somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সকল ব্লগার ভাইদের প্রতি একটি করুণ অনুনয়! কোনদিন আমি খুব বেশী দৃষ্টি আকর্ষণ করিনি । আজকে একটু তাকান এই গরীবের পানে! না, টাকা পয়সা চাইছি না। একটা কথা শুধু!

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তত্ত্ব বলে- নিরাশ হওয়া যাবে না। কিন্তু আমি আমার জাতি, ভাই বেরাদরদের কর্মকান্ড দেখে নিরাশ না হয়ে পারি না। আবার যে পুরোপুরি হতাশ হয়ে বসে আছি তাও নয়। কোন একটা কোনে আশার কোন আলো দেখলেই চোখ মেলে তা্কাই। সাভার ট্রাজেডি আবার আমাদেরকে এককাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এর আগে প্রজন্ম চত্তর একইভাবে কিছুটা আলোর ঝলকানী এনে দিয়েছিলো। মনে করেছিলাম জনতা বোধ হয় এবার নিম্নরুচির ঐ রাজনীতিবিদদের প্রত্যাক্ষান করেছে। হতাশ হলাম যখন দেখলাম সেখানের নিয়ন্ত্রণ আবার চলে গেলো বামদের হাতে, হতাশ হলাম যখন দেখলা্ম নিয়ন্ত্রণ চলে গেলো সরকার দলের হাতে। হেফাজত জেগে উঠলো। আবার আশার আলো। কিন্তু হায় আমি একি দেখলাম। সেই পুরনো ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠি! ধর্ম যাদের জীবন জীবিকা! অন্ধ কুপের মতো যাদের দৃষ্টিভঙ্গি! আকাশের মতো উদার, সাগরের মতো বিশাল যে ইসলাম- তা তারা আবদ্ধ করে রেখেছে উপাসনালয়ের চার দেয়ালে। তাদের নেতাদের দেখলাম মাইক হাতে নিয়ে শাপলা চত্তরে কথা বললো ষাঁড়ের মতো চিৎকার করে আমাদের তথাকথিত রাজনীতিবিদদের মতই। কতককে দেখলাম কথা বলার সময় পানের রস বেয়ে পড়ছে ঠোটের কোনা দিয়ে। এরা পরিবর্তন করবে দেশের? বিশ্বাস হলো না। হলো না । হতাশ হলাম। ভেবে নিয়েছিলাম আর বুঝি কোন পথ নেই। এবার হেফাজত আর শাহবাগ লড়াই চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না এই দেশের মাটি পানি বায়ু বসবাসের অনুপযোগী না হয়ে যায়। দীর্ঘ একটা লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। না, লড়বার জন্য নয়। এ্ লড়াই থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। এরই মাঝে সাভারের মর্মান্তিক এই ঘটনা। এতগুলো প্রাণের বিনিময়ে নিষ্ঠুর আমি চেয়ে দেখলাম এদেশের মানুষ আবার এক কাতারে দাঁড়ালো। কে কোন দল করে, কোন মতবাদে বিশ্বাসী তা ভুলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলো। কোন কিছু আশা করবো? না, আশা করে লাভ নেই। এই এরাই আবার এই ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে আবার লড়াইয়ে নামবে।
আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। মানুষের মাঝে আমার কোন প্রভাব নে্ই। কেউ আমাকে চেনে না। সাধারণ একজন ছাপোষা মানুষ আমি। সংসার ধর্ম করে যে দিনাতিপাত করছি। আমি ডাকলে একজন মানুষও আমার কাছে আসবে না। ব্যর্থতার গ্লানী নিয়ে ভাবি এ জীবনের কি অর্থ? মানব জীবনের কি অর্থ? আমি এতই ক্ষুদ্র যে সম্ভবত আমার করণীয় কিছু নেই। কে আমার কথার দাম দেবে? কে দেবে আমার চিন্তার দাম?
পৃথিবীর কোটি কোটি বছরের সময়ের হিসাবে আমি পার করছি একটা বুদবুদ উঠার একটা মুহূর্তের মতো। তার মাঝে এমনই নগন্য একজন যে- মনে হয় আমি এই পৃথিবীর কেউই নই। জন্মেছি অগোচরে, আবার অগোচরে পালিয়ে যাবো। স্রষ্টার কাছে আমার জবাব রেডী আছে। ‍'তুমি আমাকে যে টুকু সামর্থ দিয়েছ, আমি তার সবটুকু করেছি। এর বেশী আমার করার কিছু ছিলো না। মুক্তি দিলে দাও, না দিলে যা ইচ্ছে করো।'
ঐ যে বলেছিলাম আশার আলো উকি দেয়! জানিয়ে যায় আমাদের মুক্তি আমাদের হাতে। ভিনগ্রহের কোন প্রাণী যেমন এসে আমাদের এই করুণ হাল করে দিয়ে যায় নি- তেমনি তেমন কেউ এসে আমাদের মুক্তি দিয়ে যাবে না। তবে কি তাদের সাথে আমাদের লড়াই করতে হবে? যারা আমাদেরকে আজ শিকলে বন্দি করেছে? না তাদের সাথে আমাদের লড়াই করতে হবে না। ভাংচুর করতে হবে না। গাড়ী পোড়াতে হবে না। মিছিল মিটিং করতে হবে না। শুধু মাত্র তাদের যদি আমরা এভয়েড করি, বর্জন করি তাহলেই তারা মিশে যাবে বাতাসে। আমরা তাদের ভালো করেই চিনি। ক্ষেত্র বিশেষে আমাদের নিজেদের চাইতেও তাদেরকে ভালোভাবে চিনি। নিজেদের ক্ষূদ্রস্বার্থের জন্য আমরা তাদের তোষামোদী করি। আমরা কি পারি না টোটালি তাদের ইগ্নোর করতে? এখান থেকেই বলি! আমরা যারা ব্লগার আছি তারা সারাদিন কি নিয়ে তর্ক বিতর্ক করি? কার পেছনে কত নিখুতভাবে, সুচারুভাবে বাঁশ দেয়া যায়। তাই নয় কি? এর মাঝেই বিনোদন খুজি। যারা সুন্দর কথা লেখেন, ঐক্যের কথা