somewhere in... blog

আত্নহনন.....................

১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মৃত্যু থেকে আর মাত্র ৫ মিনিট দূরে দাঁড়িয়ে আমি। এই মুহুর্তে নিজেকে পৃথিবীর খুব ক্ষমতাধর মানুষ বলে মনে হচ্ছে। আমার হাতের মুঠোই রয়েছে আগামী কয়েকটি সময়। ধীরে ধীরে নাইলনের দড়িটার প্যাঁচগুলো খুলতে শুরু করেছি । সবকিছু শেষ করতে ৫ মিনিটের বেশি লাগার কথা না। জীবনে অনেকবার ঠকেছি, তাই ঠেকেছি বারবার। শেষ বারের মত দোকানী বোধহয় ঠকাতে চায়নি। পলাশী থকে কেনা নাইলনের দড়িটা বেশ সক্তই মনে হচ্ছে।

সিলিঙে ঝুলিয়ে দিতে পারলেই সব শেষ। আম্মু ও ঘরে নামায পড়ছে। শেষবারের মত আর একটি বার দেখতে ইচ্ছে করছে তাকে। নিশার(ছদ্ম নাম) কাছ থেকেও বিদায় নেওয়া হয়নি। ও বোধহয় কিছু আঁচ করতে পারেনি। পারেনি একেবারেই? কি করত সে জানলে? এসে প্রাণপনে বাধা দিত? নাকি চলেই যাব ধরে নিয়ে উপসংহার এ পৌছুত? এখনও চিনতে পারেনি তাকে। তবুও আকাশের দিকে বাড়িয়ে দিই আমার শেষ ভালবাসাটুকু।



শেষ টুকু আর লিখতে পারিনি। বরং চাইনি লিখতে। প্রতিনিয়ত ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে যাওয়া এ শহরের গলি ঘুঁপচিতে ঘটে যাওয়া এ দৃশ্যের শেষ প্রান্তটুকু অনেক বেশি সূঁচালো। দগদগে করে তুলে আপনাকে, আমাকে। সেই দগদগে দাগের রেখা না মুছে যেতে ছড়িয়ে যায় তা অন্যখানে।

আমাদের ঠিক পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেল তেমনি এক মানুষ। কোন এক ভোর সকালে জানান দিয়ে যায় আত্মহননেই শেষ অধ্যায় রচিত হয়েছে আমাদেরই পাশের অতিপরিচিত কোন মুখের। কারও প্রিয়। কারও বা অপ্রিয়, কারও আড্ডার সাথী, কারও বন্ধুপ্রতিম কোন বড় ভাইয়া কিংবা কোন প্রিয় মানুষের অলস বিকেলের সহচর।

চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয় টাইপের কথাবার্তা দিয়েই আমরা আমাদের আনুষ্ঠানিক দায়িত্তটুকু শেষ করি। ধরে নিতে থাকি ওরা যাবেই। শেষ পর্যন্ত জানতে চাওয়া হয়না কেন এই নিরব আত্মহনন? বুঝতে পারিনা কোথায় সেই একাকীত্ন , কোথায় এই নিসঙ্গতা? বুয়েটের মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়েও কোথায় সেই হতাশা?

এই লেখাটি শেষ করে আমিও হয়ত পড়তে বসব, কালকের টেস্টের জন্য। কিংবা যেতে পারি টিউশনিতেও। অথবা হাতে হাত ধরে বসে থাকতে পারি কোন প্রিয় মানুষের।

তবুও একবার হলেও কি সপ্তাহান্তে জানতে চাইতে পারিনা পাশের মানুষগুলোকে কোথায় সেই কষ্টটুকু? সেই একাকীত্ন? একবার অন্তত দাঁড়িয়েই পথ আগলে জিজ্ঞেস করতেই পারি, তোমার মন খারাপ কেন?



(কিছুদিন আগে আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়া এক মানুষকে ভেবে লেখা )
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৫:১৫
২৩টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুলাই বিপ্লবের মাস্টার মাইন্ড এবং কেন্দ্রীয় সমন্বয়কগনের কিছু বক্তব্য!!!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ৯:৪৩



আমরা সবাই জানি যে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে এক রক্তক্ষয়ী বিপ্লবে স্বৈরাচারী আওয়ামিলীগের পতন ঘটে। কয়েক হাজার প্রানের বিনিময়ে বিপ্লবের সফল পরিসমাপ্তির পর বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি রক্ষার দ্বায়িত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিবির সন্ত্রাসীর নারীকে লাথি মারা কিভাবে দেখছেন?

লিখেছেন অল্প বিদ্যা ভয়ংকর, ২৯ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:৫১


৩৬ জুলাই অভিশপ্ত ছাত্রলীগের পতনের পর আমরা পুরা দেশ জুড়ে বিজয় উল্লাস শুরু হয়। হাসিনা সাম্রাজ্যের পতনের পায় দেশের মানুষ ২য় বার স্বাধীনতার সাধ উপভোগ করে। শুকরান নামাজ পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রিয় কন্যা আমার- ৭৬

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৯ শে মে, ২০২৫ দুপুর ২:২৯



ফারাজা তাবাসসুম খান,
প্রিয় কন্যা আমার। কলিজা আমার। তুমি গভীর ঘুমে ছিলে, তাই তোমাকে জাগাইনি। তবে আলতো করে তোমার কপালে একটা চুমু খেয়েছি। তোমার পাশে তোমার মা শুয়েছিলো, সে-ও তোমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ইসলামী ছাত্রী সংস্থা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২

প্রকাশ্যে এল ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা

ইসলামী ছাত্রী সংস্থার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা প্রকাশ্যে এসেছেন। নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কয়েকটি দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার মাধ্যমে প্রকাশ্যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ১৮ নম্বর বাসা পর্ব: ৭ (ভূতুরে ঘটনা)

লিখেছেন অপলক , ২৯ শে মে, ২০২৫ রাত ১১:৩৭

২০১৪ সালের ২৪ তারিখ আমার মেয়ে জন্ম নেয়। ওর জন্মে সময় আমার মা বাবা ছিল। তারা চলে যাবার দিনে শাশুড়ি, শালা আর এক শালি আমার বাসায় আসে। সবকিছু ঠিক ঠাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×