ভয়াবহ সংকটে আছে দেশের মিডিয়া। এই সংকট থেকে উত্তরণের পথও তেমন আছে বলে মনে হচ্ছে না। পাট খাতের পর মিডিয়াতেই এখন সবচেয়ে বেশি চাকরি হারিয়েছে, আশঙ্কায় আয়ে আরো অনেকেই।
আর্থিক সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে আজকের কাগজ। আর্থিক সংকট আজকের কাগজে আগেও ছিল। তবে সম্পাদক কাজী শাহেদের জন্য আজকের কাগজ ছিল একটি সাইনবোর্ড বা ভিজিটিং কার্ড। নানা ধান্দা জায়েজ করার জন্য আজকের কাগজ দরকার ছিল তার জন্য। এখনকার পরিস্থিতিতে ধান্দা করার সুযোগ আপাতত নাই। ফলে প্রয়োজন নাই সাইনবোর্ডের, ফলে বন্ধ আজকের কাগজ। আবার যদি কখনো ধান্দাবাজির সুযোগ তৈরি হয় নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন যে আজকের কাগজ আবার চালু হবে।
এখানে যায় যায় দিনের অনেক ব্লগার আছেন। তারাই ভাল বলতে পারবেন তাদের বেতন পাওয়ার কি হাল? শফিক রেহমান কি থাকবো? সাইদ চৌধুরীর সঙ্গে কি যোগাযোগ হলো? গোলাম সারোয়ার কি সম্পাদক হিসাবে আসবেন? এই প্রশ্নগুলোর মিমাংশা না হলে যায় যায় দিন কি চালু হবে?
দিনকালের ব্যাংক লেনদেন বন্ধ। বেতন দিতে পারছে না পত্রিকাটি। যদি অর্থের বিকল্প উৎস না থাকে তাহলে আগামি মাসে কি দিনকাল বের হবে?
আমার দেশে বেতন হয় না কয় মাস? চার মাস নাকি?
জনকণ্ঠ কতদিন আর চালু থাকবে? খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে তারা। বেতন ভাতা বাকি, কবে হবে কেউ জানে না। কিছু জমি বিক্রি করে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর?
ইত্তেফাকে ৭২ জনকে ছাটাই করা হয়েছে। মঞ্জুপন্থীরা আতঙ্কে, তাদেরও বেছে বেছে ছাটাই করা হবে। ইত্তেফাক এখন চালায় মইনুল হোসেন। কৃপন হিসাবে বিখ্যাত তিনি। তার নীতি হলো ৫ হাজার টাকা বেতন দাও, যেদিন কদিন থাকবে থাকুক, তারপরে আবার নতুন নাও। ভাত ছিটালে কাকের নাকি অভাব নাই। উপদেষ্টা হতে পারেন তিনি কিন্তু পত্রিকার বিজ্ঞাপনে ধ্বস নেমেছে।
যুগান্তরে ছাঁটাই হবে বলে জোর গুজব। প্রথম আলো ডেইলি স্টারের মালিকের নাম তালিকায়। সমকালের মালিকেন নামও তালিকায় আছে, মাসে সমকালের লোকসান ২০ লাখ টাকার বেশি।
সিএসবি বন্ধ হয়ে গেছে। এনটিভির ব্যাংক হিসাব আটকে আছে, তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ। পরিচালকদের মধ্যে ঝামেলার কারণে আইনগত পদপে নিয়ে লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আরটিভিতে গত মাসের বেতন এখনো হয়নি। চ্যানেল ওয়ানেরও একই ধরণের অবস্থা। বৈশাখিতেও বেতন ভাতা নিয়মিত না। একুশের উপর রুষ্ট সরকার।
তাহলে মিডিয়া জগতে কি হচ্ছে? বর্তমান সরকারও চাচ্ছে না শক্তিশালী মিডিয়া থাকুক। এখানেই গণতন্ত্র আর অসাংবিধানিক সরকারের পার্থক্য। এই সরকার চায় মিডিয়াকে এমন চাপে রাখতে যাতে স্বাভাবিক মৃত্যুর পথ বেছে নেয়।
বড়ই সংকটে এখন মিডিয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৫:০৭