somewhere in... blog

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অাসিফ হাসান
ভালোবাসি ঘুরে বেড়াতে। লিখতে ভালোলাগে।ভালোলাগে ভিডিওধারণ করতে ও ছবি তুলতে।নিজের প্রতি আমার বিশ্বাস অবিশ্বাস করার মতন!ভবের হাটে নিজেকে কেষ্ট-বিষ্টু সস্বীকৃতি দিয়েছি। প্রতিদিন নিজের ভেতর নতুন আমিকে উপভোগ করি। খুশশুকরিয়া।

একদিন ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে। (ছবি ও ভিডিও)

২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা জেলার সব চেয়ে কাছের একটি জেলা হচ্ছে গাজীপুর। এ জেলাতে রয়েছে অনেক গুলি দর্শনীয় স্থান যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান (ন্যাশনাল পার্ক)।

এতদিন শুধু যাতায়াতেরপথে বাসের জানালা দিয়ে দেখতাম,দুই টা হাতি দাড়ায়া আছে মস্ত বড় গেটের দুই পাশে,শুনতাম অনেকেই ঘুরতে যায়,দেখতাম স্কুল কলেজ থেকে দলবেধে বনভোজনে যায়।ভাবলাম নিজ জেলার ঐতিহ্য ভাওয়ালের গাজারী বন নিজ চোখে দেখে আসি।যেই ভাবা সেই কাজ।বন্ধু সাগরের কোন এক কাজের কারনে তাকে সঙ্গী হিসেবে পেলাম !
সকাল ১০ টা সাগর তার ক্যাম্পাস থেকে আমার ক্যাম্পাসের গেইটের সামনে এসে হাজির !!
খুব আরামদায়ক ভা্বেই ১০ টা বাজে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে ১১ টা বাজেই পৌছে গেলাম। আমি এবং সাগর গাজীপুর ন্যাশনাল পার্কের সিংহদারের সামনে দাড়িয়ে। অদ্ভুত এক ভাল লাগা কাজ করছিল মনে। দেরি না করে প্রবেশ করলাম বনে। শুরুতেই বলে রাখি এ বনের পরিধি বিশাল যার সম্বন্ধে পরবর্তীতে আপনারা সমস্ত তথ্য পাবেন।
২০ টাকা করে টিকেট কেটে আল্লাহর নাম নিয়ে ডুকে পড়লাম ভেতরে।গাছ পালা বন জঙ্গল পাখির কিচির মিচির আওয়াজ আমার খু্বই ভালো লাগে আর নিরিবিলি এই বন তো আরো চমৎকার।সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো তাই বনে আমরা দুজন ছাড়া আর কোন দর্শনার্থী চোখে পড়লো না।গেট দিয়ে ডুকে আমরা ডান পাশের রাস্তা ধরে হাটা শুরু করলাম, ঘুরতে ঘুরতে নানান পথ। কখনো পিচ ঢালা রাস্তা আবার কখনো কর্দমাক্ত জংলী আঁকাবাঁকা পথ। রাস্তার নামগুলোও বেশ রোমাঞ্চকর। মহুয়া, সোনালু, কাঞ্চন, শিউলি, কেয়া ইত্যাদি হরেক নাম। বেশ কিছুক্ষণ ঘোরার পর আমরা ছোট পরিসরে তৈরী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলাম। যেখানে মুক্ত বানরের সাথে আমাদের রেষারেষি কেউ আটকাতে পারেনি। সেখানে দেখেছি চিত্রা হরিন আর কচ্ছপ। তারপর অসংখ্য পদ্মবিল ঘুরে আমরা বৃষ্টির সম্মুখীন হই।
যা এক পর্যায়ে আমাদের ভ্রমনে বিঘ্ন ঘটালেও পরে বেশ ভালই লেগেছে। খুবই সল্প সময়ে আমরা দুই বন্ধু এই ভাওয়াল বনের পুরোটা ঘুরে দেখতে পারিনি। কারন তার জন্য দরকার যথেষ্ট নিরাপত্তা ও লোকবল।


ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। জীব বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই এ বনে। প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীও রয়েছে এ বনে। একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী।সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। নিরাপত্তা ব্যবস্হা ভালো না হওয়ায় দুই-তিনজন এখানে বেড়াতে গেলে উদ্যানের বেশি ভেতরে না যাওয়াই ভালো। একাকী গেলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন।


