আমার শৈশব জুড়ে ছিলো উদাসী হাওয়ার নাচন
আর তার থেকে আমি মুক্ত বিহঙ্গম হতে শিখেছি।
মাগুরা নদীর পাড়ে আমার জন্ম, নদী মাতৃক আমি।
নলুয়ার হাওরে ভেসে বেড়িয়েছি আদিগন্ত সবুজের মাঝে
উন্মত্ত হাওয়া পাল তোলা নৌকার গতিরোধ করেও
থামাতে পারেনি আমার, আমার বাবার
কিংবা তারও বাবার জীবনের চাকা।
ঝিলকা বিলের ঘ্রাণ নিয়ে আমার বড় হওয়া।
ধানী জমির সবুজাভ রঙ আমাকে আরো তেজস্বী করে
বৈশাখ মাস এলে আমি তাই পরবাসী হতে চাইনা।
আমার কৈশর জুড়ে ছিল হিজলার বনের হাতছানি;
নির্জন দুপুরে পাখি শিকারির মত খুঁজে নিতাম টুনটুনির ঘর
প্রমত্ত নদী আমাকে সাঁতার শেখায়নি, ভাসিয়ে নিয়েছে
এখন আর তার নেই গতিময় স্রোত, আমিই সাঁতার শিখাই তারে...
দূরের জলঘরে নৈঃশব্দের করাঘাত আমার মুখস্ত ছিল
আম্বিয়া বিবিরা কতটা শালীন বুঝিনি তখনো
শাপলার জলে ভেসেছি কতকাল না পাওয়া দুঃখের সঙ্গে
আমার কৈশর জুড়ে ছিল চড়ুই আর ঘুড়ির অকাট্য মিলন।
আমার শৈশব এখন সুদূরের মেঘ কল্পনার আঁকাজোকা
আমার কৈশর এখন মাগুরা নদী, নলুয়ার ঢেউ আর বিলুপ্ত ডাহুকা।