লা-মাযহাবী ভাইরা সচারচর খুব জোশের সাথে প্রচার করে থাকেন,
"ফাযায়েলে আমলের মধ্যে শিরকী কথা আছে"
প্রথমে আমরা লা-মাযহাবী ভাইদের খুব প্রিয় ও প্রচারিত একটি সাইটের স্কিন শট দেখি,
কুরআনের আলো
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি, ওনারা কিতাবুর রূহ থেকে কিছু রেফারেন্স দিয়েছেন।
এই কিতাবটি লিখেছেন ইবনুল কাইয়ূম রহ. । যাকে আবার তারা খুবই মান্য করে থাকেন এবং যার কথা প্রায়ই লা-মাযহাবী ভাইরা রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
(যদিও তারা দাবি করে থাকেন তারা কুরআন ও হাদীস বাদের কিছুই মানেন না !!!
মানার বেলায় ঠিকই মানেন শুধু আমরা আবু হানিফা রহ.-এর কুরআন ও হাদীসের বিশ্লেষন মানলেই দোষ!!!)
যাই হোক।
আমরা এখন ইবনুল কাইয়ুম রহ.-এর লিখিত কিতাবুর রূহ থেকে কিছু ঘটনা পড়ি যা কিনা ইবনুল কাইয়ুম রহ. তার কিতাবুর রহ. কিতাবে উল্লেখ করেছেন ....
১)আবুত তাইয়াহ(রহ) বর্ণনা করেন,মুতাররাফ (রহ) প্রতিদিন প্রত্যুষে কবর যিয়ারাত করতেন। কিন্তু শুক্রবার রজনীর একাংশ অতিবাহিত হওয়ার পর অন্ধকারে কবর যিয়ারাত করতেন। বলা হয় যে, তাঁর চাবুকটি রাতের আঁধারে জ্বল-জ্বল করত। একরাতে তিনি ঘোড়ায় আরোহণ করে গোরস্তানে পৌঁছে দেখতে পেলেন,প্রত্যেক কবরবাসী স্ব স্ব কবরে উপবিষ্ট। তাঁকে দেখে সবাই সমস্বরে বলে উঠল,ইনি মুতররাফ যিনি প্রতি শুক্রবার আমাদের কাছে আসেন। আমি (বর্ণনাকারী) জিজ্ঞেস করলাম,তোমরাও কি শুক্রবার সম্পর্কে জানতে পার? তারা বলল,হ্যাঁ, ঐ দিন পাখিরা যাকিছু বলে,তাও শুনতে পাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, পাখিরা কি বলে? তারা বলল, পাখিরা বলেঃ সালাম,সালাম। (কিতাবুর রূহ, পৃঃ ৩)
২)শাবীব ইবনে শাইবা বলেন, মৃত্যুর সময় আমার মাতা অসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে, দাফন করার পর আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বল্বেঃ হে উম্মে শাবীব! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়। তিনি বলেন,অতএব দাফন করার পর আমি তাঁর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তার অন্তিম ওসিয়ত পূর্ণ করলাম। রাতে তাঁকে স্বপ্নে দেখলাম- তিনি বলছেন, বতস! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ যদি আমাকে রক্ষা না করত, তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যেতাম। শাবাশ বেটা! তুমি অসিয়ত স্মরণ রেখছ। (কিতাবুর রূহ, পৃঃ ১৫)
৩)রাজা ইবনে হায়াতের মৃত্যুর পর এক পুণ্যবতী মহিলা তাকে স্বপ্নে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার প্রত্যাবর্তন কিসের দিকে হয়েছে? তিনি জবাব দিলেন,মঙ্গলের দিকে। কিন্তু মরণের পর আমি হতভম্ভ হয়ে গিয়েছিলাম এবং ধারণা করেছিলাম যে, কিয়ামত এসে গেছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন কেন? রাজা জবাব দিলেন,জাররাহ এবং তার সাথী সমস্ত সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন। ফলে জান্নাতের দরজায় ভীড় হয়ে গিয়েছিল। ((কিতাবুর রূহ, পৃঃ ২৯)
৪)আলী ইবনে আবি তালিব কাইরুয়ানী বলেনঃ ওমায়েরের স্বপ্নের ঘটনা ততটুকু বিস্ময়কর নয়,যতটুকু বিস্ময়কর আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহর ঘটনা। যা আমরা শহরে স্বচক্ষে দেখেছি। আবদুল্লাহ একজন সৎ লোক ছিলেন। তিনি স্বপনের মাধ্যমে মৃতব্যাক্তির গোপনীয় কথা জেনে ফেওলতেন এবং আত্মীয়স্বজনদের বলে দিতেন। এ ব্যাপারে তিনি কামালিয়াত বা পারদর্শিতা লাভ করেছিলেন,ফলে অল্প দিনেই তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করলেন।((কিতাবুর রূহ, পৃঃ ৪৯)
এখন লা-মাযহাবী ভাইদের কাছে প্রশ্ন ফাযায়েলে আমলের ঘটনাগুলো (যদিও সেখানে রেফারেন্সসহকারে উল্লেখ করা হয়েছে) শিরকী ঘটনা হয়,
তবে ইবনুল কাইয়ুম রহ.-এর লিখিত কিতাবুর রূহ কিতাবের ঘটনাগুলো কেন শিরকী কথা হবে না ???
কেন তারপরও তিনি আপনাদের কাছে গ্রহনযোগ্য আলেম ???
এবং তার কথাগুলো যদি গ্রহনযোগ্য হয় তবে কেন ফাযায়েলে আমলের ঘটনাগুলো গ্রহনযোগ্য হবে না ???
"ফাযায়েলে আমালের মধ্যে যদি শিরকী কথা থাকে তবে এগুলো কেন শিরকী কথা হবে না ???"
আশা করি জবাবগুলো দিয়ে বাধিত করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:২০