সবশেষে বনের গহীনে যেতে না পাড়লেও, মনের গহীন ঘরের একটি কোনে কিছুটা আক্ষেপ থেকেই যায়। কারন আমরা আমাদের প্রিয় বন্ধু তাহসিন, ওয়াসেফ, আলিফ ও জিসানের না থাকাটা পুরোপুরি উপলব্ধি করেছি যা আমরা পরবর্তীকালে আর হতে দিবনা…..ইনশাআল্লাহ্‌ :p । ওরাও আমাদেরই মতন ভ্রমনবিলাসী আর প্রকৃতিপেমিক।


আপনারাও সময় পেলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে নিয়ে জায়গাটা ঘুরে আসবেন। বাকিটা যাওয়ার পর বুঝতে পারবেন।
সবাই ভাল থাকুন এবং প্রকৃতি ভালোবাসুন !!
(বিঃদ্র:বনের ভেতরে কিছু অপকর্ম আর দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যা দৃশ্যমান ! কর্তৃপক্ষের সুনজরেই এটি হবে গাজীপুর জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।)
-সাগর আসিফ
ঢাকা জেলার সব চেয়ে কাছের একটি জেলা হচ্ছে গাজীপুর। এ জেলাতে রয়েছে অনেক গুলি দর্শনীয় স্থান যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান (ন্যাশনাল পার্ক)।

এতদিন শুধু যাতায়াতেরপথে বাসের জানালা দিয়ে দেখতাম,দুই টা হাতি দাড়ায়া আছে মস্ত বড় গেটের দুই পাশে,শুনতাম অনেকেই ঘুরতে যায়,দেখতাম স্কুল কলেজ থেকে দলবেধে বনভোজনে যায়।ভাবলাম নিজ জেলার ঐতিহ্য ভাওয়ালের গাজারী বন নিজ চোখে দেখে আসি।যেই ভাবা সেই কাজ।বন্ধু সাগরের কোন এক কাজের কারনে তাকে সঙ্গী হিসেবে পেলাম !
সকাল ১০ টা সাগর তার ক্যাম্পাস থেকে আমার ক্যাম্পাসের গেইটের সামনে এসে হাজির !!
খুব আরামদায়ক ভা্বেই ১০ টা বাজে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে ১১ টা বাজেই পৌছে গেলাম। আমি এবং সাগর গাজীপুর ন্যাশনাল পার্কের সিংহদারের সামনে দাড়িয়ে। অদ্ভুত এক ভাল লাগা কাজ করছিল মনে। দেরি না করে প্রবেশ করলাম বনে। শুরুতেই বলে রাখি এ বনের পরিধি বিশাল যার সম্বন্ধে পরবর্তীতে আপনারা সমস্ত তথ্য পাবেন।
২০ টাকা করে টিকেট কেটে আল্লাহর নাম নিয়ে ডুকে পড়লাম ভেতরে।গাছ পালা বন জঙ্গল পাখির কিচির মিচির আওয়াজ আমার খু্বই ভালো লাগে আর নিরিবিলি এই বন তো আরো চমৎকার।সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো তাই বনে আমরা দুজন ছাড়া আর কোন দর্শনার্থী চোখে পড়লো না।গেট দিয়ে ডুকে আমরা ডান পাশের রাস্তা ধরে হাটা শুরু করলাম, ঘুরতে ঘুরতে নানান পথ। কখনো পিচ ঢালা রাস্তা আবার কখনো কর্দমাক্ত জংলী আঁকাবাঁকা পথ। রাস্তার নামগুলোও বেশ রোমাঞ্চকর। মহুয়া, সোনালু, কাঞ্চন, শিউলি, কেয়া ইত্যাদি হরেক নাম। বেশ কিছুক্ষণ ঘোরার পর আমরা ছোট পরিসরে তৈরী চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলাম। যেখানে মুক্ত বানরের সাথে আমাদের রেষারেষি কেউ আটকাতে পারেনি। সেখানে দেখেছি চিত্রা হরিন আর কচ্ছপ। তারপর অসংখ্য পদ্মবিল ঘুরে আমরা বৃষ্টির সম্মুখীন হই।
যা এক পর্যায়ে আমাদের ভ্রমনে বিঘ্ন ঘটালেও পরে বেশ ভালই লেগেছে। খুবই সল্প সময়ে আমরা দুই বন্ধু এই ভাওয়াল বনের পুরোটা ঘুরে দেখতে পারিনি। কারন তার জন্য দরকার যথেষ্ট নিরাপত্তা ও লোকবল।


ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের মূল উদ্ভিদ হলো শাল। প্রায় ২২০ প্রজাতির গাছপালা আছে এ বনে। এর মধ্যে ৪৩ প্রজাতির বিভিন্ন রকম গাছ, ১৯ প্রজাতির গুল্ম, ৩ প্রজাতির পাম, ২৭ প্রজাতির ঘাস, ২৪ প্রজাতির লতা, ১০৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ। জীব বৈচিত্র্যেরও কমতি নেই এ বনে। প্রায় ১৩ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫ প্রজাতির পাখি ও ৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীও রয়েছে এ বনে। একসময় ভাওয়াল উদ্যানে পাওয়া যেত ব্লাক প্যান্থার, চিতা বাঘ, ময়ূর, হাতি। ক্রমাগত বন উজাড়ের ফলে দিনে দিনে এর পরিধি কমে আসায় এ বন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে নানান বন্যপ্রাণী।সারি সারি বৃক্ষের মাঝে পায়ে চলা পথ। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্য আছে বেঞ্চ কিংবা ছাউনি। নিরাপত্তা ব্যবস্হা ভালো না হওয়ায় দুই-তিনজন এখানে বেড়াতে গেলে উদ্যানের বেশি ভেতরে না যাওয়াই ভালো। একাকী গেলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে পারেন।


সবশেষে বনের গহীনে যেতে না পাড়লেও, মনের গহীন ঘরের একটি কোনে কিছুটা আক্ষেপ থেকেই যায়। কারন আমরা আমাদের প্রিয় বন্ধু তাহসিন, ওয়াসেফ, আলিফ ও জিসানের না থাকাটা পুরোপুরি উপলব্ধি করেছি যা আমরা পরবর্তীকালে আর হতে দিবনা…..ইনশাআল্লাহ্‌ :p । ওরাও আমাদেরই মতন ভ্রমনবিলাসী আর প্রকৃতিপেমিক।


আপনারাও সময় পেলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে নিয়ে জায়গাটা ঘুরে আসবেন। বাকিটা যাওয়ার পর বুঝতে পারবেন।
সবাই ভাল থাকুন এবং প্রকৃতি ভালোবাসুন !!
(বিঃদ্র:বনের ভেতরে কিছু অপকর্ম আর দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যা দৃশ্যমান ! কর্তৃপক্ষের সুনজরেই এটি হবে গাজীপুর জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।)


-সাগর আসিফ
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Good morning friends.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:০৫

গুড মর্নিং ফ্রেন্ডস!

আজ মহান 21st February (মুখটা কিঞ্চিৎ ব্যাকা করে)। Never mind bro, আমি আবার 21st February English language use করতে চাই না। Actually উচিৎও না। But আমার অনেক friends... ...বাকিটুকু পড়ুন

শুভ জন্মদিন – ব্লগার মনিরা সুলতানা আপু

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৩৩

আজকে ২১ ফেব্রুয়ারী দিনটা জাতীয় পর্যায়ে যেমন গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন, আবার সামু ব্লগারদের জন্যও এই দিনটি আনন্দের একটি দিন। কারণ এই দিনটি আমাদের অতি প্রিয়, সমাজ সচেতন, চিন্তাশীল, হৃদয়বান... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টমাস্টার গল্পের পোস্টমর্টেম

লিখেছেন রাজীব নুর, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৩৪



রতন নামের ১২/১৩ বছরের এক মেয়ে হাসতে হাসতে ঘরে প্রবেশ করে। তারপর বলে, দাদাবাবু আমাকে ডেকেছিলে?
রতন, কালই আমি যাচ্ছি।
কোথায় যাচ্ছো দাদাবাবু।
বাড়ি যাচ্ছি।
আবার কবে আসবে?
আর আসবো না।


রবীন্দ্রনাথের জন্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০৩




একুশে ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে পাশের বাড়ির ফুলের বাগান উজাড় করে দলবেঁধে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাওয়ার সেই দিন ফিরে আর আসবে কি কখনও.....

ভাষা শহীদের প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগেই ভালো ছিলাম?

লিখেছেন জটিল ভাই, ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:২০

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে)

মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×