স্বাধীনতা জাদুঘরের মাঝখানে অবস্থিত ঝর্ণা
স্বাধীনতা জাদুঘর বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত একটি জাদুঘর যাতে সাধারণত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস চিত্রিত করে অনেক কিছু সংগ্রহ করে রাখা আছে । জাদুঘরটি ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থিত । মুঘল সাম্রাজ্য|মুঘল শাসনামল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালে বিজয় দিবস পর্যন্ত দীর্ঘ সংগ্রাম ইতিহাসের সচিত্র বর্ণনা প্রদর্শন করছে এই জাদুঘরটি । সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন এবং এখানেই একই বছরের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণ আত্মসমর্পন করেন । স্বাধিনতা জাদুঘর বাংলাদেশের ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস ২০১৫ সালের ২৫ মার্চে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ।
এটি জাদুঘরের একটি গ্যালারি
স্বাধীনতা জাদুঘরটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মিত একটি বৃহৎ পরিকল্পিত নকশার অংশ । এই নকশায় রয়েছে একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার, তিনটি জলাধার, শিখা চিরন্তন, স্বাধীনতা সংগ্রামের চিত্রবিশিষ্ট একটি ম্যুরাল এবং ১৫৫ আসন বিশিষ্ট একটি অডিটোরিয়াম । তবে পুরো নকশাটির প্রধান বিষয় হল একটি ৫০ মিটার বিশিষ্ট আলোক স্তম্ভ যা স্বাধীনতা স্তম্ভ নামে পরিচিত । স্তম্ভটি কাচের প্যানেল দ্বারা নির্মিত । জাদুঘরটি এই স্তম্ভের নিচে অবস্থিত। পুরো জাদুঘরটি ভূগর্ভস্থ । এটিই বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র ভূগর্ভস্থ জাদুঘর । জাদুঘরটির প্লাজাটি ৫৬৬৯ বর্গমিটার বিশিষ্ট টাইল দ্বারা আবৃত স্থান । জাদুঘরের মাঝখানে আছে একটি ঝর্ণা যাতে উপর থেকে পানি পরে । বাংলাদেশী স্থপতি কাশেফ মাহবুব চৌধুরী এবং মেরিনা তাবাসসুম ১৯৯৭ সালে একটি জাতীয় স্থাপত্যিক নকশা প্রতিযোগিতা জয়ের মাধ্যমে এই প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়নের সুযোগ লাভ করেন । ৬৭ একরজুড়ে বিস্তৃত পুরো প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় হয় প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ।
এই গ্যালারির দেয়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত করা হয়।
জাদুঘরের উপরের প্লাজা। প্লাজার উপরে রয়েছে স্বাধীনতা স্তম্ভ এবং ম্যুরাল।
জাদুঘরটিতে ১৪৪টি কাচের প্যানেলে ৩০০ এরও বেশি ঐতিহাসিক আলোকচিত্র প্রদর্শিত করা হয় । টেরাকোটা, ঐতিহাসিক আলোকচিত্র, যুদ্ধের ঘটনা সম্বলিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদনও প্রদর্শিত করা হয় । তাছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভিন্ন বিদেশী পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিলিপি এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদেশে প্রচারণা সৃষ্টিতে তৈরিকৃত বিভিন্ন পোস্টারও জাদুঘরটিত প্রদর্শনীতে রয়েছে । বাংলাদেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং স্থাপনার চিত্রও রয়েছে জাদুঘরটিতে । ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে যে টেবিলে তৎকালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্ব জোনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি আত্মসমর্পণ করে স্বাক্ষর করেন তার একটি অনুলিপিও রয়েছে জাদুঘরটিতে । তবে মূল টেবিলটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ।
তথ্য ইন্টারনেট কালেকশন ।