোকবল এতো টাকা বরাদ্দ বাট কোথাও কোন উন্নয়নের ছোয়া নেই।
৪) পুরো চিড়িয়াখানায় চারপাশ ময়লা আবর্জনা ছড়ানো ছিটানো... কতদিন যে পরিস্কার হয়নি জানি না। আর পাবলিক ও যথারীতি যেখানে সেখানে চিপস্ এর প্যাকেট, ক্যানের বোতল..... এটা সেটার সমাহার করেছে। অবশ্য এটা সমগ্র বাংলাদেশেরই চিত্র





৫) এবার আসি আসল কথায়... পুরো চিড়িয়াখানা জুড়ে অসংখ্য চা/চিপস্ বিক্রির স্টল। আর পাবলিকের আকর্ষনের জন্য ফুল ভলিউমে হিন্দী গান বাজছে সব জায়গা থেকে। ভয়াবহ এক পরিস্থিতি। এতোটা ন্যুইসেন্স আমরা যে এতোগুলো পশু পাখিদের যে একটু শান্ত পরিবেশ এর প্রয়োজন আছে তা মনে হয় কর্তৃপক্ষ জানেই না। আমি কিছু বলার চেস্টা করেছিলাম বাট আমার উনি আমাকে জোর করে সরিয়ে দিয়েছেন.... ওর কথা কর্তৃপক্ষ যেখানে কানে তুলা দিয়ে আছে তুমি কেন সেখানে ঝামেলায় যাও।
৬) আর চা/চিপস্/আইসক্রিমের দোকান তো প্রতিটি স্টেপ পরপর। যেহেতু অনেক টুকু পথ আর বাচ্চারাই প্রধান দর্শক তাই তা থাকতেই পারে... তাই বলে লাগাম ছাড়া দোকান পাট!!!! অবশ্য সারা দেশকেইতো আমরা ডাস্টবিন আর চা/চিপস্/আইসক্রিমের দোকান মনে করি। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বলে যে একটা শব্দ আছে তা অবশ্য বাচ্চারাতো দূরে আমরা নিজেরাই জানি না।
৭) সবচেয়ে বেশী মন খারাপ হয়েছে ময়ুরের খাচাঁর সামনে যেয়ে কারন একটা ময়ুরের ও পাখা নেই। অথচ সারা চিড়িয়াখানা জুড়ে ১০/১৫ টাকায় প্রতিটি ময়ুরের পাখা বিক্রি হচ্ছে।
৮)আর কুমিরকে জীবিত মনে হয়নি কোনক্রমেই..... বেচারার ঢাকা চিড়িয়াখানায় এসে ধরা খেয়েছে আর কি...... তার উপর ্মন নোংরা পানি... কেমনে বেচারারা আছে !!!!
৯) পাখিগুলো এমন জীর্ন শীর্ণ... আহারে.... বন্দী থাকা যে এতোটা কঠিন কে জানতো...
১০) চিড়িয়াখানার ভীতরে আবার মিনি চিড়িয়াখানা.. মানে ৫টাকা দিয়ে টিকেট কাটলে কিছু মরা প্রানী আর একুরিয়ামের দেখা পাবেন। যা দেখলে আপনার মেজাজই খারাপ হয়ে যাবে।
-
-
-
-
-
যাহোক শুধু বদনাম করলেই তো হবে না কিছু ভালো জিনিস ও আছে... যেমন..... অসাধারন প্রাকৃতিক ভিউ। এতো বড় এবং সুন্দর শাপলা ফুল অামি কখনই দেখিনি। আর পাশের জলাভুমি সাথে হিজল বা অন্যান্য গাছ... অসাধারন!!!! গেছি বান্দরের ছবি তুলতে বাট এতো সুন্দর প্রকৃতি দেখে শুধু প্রকৃতির ছবিই তুলেছি.... কিছু ছবি শেয়ার করলাম........
আর জিরাফ আর হরিণগুলোকেই একমাত্র প্রানবন্ত মনে হয়েছে......
আমার স্বজাতীর ছবি...... গাধা আর কি....
আর সবার শেষে আমার বাসার জানালায় দাড়িয়ে ড্রেনে চলা সাপের ছবিটা শেয়ার করলাম





আজ আপাতত: এটুকু... আবার আসবো নতুন কিছু নিয়ে.......
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:২২