লেখেন তাদের ব্লগ নিরামিশে ভোগে। আর যারা ক্যাচাল জাতীয় পোস্ট দেয় তাদের ব্লগে হামলে পড়ি। কমেন্টের পর কমেন্ট। তর্কাতর্কি, হুমকি ধামকি। ব্লগের লড়াই পথেও গড়ায়। আসলে এখানে আমরা কেন এসেছি? লড়াই করতে? অন্যের পেছনে বাঁশ দিতে। আমারতো মনে হয় না। আমারতো মনে হয় এখানে সবাই এসেছে একটা শিক্ষিত শ্রেণী থেকে। একটু হলেও অন্যদের চাইতে যারা এগিয়ে। তাহলে কেন এই আক্রমন? ঐক্যের কথা বলা যায় না? এখানে সবাই আমার চেয়ে বুদ্ধিতে হয়তো এগিয়ে, যোগ্যতায় ও এগিয়ে। আপনাদের চেনা জানা আছে। অনেকে মিডিয়ার সাথে জড়িত, প্রশাসনের সাথে জড়িত। আপনারা কি পারেন না আজ থেকে ঐক্যের কথা বলতে? বিভেদ আমাদের কি দেয়? অন্যায় আর অশান্তি নয় কি? আপনারা তো ভালো করেই জানেন একটা জাতী যদি মনে করে তারা সামথিং স্পেশাল, তাহলে তারা পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ জাতি হয়ে যায়। আমেরিকার কথাই ধরুণ। তাদের দেশের একটা মাতালকে দিয়েও আপনি জাতীর ক্ষতি হয় এমন কাজ করাতে পারবেন না। কিন্তু অপরদিকে আমরা নিজেরাই স্বীকার করি বাঙ্গালী জাতির চরিত্র বলতে কিছু নেই। কথা সত্য। ব্যক্তিস্বার্থের জন্য এখানে পারলে প্রায় সবাই দেশটাকেও বিক্রি করে দেয়। হাজার হাজার উদাহরণ আপনাদের সামনে আছে। কাউকে নাম ধরে আমি বলছি না। আমার চাইতে আপনারা ভালো জানেন। আরো একটা কথা। কোন জাতির জনগণ যদি মনে করে আমি একজন সামথিং স্পেশাল- আমি স্বাধীন, যা খুশি তাই বলতে পারি, করতে পারি- তাহলে সেই জাতির কপালে ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই নাই। এখানেও যারা রয়েছেন- সবাই মনে করেন একেকজন স্পেশাল। তাই এখানে কোন ঐক্য নাই। শক্তি নাই। ব্লগগুলো বিরাট একটা শিক্ষিত মানুষের প্লাটফর্ম। তারা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে, (আমি সত্যিকার ঐক্যের কথা বলছি) কোন কাজ হাতে নেয় তাহলে আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি আমাদের ঠেকায় এমন কোন শক্তি নেই। আমাদের কোন উদ্যোগই ব্যর্থ হবে না। আসলে সবাই আমরা তাই চাই। কিন্তু কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না। চুন খেয়ে মুখ পুড়েছে তো। আমি আমাকে বিশ্বাস করতে বলছি না। আমাকে বিশ্বাস করার মতো কোন যোগ্যতাও আমার নাই। আমি আপনাদের মত্ই অন্যকে আহত করা পাপী একজন। আজকেও একজনকে আঘাত করেছি। আমাকে বিশ্বাস করার দরকারও নেই। এটা আপনারও কাজ।
কথা হলো কি উদ্যোগ নেবো? কি কাজ আমাদের? আমাদের কি করার আছে? না, খুব বড় কিছু করার দরকার নেই। শুরুটা ছোট কাজ দিয়েই শুরু হোক। তারমধ্যে:
১। আমরা এই ব্লগে কেউ কাউকে কথার মাধ্যমে আক্রমন করবো না।
২। কারো বা কোন দলের মনে আঘাত লাগতে পারে এমন কোন লেখা লিখবো না।
৩। যেহেতু আমরা প্রত্যেকেই প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মকান্ডে ভুক্তভোগী এবং অখুশি- সেহেতু আমরা এই রাজনৈতিক কোন আলাপ করবো না। কারো ছিদ্রান্বেষণ করে কিছু লিখবো না।
৪। যারা সাংবাদিকতার সাথে জড়িত আছেন তারা যারা রং হেডেড, উল্টা পাল্টা মন্তব্যকারী, উষ্কাণীমুলক কথাবার্তা বলে সেই সব রাজণীতিবিদদের কাভারেজ করবে না। চাকরী যাবে? ভয় পাবেন না। যে পরিস্থিতি! চাকরী এমনিতেও যাবে। আপনারা তাদের কে আমাদের চাইতে আরো ভালো জানেন। ব্যখ্যায় যাবো না।
৪। তারা যদি কোন কথা বলেও আমরা তা নিয়ে কোন আলোচনা করবো না। উদৃতি দেবো না। সেই সূত্র ধরে কাউকে আঘাত করবো না।
আপাতত এই টুকুই করি? কেউ যদি আমাকে হতাশ না করে একমত হোন তাহলে আওয়াজ দিয়েন। নয়তো আবার হতাশার অন্ধকারে ডুব দেবো। আমার ব্যর্থতা, আমার অসামর্থতাকে মেনে নিয়ে চুপে চুপে পর্দার অন্তরালে ডুব দেবো। তবে ভা্ই কেউ আক্রমন করতে আসবেন না। আমি নীরিহ ছা পোষা মানুষ। অন্তরে কষ্ট দিবেন না। এমনিতেই অনেক কষ্ট, ব্যথা সয়ে আছি। আর আমার অতীত যা ছিলো, যাদের কটু কথা বলেছি- তা ভুলে গিয়ে মাফ করে দিন। আমিও আপনাদের ব্যপারে আমার মনে আর কোন ক্লেদ রাখলাম না।
আরেকটা কথা, রসিকজন প্রশ্ন করতে পারেন এই চারটা কাজ যদি না করি তাহলে ব্লগে এসে কি করবো? ঘোড়ার ঘাস কাটবো? অন্য কিছু করার যদি সত্যিই ব্লগে না থাকে তাহলে তাই করেন। আমি আমার দায়িত্ববোধ থেকে আপনাদের নিকট একটা অনুনয় করলাম। রাখলে রাখবেন, না রাখলে না রাখবেন। দু:খ পাবো না। এমনিতে অনেক দুখ।
ফজরের আজান পড়ছে আর ঠিক এই সময়ে পোষ্টটা রেডী হলো।
আলহামদুলিল্লা্হ!





