এ ধর্ষিতা মেয়েটি দিল্লীর মেয়েটি মতো মেডিকেল ছাত্রী বা হয়বা সুন্দরীও নই। এটা নিশ্চিত কোন গরীব ঘরের মেয়ে।
এখন প্রশ্ন হচ্চে- বাংলাদেশে কি ইনডিয়ার মতো ধর্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে ? হবে বলে মনে হচ্ছে না।
দিল্লীতে তরুণী ধষর্ণের ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশেও একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলেছে। এ নিয়ে কিছু আন্দোলন হলেও তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশের মানুষের কোমরের জোর কমে গেছে। সরকার-বিরোধী দল, মানবাধিকার সংগঠন থেকে শুরু করে সব শ্রেণী সুবিধাবাধী। সবাই পুজিবাদী। সাধারণ মানুষকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নেই।
আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, ধষর্ণের ঘটনা একটার সঙ্গে আরেকটার অনেক মিল রয়েছে। যেমন দিল্লীর সঙ্গে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের মিল। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ করলে একটির সঙ্গে আরেকটি মিল খুজেঁ পাওয়া যাবে।
এ প্রসংঙ্গে মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মেহতাব খানমের একটি কথা মনে পড়ে যায়, রাজধানীতে শিশু সামিউল মা ও প্রেমেকের হাতে খুন হওয়ার ঘটনার পর বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। পরে মানবজমিন পত্রিকায় প্রকাশের জন্য আমি মেহতাব খানমের মন্তব্য জানতে চেয়েছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এ গুলো লিখে কি আপনারা সামাজিক ব্যাধী বন্ধ করতে পারবেন? মিডিয়ার প্রকাশের কারণে একটি ঘটনা ঘটলে একই কায়দা আরো বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। এটা একধরণের সামাজিক ফোবিয়া। এটা বন্ধ করতে হলে জনসাধারণের মধ্যে জাগরণ ঘটাতে হবে। সেটা নিয়ে আমরা বা মিডিয়া কথা বলতে পারে। এরপর থেকে সমাজের অনেক ঘটনা মেহতাব খানমের বক্তব্যের সঙ্গে মিল পেয়েছি।
এখন ফিরে আসি, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের ধর্ষণের ঘটনা প্রসংগে- সাংবাদিকদের দেয়া তথ্যমতে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল এএসপি কামরুল ইসলাম জানান, ওই গার্মেন্টস কর্মী গ্রামের বাড়ি যেতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাভারের নবীনগর থেকে মানিকগঞ্জগামী শুভযাত্রা পরিবহনের একটি লোকাল বাসে উঠে। বাসটি মানিকগঞ্জের কাছাকাছি এসে বিকল হয়ে পড়লে সকল যাত্রী নেমে যায়। ওই নারী হেলপারের কাছে টাকা ফেরত চাইলে খুচরা টাকা নেই বলে হেলপার তাকে অপেক্ষায় রাখে। কিছুক্ষণ পর বাসটি সচল হয়েছে বলে ওই নারী যাত্রীকে বাসে উঠতে বলে। সে সিটে গিয়ে বসলে বাসটি ধীর গতিতে পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
কিছুদুর এসে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই স্থানে পৌঁছে হেলপার বাসটি চালাতে থাকে আর চালক দিপু মিয়া ওই নারীকে বাসের পিছনের সিটে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
বাসের জানালা দিয়ে রাস্তার পাশ থেকে হান্নান মিয়া নামে এক হকার (বাদাম বিক্রেতা) এ দৃশ্য দেখে অন্য একটি বাসে উঠে পিছু নেয়।
বাসটি মানরা এলাকায় পৌঁছলে চলন্ত বাস থেকে ওই নারীকে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ওই হকার তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এনে পুলিশে খবর দেয়।
পরে ধর্ষণের অভিযোগে চালক মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গুড়কী গ্রামের আতরাফ হোসেনের ছেলে দিপু মিয়া (৩০) ও হেলপার ধোলাপাড়া গ্রামের দিদু মিয়ার পুত্র আবুল কাশেমকে (২৮) গ্রেফতার করে পুলিশ।
ধর্ষিতা ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। সেখান থেকে তিনি গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে বাসে যাওয়ার পথে ধর্ষণের শিকার হন।
বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ফলে সব মহল থেকে ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাসিঁর দাবী উঠেছে। আমি এ দাবীর পক্ষে না। কারণ মানুষ মরে কে কয়দিন মনে রাখে। আমার দাবী ধর্ষকদের পুরুষ লিঙ্গ কেটে দেয়া হোক। যাতে বাকী জীবন সবাই জানে ধর্ষণ করার ফলে তার লিঙ্গ কেটে দেয়া হয়েছে। এতে ধর্ষক মৃত্যদন্ড থেকে বেশি শাস্তি পাবে। কারণ সে জীবিত থেকেও মৃত।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১২