২১টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও আমার ভাবনা

লিখেছেন মেহেদী তারেক, ১০ ই মে, ২০২৫ রাত ১১:৪০

অবশেষে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হলো
আমি সবসময়ই প্রজ্ঞাপন দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে ছিলাম। কারণ, বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য জনগোষ্ঠী এখনো দলটিকে সমর্থন করে। এত বড় একটি জনগোষ্ঠীর মতামত কিংবা... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিষিদ্ধ নয়, শুধু নড়াচড়া বন্ধ: আওয়ামী লীগ, ‘কার্যক্রম’ ও বিরোধীদের বিভ্রান্তির রাজনীতি

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১১ ই মে, ২০২৫ রাত ১:৫২


“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে”—এই লাইনটি ফেসবুকে ঝড় তুলেছে, চায়ের কাপে তুফান এনেছে, এবং কিছু বিরোধী রাজনীতিকের মুখে সাময়িক হাসি ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু একটু থামুন ! খেয়াল করুন: বলা হয়েছে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আঁচলে বাঁধা সংসার

লিখেছেন শাওন আহমাদ, ১১ ই মে, ২০২৫ সকাল ১০:২০



আমি তখন কলেজে পড়ি। সবেমাত্র যৌথ পরিবার ভেঙে মায়ের সঙ্গে আমাদের ছোট্ট একটা সংসার হয়েছে। নতুন সংসার গুছিয়ে নিতে, মা দিনের প্রায় সবটা সময় ঘরকন্নার কাজে পার করে দিতেন। ঘরের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৫৩

লিখেছেন রাজীব নুর, ১১ ই মে, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫



কেন জানি মন মেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।
কিছুই ভালো লাগছে না। ইচ্ছা করছে ঘোড়ায় চড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি। হাতে থাকবে চাবুক। যেখানে অন্যায় দেখবো লাগাবো দুই ঘা চাবুক। সমস্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

লিখেছেন নতুন নকিব, ১১ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৫

একটি ঐতিহাসিক দিন: বাল সাম্রাজ্যের পতন

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক, গতকাল ১০ মে ২০২৫। এই দিনটি কোনো সাধারণ দিন ছিল না। এটি ছিল ঐতিহাসিক এমন একটি দিন, যা বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×